“শাশুড়ির কুচুটেমি, বউমার কষ্টই ওনার গল্পের রস!” শ্রীময়ী থেকে চিরসখা কুচুটে শাশুড়ির চরিত্র দেখে অতিষ্ঠ দর্শক, নিশানায় লীনা গঙ্গোপাধ্যায়! লেখিকার ধারাবাহিকে কি কখনও ভালো শাশুড়ি দেখা যাবে?— প্রশ্ন নেটিজেনদের!

ধারাবাহিকে যদি কোনও চরিত্র কখনও মুল গল্পের থেকেও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, তবে তা হল শাশুড়ির চরিত্র। আর সেটা যদি হয় বাংলা (Bengali Serial), তাহলে তো আর কথাই নেই! নায়ক-নায়িকা প্রেমে ব্যস্ত থাকলেও, গল্পের মূল উত্তেজনা তৈরি হয় এই শাশুড়ি-বউমার টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে। সংসারের প্রতিটি বিষয়ে নজর রাখা, বউমার প্রতি সন্দেহের দৃষ্টি, এবং অহেতুক ক্ষমতা প্রদর্শন যেন রীতিমতো স্বভাব হয়ে উঠেছে এই চরিত্রগুলির।

আজকের বাংলা টেলিভিশনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছেন এই ‘কুচুটে’ শাশুড়িরা। এই প্রবণতাকে আরও শক্ত ভিত দিয়েছেন লেখিকা ‘লীনা গঙ্গোপাধ্যায়’ (Leena Ganguly)। বছরের পর বছর বাংলা টেলিভিশনে যে ধারাবাহিকগুলি একের পর এক হিট হয়েছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই তাঁর লেখা। ‘ইষ্টি কুটুম’ থেকে ‘শ্রীময়ী’, ‘ইচ্ছে নদী’ থেকে ‘এক্কা দোক্কা’—প্রতিটি ধারাবাহিকেই তাঁর লেখার স্বাতন্ত্র্য স্পষ্ট। কিন্তু সেই স্বাতন্ত্র্যের মধ্যেও একটি চিরাচরিত ধরন বহুবার চোখে পড়েছে দর্শকের!

লীনার ধারাবাহিকে প্রায় প্রতিটি শাশুড়িই হন চূড়ান্ত স্বার্থপর, ধূর্ত এবং ক্ষমা করতে অক্ষম। এই শাশুড়িরা কখনও বউমার সফলতা হজম করতে পারেন না, কখনও বা ছেলে-বউয়ের সুখের সংসার দেখলেই মাথা গরম হয়ে যায় তাঁদের। অন্য অনেক লেখকের ধারাবাহিকে যেমন শাশুড়িরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চান কিংবা সম্পর্কের উন্নতির জন্য পদক্ষেপ নেন, সেখানে লীনার গল্পে এই পরিবর্তন প্রায় বিরল। বরং এখানে শাশুড়িরা নিজেদের ভুলেও একরকম গর্ববোধ করেন!

বউমাকে ‘শায়েস্তা’ করাকে জীবনধর্ম হিসেবে মেনে নেন। এই একঘেয়েমি আর নেতিবাচকতা ঘিরেই সমাজ মাধ্যমে শুরু হয়েছে ট্রোলিং। নেটিজেনদের একাংশ সরাসরি কটাক্ষ করেছেন লীনাকে, বলেছেন তাঁর প্রতিটি গল্পে যেন শাশুড়িদের হাতে সবসময়ই একেকটা ‘ষড়যন্ত্রের খাতা’ থাকে। কেউ কেউ তো মজার ছলে মন্তব্য করেছেন—“লীনা পিসির লেখা শাশুড়িরা রামায়ণের রাক্ষসীর অবতার!” এমনকি অনেকেই দাবি তুলেছেন, লেখিকাকে নতুন করে ভাবতে হবে গল্পের গঠন নিয়ে।

আরও পড়ুনঃ “মহানায়কের নায়িকা আমি, আমায় আর ডাকেন না কেউ!”— একাকী যন্ত্রণায় দেবিকা মিত্র! কাজ না পেয়ে কষ্টে দিন কাটছে, জীবনের শেষ ইচ্ছাটুকুও পূরণ হল না বর্ষীয়ান শিল্পীর!

কারণ দর্শক আজকের দিনে একটু ভিন্ন স্বাদের গল্প চায়। তবে এই ট্রোলের মধ্যেও অস্বীকার করা যায় না যে, শাশুড়ির এই কুচুটে চরিত্রগুলিই কিন্তু ধারাবাহিকের প্রাণ। এদের কারণেই দর্শক রাগে-হাসিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখান এবং টিভির সামনে আটকে থাকেন। এমনকি, অনেক ক্ষেত্রেই নায়ক-নায়িকার কেমিস্ট্রি ছাপিয়ে শাশুড়ির ষড়যন্ত্র বেশি চর্চিত হয় দর্শকমহলে। তাই হয়তো লীনার ধারাবাহিক ঘিরে যতই ট্রোল হোক না কেন, টিআরপি তালিকায় তাঁর লেখা ধারাবাহিকের জয়জয়কার অব্যাহত থাকবেই।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।