শ্বশুরের অপমান, বরের গায়ে হাত! তখনকার দিনে দাঁড়িয়েও অপমানের জবাব দিচ্ছে বাড়ির ব‌উ কমলা! এখনও সবার কাছে শিক্ষণীয়

স্টার জলসা পর্দায় এই মুহূর্তে জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলির তালিকায় অন্যতম হল কমলা ও শ্রীমান পৃথ্বীরাজ। কিছু কিছু ধারাবাহিক নিজস্ব দক্ষতায় দর্শকদের মনে রাজত্ব করতে শুরু করে দেয়। আর জলসার পর্দায় চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া এই ধারাবাহিকটিও এমনই একটি ধারাবাহিক।

ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষে বাংলার অবস্থান, সেই সময়কার নারীদের অবস্থা, আর্থসামাজিক ব্যবস্থা, সামাজিক সমাজ ব্যবস্থা সবকিছুই প্রস্ফুটিত হচ্ছে এই ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে। সেই সঙ্গে রয়েছে পারিবারিক গল্প‌ও। সেই সঙ্গে রয়েছে কৌতুক রস‌ও। অর্থাৎ সমগ্রটাই বিনোদন।

এই ধারাবাহিকে সেই তথাকথিত কূটকাচালি, দ্বন্দ, নোংরামি বা পরকীয়ার লেশমাত্র নেই। বরং রয়েছে গল্পের আড়ালে সামাজিক বার্তা। আর যা মন ছুঁয়ে গেছে বাঙালি দর্শকদের। উল্লেখ্য, কমলা ও পৃথ্বীরাজ ধারাবাহিকে মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী অয়ন্যা চ্যাটার্জী ও অভিনেতা সুকৃত সাহা। তাঁদের অসাধারণ অভিনয় মন কেড়ে নিয়েছে বাঙালি দর্শকদের। ছোট্ট বয়সে এই দুই অভিনেতা অভিনেত্রীর পরিণত অভিনয় অনবদ্য। অসামান্য। নজরকাড়া।

এই ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে সেই যুগে নারীদের অবস্থান ভীষণ সুন্দর ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নিয়মের বেড়াজাল বাঁধা ছিল কমলার শ্বশুর বাড়িতেও। একবার শ্বশুরবাড়িতে ইংরেজি গান গাওয়ার অপরাধে পাপমোচনের জন্য কমলার মাথায় গোবর ঢেলে দেওয়া হয়েছে। একবার কমলা ছেলে সেজে বাইরে বেরোনোর অপরাধে কমলার বই পুড়িয়ে দিতে উদ্যত হয়েছে কমলার পিসি শাশুড়ি বিধুরাণী!

কিন্তু না! থামেনি কমলা। সমস্ত বাধা বিপত্তির পাশ কাটিয়ে উকিল হওয়ার প্রচেষ্টায় লেগে রয়েছে সে। আর তাঁর জীবনের সমস্ত ওঠা পড়ায় তাঁর পাশে রয়েছে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরমশাই। আর তাই সেই সময়কার নারীরা অপমানিত হয়ে মুখ না খুললেও স্বামী এবং শ্বশুরকে একদল অপরিচিত মানুষের কাছে অপমানিত হতে দেখে মুখ বন্ধ করে থাকেনি কমলা।

যদিও তাঁর শাশুড়ি তাঁকে মুখ খুলতে নিষেধ করেছিল কিন্তু প্রতিবাদ সে করবেই। আসলে অন্যায় দেখে মুখ বুঁজে থাকা নারীদের গোত্রে পড়ে না কমলা। তবে বলা বাহুল্য তখনকার দিন থেকে এখনকার দিনেও হয়তো নারীদের সহ্য ক্ষমতাটা একই রয়ে গেছে। আজ‌ও বহু ঘরেই অপমানিত হতে হয় নারীকে বা অনেকের অপমান দেখতে হয় কিন্তু তা সত্ত্বেও মুখ বন্ধ করে থাকেন তাঁরা। যদিও কমলাকে দেখে সবারই শেখা উচিত।