বর্তমানে বাংলা টেলিভিশনের (Bengali Television) ধারাবাহিকগুলির (Bengali Serial) মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে প্রায়ই। একসময় যেভাবে কোনও ধারাবাহিক দর্শকের মনে গভীর ছাপ ফেলত, এখন সেই উন্মাদনা আর দেখা যায় না। বড় চ্যানেল হোক বা জনপ্রিয় মুখ— কেউই যেন আর দর্শকদের মন টানতে পারছে না আগের মতো। গল্পের গভীরতা ও আবেগের জায়গায় এখন বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে অতিরঞ্জিত উপস্থাপনা, যার ফলে ধারাবাহিকগুলো হারিয়ে ফেলছে তাদের আগের আকর্ষণ।
আগে যেখানে একটি ধারাবাহিক বছরের পর বছর ধরে চলত, আজকাল তার স্থায়িত্ব অনেকটাই কমে এসেছে। কোনওটা শেষ হচ্ছে দুই মাসে, আবার কোনওটা ছয়-আট মাসের মধ্যেই। ফলে দর্শক গল্পের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে ধারাবাহিকটি। প্রিয় জুটি হয়ে ওঠার আগেই জুটিরা বিদায় নিচ্ছে! এই তাড়াহুড়ো যেন গল্প ও চরিত্র– দুটোকেই অসম্পূর্ণ রেখে দিচ্ছে। বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে টিআরপি–নির্ভর প্রতিযোগিতাকে ঘিরে।
এক সময় বাংলা ধারাবাহিকগুলির টিআরপি আকাশছোঁয়া ছিল, এখন সেই উজ্জ্বলতা ফিকে। সাপ্তাহিক টিআরপি তালিকায় দেখা যায়, প্রথম ও পঞ্চম স্থানের মধ্যে ব্যবধান সামান্যই। এই প্রতিযোগিতার চাপেই গল্পের মান, নির্মাণশৈলী সবকিছুর উপর পড়ছে কোপ। টিআরপি বাড়ানোর দৌড়ে সৃষ্টিশীলতার জায়গা ক্রমেই সঙ্কুচিত হচ্ছে, আর তাতেই হারিয়ে যাচ্ছে বাংলা ধারাবাহিকের পুরনো গৌরব ও দর্শকপ্রেম। সম্প্রতি এই বিষয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত।
তিনি বললেন, “আমি টেলিভিশনে যেই সময় কাজ করা শুরু করেছি, গল্পগুলি অনেক বাস্তবের কাছাকাছি থাকতো। বর্তমানে অতিরঞ্জিত করে ফেলার কারণে দর্শক উৎসাহ হারাচ্ছে। একটা সময় হিরোইন স্নান করে এসে হিরোকে ঘুম থেকে তুলছে, এমন দৃশ্যে মাথার চুল সম্পূর্ণ ভেজাতে হতো। এমনকি বিনা মেকআপে ক্যামেরার সামনে আসতাম। এখন তার উল্টোটাই হচ্ছে।” আরও যোগ করলেন, “পরবর্তী গল্প কি হবে ধারাবাহিকের, একমাস আগে আমাদের হাতে তার ওয়ান লাইনার চলে আসতো।
আরও পড়ুনঃ “কমেডির নামে সীতাকে স্লিভলেস পরিয়ে বিকৃত করতেন…বাম জমানার ওই পরিচালক এখনও কাজ করেন, তাঁর নীতি হেনস্থা করা!”— রূপাঞ্জনা মিত্রর অভিযোগে উত্তাল টলিপাড়া, নিশানায় এক প্রভাবশালী পরিচালক! কার দিকে ইঙ্গিত অভিনেত্রীর?
আর এখন শুনি, গত সপ্তাহে টিআরপির উপর নির্ভর করবে আগামীতে গল্প কেমন হবে। এর ফলে এক মাস আগে শুটিং করে রাখা তো অসম্ভব, সম্প্রচারের দুই একদিন আগে অগত্যা শুটিং করতে হচ্ছে। অবশ্যই এখন মানুষের হাতে সময় কমেছে, গল্প অতটা বাস্তবে কাছাকাছি করে তোলা সম্ভব না। তবুও আমি নিন্দা করে বলছি না, তবে আমরা যেহেতু ওই সময়টাও দেখেছি আর এই সময়টাও দেখছি— আমাদের কাছে দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ!”






