কেন কোনো প্রোডাকশন থেকে লোপামুদ্রা মিত্রকে ডাকা হয় না? ‘অনেক আক্ষেপ‌ রয়ে গেছে, সিনেমায় সুযোগ‌ই দিল না’! বিস্ফোরক গায়িকা

বাংলা সংগীত দুনিয়ায় তাঁর অবদান অপরিসীম। তাঁর কন্ঠ অদ্বিতীয়। তাঁর গলার দোসর বোধহয় হয়না। তিনি এতটাই প্রতিভাময়ী। বাংলা সংগীত জগতে তাঁর তুলনা তিনি নিজেই।

তাঁর কন্ঠের মতো কন্ঠ, তাঁর ব্যক্তিত্বের মতো ব্যক্তিত্ব খুব কম মানুষের মধ্যেই দেখা যায়। তবে আমরা যতটা সফল তাঁকে ভাবি তিনি কী নিজে নিজেকে অতটাই সফল ভাবেন? নাকি আজ‌ও আক্ষেপ রয়ে গেছে তাঁর নিজের সঙ্গীত জীবনকে ঘিরে? তবে শুধুমাত্র গানই নয়, সফল ব্যবসায়ীও তিনি। বুটিকের ব্যবসা রয়েছে তাঁর।

সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে অকপট হয়েছিলেন গায়িকা! সেখানেই উজাড় করলেন নিজের প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তির ঝুলি! অকপটে বললেন তিনি আমি মনে করি, গানের জন্য আমার আরও একটা জন্মের প্রয়োজন।হ্যাঁ, এমনটাই তিনি। গানের প্রতি তাঁর খিদেটাও এমনতর‌ই।

বলা হয়ে থাকে তিনি নাকি অসম্ভব রকমের প্রতিবাদী। এক কথায় ঠোঁটকাটা। আর সেই জন্যই নাকি প্রতিবাদী গান তাঁর গলায় সব থেকে বেশি ভালো করে ফুটে ওঠে। তবে এই বিষয়ে সলজ্জ গায়িকার উত্তর আমায় কেউ প্রতিবাদী বললে ভীষণ রকমের লজ্জা হয় আমার। কারণ আমি ঠিক করে মনে করতে পারি না, যে আমি কোনও দিনই কোনও কিছুর বিরুদ্ধে সঠিকভাবে প্রতিবাদ করে উঠতে পেরেছি। আমি ভীতু এক জন মানুষ। অশান্তি হতে পারে ভেবে মুখ খুলি না। চোখ বুঁজে থাকি। আর সেই প্রকাশ করতে না পারা কথাগুলোই হয়তো আমার গান হয়ে বেরোয়। যা অনেকের কাছে প্রতিবাদ স্বরূপ লাগে।

নিজের জীবনের গুরু মনে করেন তিনি কাকা সমীর চট্টোপাধ্যায়কে। বাবার থেকেও তাঁর গায়িকা হয়ে ওঠার পিছনে বেশি অবদান তাঁর কাকার। একই রকম ভাবে শিল্পী জয় সরকারকে নিজের জীবনের অন্যতম স্তম্ভ মনে করেন লোপামুদ্রা মিত্র। তিনি বলেন, জয় আমার খুব ভাল বন্ধু। বাড়িতে ওঁর মতো এক জন সঙ্গীতশিল্পী থাকলে যে ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, বা যে ধরনের কাজ একসঙ্গে হ‌ওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেগুলো অবশ্যই হয়েছে।

বর্তমান বাংলার শিল্পে রাজনীতির প্রভাব নিয়ে অকপটে লোপামুদ্রা বলেন, আমি তো বাম-তৃণমূল দুই জমানাতেই কাজ করেছি। কিন্তু মনে যাই থাকুক, নিজের শিল্পে এর প্রভাব পড়া উচিত নয়।আবার কোন‌ও সরকারি অনুষ্ঠানে আমি গান গাইছি মানে এটাও নয় যে, আমি সেই দলের। তিনি মনে করেন আজও সুমনদা মাসে বারোটার শো করলে বারোটাই হাউসফুল হবে।

কোন‌ও আক্ষেপ রয়েছে গায়িকার? একটু অতীতের দিকে ফিরে অভিনেত্রী জানান, এখন মনে হয় ‘বেণীমাধব’ গানটা একটু অন্য ভাবে আরও এক বার রেকর্ড করি। একটু খারাপ লাগে। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন সিনেমায় তাঁর গানের সেই ভাবে সদ্ব্যবহার হয়নি। তাঁর কথায় অনেক গান গেয়েছি, জয় আমায় দিয়ে নানা রকম গান‌ও গাইয়েছে, সেই নিয়ে আমার কোন‌ও আফসোস নেই। কিন্তু সিনেমায় সেই অর্থে আমাকে কেউ ব্যবহার করলো না। হয়ত‌ কোন‌ও নায়িকার সঙ্গে আমার গলা মেলে না। তবুও আমি আশা ছাড়িনি।