গতকাল হয়ে গেল, জি বাংলার ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’-এর (Chirodini Tumi Je Amar) সেই বহুল প্রতীক্ষিত নতুন অপর্ণার প্রত্যাবর্তন পর্ব। প্রথম পর্বে নতুন অপর্ণাকে দেখা যাওয়ার পর থেকেই নানান প্রতিক্রিয়ায় সমাজ মাধ্যম ভরে গেছে। তারই মধ্যে স্বয়ং অপর্ণা অর্থাৎ, শিরিন পালের (Shirin Paul) মনখোলা পোস্ট যেন গোটা আলোচনায় এক অন্য রঙ এনে দিল। তিনি লিখেছিলেন, তাঁর মা ছোটবেলা থেকেই তাঁকে শিখিয়ে দিয়েছেন যে মানুষের সামনে দু’ধরনের পথ, কেউ জনপ্রিয় হয় আর কেউ প্রিয়জন হয়ে ওঠে। কোন পথটা নিজের জন্য বেছে নেবেন, সেটাই নাকি তাঁর কাছে বড় শিক্ষা।
নতুন যাত্রার শুরুতে তাই তিনি একরকম সাহস নিয়েই বলেছিলেন যে কোনও পথই মসৃণ হবে না, কিন্তু চেষ্টা করতে তিনি প্রস্তুত। দর্শকদের উদ্দেশে তাঁর সেই বিনয়ী আবেদন, পাশে থাকার অনুরোধই যেন অনেকের মনে আলাদা ছাপ ফেলল। আর তাই নিয়ে দর্শকদের প্রতিক্রিয়াও তেমনই ইতিবাচক। কেউ লিখেছেন, শিরিনের কথার ভঙ্গি নাকি তাঁর মতো নতুন মুখের কাছ থেকে আশা করা যায় না, এতটাই পরিণত ও সৌম্য। আবার কেউ কেউ তাঁকে আশীর্বাদ করে বলেছেন, নতুন চরিত্রে তাকে যেন কোনও নেতিবাচকতার মুখোমুখি না হতে হয়।
বিশেষ করে যে ধরনের বিতর্ক চলছিল আগের অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে, তাতে অনেকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন যে দোষারোপের খেলা যেন নতুন মুখের দিকে না যায়। দর্শকদের এই আশ্বাসবাহী প্রতিক্রিয়াগুলো চরিত্রটিকে ঘিরে কৌতূহলকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে, ধারাবাহিকের অন্য শুটিং-সঙ্গীরা বিশেষ করে জিতু কামাল, পুরো পরিস্থিতিতে যেন আরও ইতিবাচক আবহ নিয়ে এলেন। তিনি তিন দিনের কাজের অভিজ্ঞতায় বুঝেছেন, শিরিন খুব দ্রুত কাজে মানিয়ে নিতে পারে এবং নির্দেশনা আত্মস্থ করার পাশাপাশি নিজের বোঝাপড়াটাও রেখে দেয়।
তাঁর মতে, নতুন সহ-অভিনেত্রী হিসেবে শিরিনের মাঝে একটা আলাদা সচেতনতা আছে যে কোথায় কতটা শুনতে হবে আর কোথায় নিজের বিচারবুদ্ধি কাজে লাগাতে হবে, সে জানে। তাই তিনি দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘মত গড়বেন নিজের চোখে দেখে। কোনও পক্ষপাত যেন না কাজ করে।’ অভিনেত্রী হিসেবে শিরিনের নিজের যাত্রাটাও বেশ ধীর-স্থির। ঝাড়গ্রামে মঞ্চের সঙ্গে বড় হওয়া, পরিবারের থিয়েটার দলে কাজ করা, তারপর পড়াশোনার টানে কলকাতায় এসে নাটকের জগতে নিজেকে গড়ে তোলা। এই ধাপগুলো তাঁর অভ্যন্তরীণ দৃঢ়তাকে আরও বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুনঃ “গাঁইয়া লাগে তোমায়!” মধুবনীকে ‘গ্রাম্য’ তকমা! “আমি মাটির কাছাকাছি একজন মানুষ গ্রামবাংলাকে ভালোবেসেই থাকতে চাই”, শাঁখা-পলা থেকে সাজপোশাক নিয়ে নেটিজেনদের কটাক্ষে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রীর স্পষ্ট জবাব!
তাই অনেকে বলছেন, পর্দায় তাঁকে নিয়ে প্রথমে আলোচনার পরিমাণ কম থাকলেও তাঁর কাজের মধ্যে একটা স্থির ছন্দ আছে, যা ধীরে ধীরে সামনে আসবে। প্রযোজনা সংস্থারও ভরসা রয়েছে তাঁর উপর, আবার অভিনেতা-পরিচালকেরাও তাঁর মনোযোগ দেখে আশাবাদী। সব মিলিয়ে এখন দর্শকদের আগ্রহ এই চরিত্রটি ধারাবাহিকটিকে কোন দিকে নিয়ে যায়, তা দেখা। আলোচনার ভিড়ের মাঝে শিরিনের বিনয়ী পোস্ট, দর্শকদের উষ্ণ প্রতিক্রিয়া আর সহ-অভিনেতার সমর্থন– এই তিন মিলে মনে হচ্ছে নতুন এক পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। শুরুটা যাই হোক, সামনে পথটা কেমন হবে, সেটাই এখন দেখার।






