বাংলা টেলিভিশনের অত্যন্ত পরিচিত মুখ হলেন অভিনেত্রী ময়না মুখোপাধ্যায় (Moyna Mukherjee) ও অভিনেতা সম্রাট মুখোপাধ্যায় (Samrat Mukherjee)। দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় করার সুবাদে তাঁরা দর্শকদের কাছে ভীষণই পরিচিত। বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘এক্কাদোক্কা’তে পোখরাজের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন ময়না। আবার অন্যদিকে অভিনেতা সম্রাট মুখোপাধ্যায়কে শেষ বার দেখা গিয়েছিল ‘গঙ্গারাম’ ধারাবাহিকে সুপারস্টার স্যামির চরিত্রে।
এই স্বামী-স্ত্রী জুটি গতবছর অংশ নিয়েছিলেন স্টার জলসার নতুন রিয়্যালিটি শো ‘ইস্মার্ট জোড়ি’তে। এই রিয়্যালিটি শো’র মঞ্চে এসেই তাঁরা নিজেদের জীবনের এক অজানা গল্প সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন। তাঁদের জীবনে যে গভীর যন্ত্রনা লুকিয়ে ছিল তা প্রকাশ্যে আনেন এই জুটি।
‘ইস্মার্ট জোড়ি’র মঞ্চে এসে অভিনেত্রী ময়না মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যে তিনি তিনবার গ’র্ভপাত করিয়েছেন। কার্যত ইচ্ছাকৃতভাবেই তিনি এই কাজ করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন। গর্ভপাতের সেই তীব্র মানসিক যন্ত্রনা অভিনেত্রীকে আজও তাড়া করে বেড়ায়।
ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভপাত প্রসঙ্গে অভিনেতা সম্রাট মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, “প্রথমবার ময়না যখন অন্তঃসত্ত্বা হয় তখন আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভীষণই খারাপ ছিল। আমরা তখন বাবা-মা’র থেকে আলাদা থাকতাম। একটা ঘরে দিন কাটাতাম। ওই একটা ঘরে নিজেদের সন্তানকে ভালো করে বড় করা খুব কঠিন ছিল।” আসলে এই অভিনেতা দম্পতির বিয়ে মেনে নেয়নি তাঁদের পরিবার।
এরপর তৃতীয়বার গ’র্ভপাত প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, “তৃতীয়বার যখন আমি গর্ভপাত করাই তখন আমার খুব মন খারাপ হয়েছিল, সেই সময় মনে একটা বিষয় চলছিল, আমার জীবনে কী এই ঘটনাই ঘটতে থাকবে? আমি কী কোনওদিন নিজের সন্তানের মুখ দেখতে পাব না? কারণ বারবার এই রকম শারীরিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেলে ভবিষ্যতে হয়ত আমি মা নাও হতে পারি”।
তবে এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই সহানুভূতির পরিবর্তে নেটিজেনদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় এই তারকা দম্পতিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক নেটিজেন লিখেছিলেন, “লজ্জা লাগা দরকার আপনাদের। তিন তিনটে প্রাণ নষ্ট করেছেন”। একজন কটাক্ষ করে লিখেছিলেন, “একবার না হয় ভুল করে হতে পারে। কিন্তু বারবার এক ভুল কী করে হয়?”
উল্লেখ্য, তিনবারের সেই দুর্বিসহ অভিজ্ঞতা, মা হতে না পারার যন্ত্রণা কাটিয়ে আজ ময়না ও সম্রাট দু’টি যমজ পুত্রের মা-বাবা। দুই ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে তাঁদের ভরা সংসার। যদিও তাঁরা দু’জনেই সেই অতীত স্মৃতি থেকে বেরোতে পারেননি। আজও দুঃসহ সেই মুহুর্তগুলো তাড়া করে বেড়ায় তাঁদের।