এই মুহূর্তে টেলিপড়ার সবচেয়ে আলোচিত তো বটেই তবে বিতর্কিত ধারাবাহিক, জি বাংলার ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar)। শুরু থেকেই যে ধারাবাহিকটি এতটা সফল, দর্শক সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো, পরবর্তীতে তাকে নিয়ে যে এতটা বিতর্ক হতে পারে কেউ আশাও করেনি। এই ধারাবাহিক মূলত অসমবয়সী প্রেমের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যেটা নিয়ে অনেক কম ধারাবাহিক বাংলায় হয়েছে। তাই দর্শকদের প্রত্যাশাও ছিল আকাশ ছোঁয়া। ধারাবাহিকে আর্য সিংহ রায়ের চরিত্রে অভিনেতা জিতু কমলের (Jeetu Kamal) অভিনয় বিশেষভাবে সবার পছন্দ।
রোজই কমবেশি তাই নিয়ে সমাজ মাধ্যমে আলোচনা হয়। অন্যদিকে, নায়িকা অপর্ণার চরিত্রে দিতিপ্রিয়া (Ditipriya Roy) বেশ অনেকদিন বাদেই ছোটপর্দায় ফিরেছিলেন। দুজনের পর্দার রসায়ন সবার এতটা ভালো লাগছিল যে আর্য-অপর্ণার বিয়ে নিয়ে মুখিয়ে ছিলেন দর্শকরা। তবে, মাস তিনেক আগে হঠাৎ দিতিপ্রিয়ার পোস্ট বদলে দেয় চিত্রটা। সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করে দিতিপ্রিয়া জানান, তিনি আর জিতুর সঙ্গে অভিনয় করতে পারছেন না। কারণ, তিনি অশা’লীন মন্তব্য এবং বিকৃত আচরণ করেছেন সেটে।
পরবর্তীতে জিতুও নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টা করে এবং দুই পক্ষের ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে সেই দ্বন্দ্ব শেষ হয়। ধারাবাহিক আবারও চেনা ছন্দে ফেরে, আর কিছুদিনের মধ্যেই আর্য-অপর্ণার বিয়ে হওয়ার কথা এমন সময় ফের একবার দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ সংকটের মধ্যে ফেলে দেয়। এবার জিতু অভিযোগ করেছিলেন যে তার অসুস্থতাকে ব্যঙ্গ করা থেকে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে শুটিং করায় আপত্তি জানিয়েছেন দিতিপ্রিয়া, অভিনেতার কাছে এটা অত্যন্ত অপেশাদার তাই তিনি ধারাবাহিকটা করতে চান না।
এরপরেই পুরনো বিতর্কের রেশ টেনে, জিতুর ভক্তরা অভিনেত্রীকে নিয়ে সমাজ মাধ্যমে সমালোচনা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ভাবে তীব্র কটাক্ষ করতেও পিছ পা হননি। পরিস্থিতি এতটাই চরমে ওঠে যে, নির্মাতাদের অনুরোধে জিতু ধারাবাহিকে ফিরে আসলো, দিতিপ্রিয়া এনওসি দিয়ে দেন! গতকাল আর্টিস্ট ফোরামের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিগত কিছুদিন ধরে চলা বিতর্কের জেরে মানসিক এবং শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছেন অভিনেত্রী, যার ফলে তিনি আর ধারাবাহিকটি করতে পারবেন না।
এটিকে জিতুর ভক্তরা নিজেদের জয় মনে করলেও, দিতিপ্রিয়ার অনুরাগীরা এটিকে অবিচার এবং পক্ষপাত দেখছেন। তাদের মতে, সমাজ যতই উন্নত দাবি করুক, আজও খারাপ পুরুষদের বুক ফুলিয়ে চলতে দেখা যায় আর মেয়েদেরই শুনতে হয় বাজে কথা। এমনকি মেয়েরাই যেনো মেয়েদের শত্রু। সমাজ মাধ্যমে একজন লিখেছেন, “জিতুর কিছু ফ্যান এতটাই ট’ক্সিক যে মনে হয় না তারা একজন মেয়েকেও শান্তিতে থাকতে দেবে। জিতুর ভুলের জন্য চ্যানেল আর প্রোডাকশন যদি ব্যবস্থা নেয়, তাহলে উল্টো তারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আরও বিষাক্ত আচরণ করে।
ডিভোর্সড জিতুকে যেমনই হোক ‘মহান পুরুষ’ বানাতে যেন উঠে পড়ে লাগে, কিন্তু মেয়েদের ওপরই দোষ চাপানো হয় বারবার।” অন্যজনের কথায়, “দিতিপ্রিয়ার জন্য এমন ধারাবাহিক ছাড়াই ভালো ছিল, না হলে এই বিষাক্ত ফ্যানদের হাতে সে সত্যিই শান্তি পেত না। কিছু মহিলা ভক্ত যেভাবে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করছে, এভাবে অনেক পুরুষও কখনও করে না! নোংরা মানসিকতার এসব ফ্যানরা মেয়েটাকে সত্যিই ছিঁড়ে খেত।” কেউ বলছেন, “শেষ পর্যন্ত যে ভালো থাকে, তারই সবকিছু ভালো হয়। আমার মনে হয় দিতিপ্রিয়া ঠিক করেছে।
আরও পড়ুনঃ একটা ফোন ধরতে না পারায় অনুশ্রীকে রাতারাতি বাদ দিল টিম চিরদিনই তুমি যে আমার! ক্ষোভে ফেটে পড়লেন অভিনেত্রী
যদি শুরুতেই চ্যানেল আর প্রোডাকশন জিতু কমলের বিরুদ্ধে ঠিকমতো ব্যবস্থা নিতো, ধারাবাহিক থেকে সরিয়ে দিতো, তাহলে হয়তো এত ঝামেলায় জড়াতে হতো না। দিতিপ্রিয়া নিশ্চয়ই আরও ভালো প্রজেক্টে পাবে, হয়তো এটাই ওর পথ আটকে রেখেছিল এতদিন। এখন সে এগিয়ে যাবে, আরও সফল হবে।” ধারাবাহিকের অনেক ভক্তরাই আবার বলছেন, “এখন জিতু এবং তার অতিরিক্ত টক্সিক ফ্যানরাই দেখুক। এতদিন ডাই-হার্ট ফ্যান ছিলাম, কিন্তু আজ আমি হেটার্সদের দলে নামতে বাধ্য হলাম!”






