‘দর্শক আমায় ঘৃণা করছেন! বাস্তব জীবনে আমি বর্ষা ন‌ই’—নায়িকা থেকে ভিলেন হয়ে কটাক্ষ কুড়োচ্ছেন শিঞ্জিনী

বাংলার ছোটপর্দায় মুখ্য চরিত্র থেকে খলনায়িকা—এই যাত্রাপথ অনেকটা সাহসী, আবার অনেকটা কঠিনও। অনেক অভিনেত্রীই বদলে যান চরিত্রের সঙ্গে, কিন্তু চরিত্রের দোষ গিয়ে লাগে তাঁদের ব্যক্তিত্বের গায়ে—ঠিক যেমনটা ঘটছে শিঞ্জিনী চক্রবর্তীর সঙ্গে। সিরিয়ালে ‘দুষ্টু’ মেয়ের অভিনয় করতে গিয়ে বাস্তবেও সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। অথচ পর্দার আড়ালে তিনি ঠিক কতটা সরল ও হাসিখুশি মানুষ, সেটা অনেকেই জানেন না।

‘উমা’ ধারাবাহিকের সেই স্মার্ট, সাহসী মেয়েটি দর্শকের মনে আজও গেঁথে আছে। শিঞ্জিনী তখন ছিলেন মুখ্যচরিত্রে, একেবারে নায়িকা। কিন্তু সময়ের স্রোতে অভিনয়ের পরিধি বদলেছে তাঁর। এখন তিনি বরং খলচরিত্রেই বেশি জনপ্রিয়। কেউ বলেন ‘সন্ধ্যাতারা’র দুষ্টু মেয়ে, কেউ বলেন ‘অষ্টমী’র কুটিল বৌদি। কিন্তু সব চরিত্রের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এক অভিনয়-দক্ষতার ছাপ, যা সহজেই দর্শকের নজরে পড়ে যায়।

বর্তমানে স্টার জলসার ‘চিরসখা’ ধারাবাহিকে বর্ষা চরিত্রে অভিনয় করছেন শিঞ্জিনী। এই চরিত্রটির রাগ, হিংসা, শয়তানি—সব মিলিয়ে একেবারে খাঁটি খলনায়িকা। এমনকি ধারাবাহিকে শাশুড়ি কমলিনীকে অপমান করার কারণে বর্ষাকে এক চড়ও খেতে হয়েছে। বাস্তবে নয়, দৃশ্যপটেই। কিন্তু সেই দৃশ্য দেখে ক্ষেপে উঠেছেন অনেক দর্শক। কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতিবাচক মন্তব্যও করেছেন বর্ষার প্রতি, আর সেই ঘৃণার আঁচ এসে পড়েছে শিঞ্জিনীর গায়েও।

এই প্রসঙ্গে শিঞ্জিনী স্পষ্টভাবেই বলেন, “দর্শক আমায় ঘৃণা করছেন, এটাই প্রাপ্তি। নেগেটিভ চরিত্র করার এটাই সাইড এফেক্ট। সব জেনেই তো করছি।” তাঁর মতে, বর্ষাকে যত বেশি ঘৃণা করা হচ্ছে, তত বেশি চরিত্রের সাফল্য। কারণ দর্শকের মনে দাগ ফেলতে পারলেই বুঝতে হবে অভিনয় সফল হয়েছে। তবে এখানেই একটা দুঃখ রয়ে যায় তাঁর—“মানুষ শিঞ্জিনিকেও বর্ষার মতোই ভাবছেন। শিঞ্জিনী তো বর্ষা নয়।”

আরও পড়ুনঃ নিউইয়র্কে পাকাপাকিভাবে বাস করবে মোহনা! এদিকে, স্টোরে আদিকে সারপ্রাইজ দিতে হাজির শুভ! তবে, কী এখানেও আদি-মোহনাকে একসঙ্গে দেখে ভুল বুঝবে শুভলক্ষী?

সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো, এক অভিনেত্রী হিসেবে চরিত্রের দায় তাঁকে নিতে হচ্ছে ব্যক্তি শিঞ্জিনী হিসেবে। তিনি চান দর্শক বর্ষাকে ঘৃণা করুন, কিন্তু শিঞ্জিনীকে নয়। কারণ, তিনি একজন অভিনেত্রী, যিনি শুধু নিজের দায়িত্ব পালন করছেন। চরিত্রের মধ্যে থেকে সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। “আমি আমার অভিনয়কে ভালোবাসি। দর্শক যদি আমার অভিনয়ে প্রতিক্রিয়া দেন, সেটা আমার প্রাপ্তি। কিন্তু সেটা যদি ব্যক্তিগতভাবে এসে পড়ে, তখনই খারাপ লাগে।” এই মন্তব্যে একদিকে যেমন তাঁর পেশাগত দায়িত্ববোধ উঠে আসে, তেমনই উঠে আসে একজন শিল্পীর মনের অনুভূতিও।