এতকিছুর পরেও লক্ষ্মীমণি দেবীর দ্বিচারিতা দেখে হতবাক কমলিনী! ছেলের অপরাধ মাফ, নিরপরাধ বৌমার সুখকে ছোট করার চেষ্টায় নাতি-নাতনিদের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি! মিঠি-বাবিলের তীক্ষ্ণ প্রতিবাদে জব্দ হলেন ঠাকুমা!

স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিকে স্বতন্ত্র আর কমলিনীর সম্পর্কটা বহুদিনের বন্ধুত্ব থেকে ধীরে ধীরে বদলে গিয়েছিল, কিন্তু বিয়ে পর্যন্ত পৌঁছনো যেন তাদের কাছে জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠছিল যে শেষমেশ স্বতন্ত্র বাধ্য হয়ে সেই সিদ্ধান্ত নেয়। কমলিনীও হঠাৎ করে এত বড় পরিবর্তন মানিয়ে নিতে সময় নিয়েছে। কিন্তু তাদের এই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তটা পরিবারের অনেকের কাছে যেন এক বিরাট ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কমলিনীর বড় ছেলে বুবলাই থেকে শুরু করে স্বতন্ত্রর বাড়ির সদস্যদের মধ্যেও তৈরি হলো অস্বস্তি আর এই বিয়েকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই নতুন নতুন সমস্যা মাথা চাড়া দিতে লাগল। তবে সব আপত্তির মধ্যে সবচেয়ে কঠোর ছিলেন লক্ষ্মীমনি দেবী অর্থাৎ চন্দ্রের মা। নিজের ছেলের সাবেক স্ত্রী আজ অন্যের ঘর বাঁধছে, এই সত্যিটা তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারলেন না। কমলিনী যখন জানতে চাইলেন তিনি আসলে কেন এত বিরূপ, তখন লক্ষ্মীমনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, ছেলের বউকে তিনি অন্য কারও সংসারে কল্পনাও করতে পারেন না।

আশ্চর্য এই যে, তার ছেলে চন্দ্রই তো একদিন নিখোঁজ হয়ে পরিবারের সব বন্ধন ছিঁড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এমনকি বাড়িতে নিজের মৃ’ত্যুর মিথ্যে খবর পাঠিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করেছিল দূর পাহাড়ি অঞ্চলে। সেই মানুষটির প্রতি এত সহানুভূতি, অথচ যে কমলিনী এতকাল আগে সর্বস্ব দিয়ে সেবা করে আসলো, তার নতুন জীবনকে এত আঘাত! এমনই দ্বিচারিতায় দর্শকরাও আর মেনে নিতে পারছেন না। প্রসঙ্গ যখন চন্দ্র, তখন সত্যিটা প্রকাশ্যে আসে যে, জানা যায় নারী পা’চার থেকে শুরু করে শিশু পাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধে তার যোগ!

আর ধরা পড়ার ভয়ে স্মৃতিভ্রংশের ভান করে সে আবার ফিরে আসে। সেই অপরাধী মানুষটাকে গ্রহণ করার জন্য লক্ষ্মীমনি যতটা জোর করেছিলেন, ততটাই দৃঢ়ভাবে কমলিনী জানিয়ে দেন যে এই মানুষ আর তার জীবনে ফিরবে না। কিন্তু চন্দ্রের মা স্পষ্টতই ছেলের দোষ দেখতে অক্ষম। তাই মানসিক চাপে কমলিনীকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা, যাতে সে আবার ছেলেকে আশ্রয় দেয়। শেষে পুলিশ তাকে নিয়ে গেলেও মায়ের পক্ষপাতিত্বটুকুও বদলালো না। অন্যদিকে, কমলিনীর সন্তানরাই এই অন্যায় আচরণ সবচেয়ে বেশি আহত।

সাম্প্রতিক পর্বে মিঠি ঠাকুমাকে স্পষ্ট জানায় যে, ছেলের অপরাধ তিনি দেখতে না পেলেও, তার মা যদি এমন মানুষকে জীবনে ফিরিয়ে আনতেন, তবে তার নিজের মায়ের প্রতি মিঠির শ্রদ্ধাটাই কমে যেত। মেয়ের এই কথা ছিল সরাসরি সতর্কবার্তা, যেন চন্দ্রের নাম নিয়ে আর তার মাকে ছোট করা না হয়। মিঠির বক্তব্য ছিল শান্ত কিন্তু তীক্ষ্ণ, ঠিক যেমন একজন সন্তান নিজের মায়ের প্রতি অন্যায় দেখতে না পেলে বলতে বাধ্য হয়। ছেলে বাবিলও পিছিয়ে থাকেনি। সে মনে করিয়ে দেয় যে তাদের মা একসময় কুড়ি বছর ধরে একটি মিথ্যে সম্পর্কে বেঁধে ছিলেন।

আরও পড়ুনঃ ‘অনুরাগের ছোঁয়া’-র সোনা অর্থাৎ নিশার জীবনে নতুন অধ্যায়! অভিনয় জগতে শুরু নতুন যাত্রা! বাংলা ছেড়ে এবার তেলেগু ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে অভিনেত্রী

স্বামীর জন্য অপেক্ষায় কাটিয়েছেন অগণিত একাকী দিন। এখন যখন স্বতন্ত্রর সঙ্গে নতুনভাবে সুখ খুঁজে পেয়েছেন, তখন সেই সুখটাকে ছোট করার কোনও অধিকার কারও নেই, ঠাকুমারও না! তার চোখে কমলিনী আজ দেবীর মতোই দৃঢ়, যে এত যন্ত্রণা সয়েও নতুন করে বাঁচতে শিখেছে। তাই মায়ের সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে সন্তানরা এবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট জানিয়ে দিল। এদিকে দর্শকরাও পিছ পা হননি প্রতিবাদ করতে। অধিকাংশ মানুষের মতো, ‘লক্ষ্মীমণি দেবী অত্যন্ত স্বার্থপর এবং নির্লজ্জ একজন মানুষ! তিনি শুধু নিতে জানেন দিতে পারেন না, অন্যের সুখে দুঃখ পান!’ আপনাদেরও কি তাই মত?

You cannot copy content of this page