‘এমন সিরিয়ালই তো দেখতে ভাল লাগে’, ‘সব সময় শ্বাশুড়ি বৌমা ঝামেলা হয় না, সন্ধ্যাতারা, অনুরাগের ছোঁয়ার পর কম্পাস সেটার প্রমাণ!’– ঋতজা-কম্পাসের বন্ধুত্বকে ঘিরে উচ্ছ্বাস দর্শকদের! স্টার জলসার ‘কম্পাস’-এর বদলে দেওয়া সম্পর্কের ভাষা এখন আলোচনার কেন্দ্রে!

স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘কম্পাস’ (Compass) শুরুতে খুব বেশি আলোচনায় না থাকলেও, এখন গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে এমন এক সম্পর্ক উঠে এসেছে যা টিভির পর্দায় বিরল। বৌমা আর শাশুড়ির মধ্যে সদ্ভাব দেখা যায় না, এই ধারণায় আমরা এতটাই অভ্যস্ত যে, হঠাৎ উল্টো চিত্র দেখলে চমকে যেতে হয়। কম্পাস আর ঋতজার বন্ধুত্বই তাই হয়ে উঠেছে এই ধারাবাহিকের অন্যতম বড় আকর্ষণ। দর্শকদের মতে, এই সম্পর্কটা শুধু গল্পের সৌন্দর্য বাড়াচ্ছে না বরং নতুন দৃষ্টিভঙ্গিও তুলে ধরছে যে শাশুড়ি মানেই প্রতিপক্ষ নয়। আর এই প্রচলিত ধারণা ভাঙার একটা জোরালো উদাহরণ যেন কম্পাস।

তবে এই বন্ধুত্বের পথ শুরুতে একদম মসৃণ ছিল না। বিহানের সঙ্গে কম্পাসের বিয়ে হওয়ার পর থেকেই অনেকে তাকে মেনে নিতে পারেনি। অথচ, সেই সময়ে সবচেয়ে বেশি পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ঋতজা, শুধু শাশুড়ির দায়িত্ব থেকে নয় বরং মানুষের মতো আচরণ করেই। কিন্তু গল্পের মোড় বদলায় যখন কম্পাস ভুল সিদ্ধান্তে জড়িয়ে পড়ে। বিহানের বাবা নিজের স্বার্থে কম্পাসকে দিয়ে মিথ্যে বলিয়ে নেন আর সেই চাপেই সে ভুল পথে হাঁটে। সবই ভালো উদ্দেশ্যে হলেও, কথাটা লুকোনোর দায় পড়ে কম্পাসের কাঁধে।

আর সেখানেই ঘটে এমন একটা দৃশ্য, যা দর্শকদেরও নাড়া দিয়েছে! ঋতজা সবার সামনে কম্পাসকে চড় মেরে বসেন। এই প্রথমবার দুইজনের সম্পর্কের মধ্যে এত বড় ফাটল দেখা যায়। যাকে বন্ধু বলে মানত, তাঁর কাছ থেকেই আঘাত পেয়ে ভেঙে পড়ে কম্পাস। কিন্তু গল্পটা এখানেই থেমে যায়নি। পরের পর্বে দেখা গেল, আবেগ আর অভিমান একসঙ্গে মেশা সেই দৃশ্যের পর, দু’জনের কথোপকথনেই খুলে গেল ভুল বোঝাবুঝির গিঁট। কম্পাস জানিয়ে দেয় কেন সে মিথ্যে বলেছিল, আর সেই সত্যি শুনে ঋতজা নিজের ভুলটাই আগে দেখতে পান।

এই পর্বের পর দর্শকদের প্রতিক্রিয়ায় তাই প্রশংসাই বেশি। কেউ লিখেছেন, সাধারণত নায়িকারা সবকিছু একা সামলানোর চেষ্টা করে, তারপর বিপদে পড়ে, কিন্তু কম্পাস সেটা করেনি। ঋতজাকে সব বলে সে বুঝিয়েছে, সম্পর্ক মানে আস্থা আর সেটা থাকলে সমস্যা ভাগ করে নেওয়াই সহজ রাস্তা। অন্যজনের কথায়, এমন গল্প দেখলে ভালো লাগে, যেখানে শাশুড়ি-বৌমা শুধু বাড়ির রাজনীতি করেন না, বরং একে অপরের ছায়া হয়ে ওঠেন।

আরও পড়ুনঃ ‘কাউকে কিছু দিতে, টাকার থেকেও মনটা থাকা দরকার!’ ‘এতটা আত্মসুখী! শুধু নিজেকে ভালবাসলেই সম্পর্ক টেকানো অসম্ভব’– স্বামীর টাকা নিয়ে তৃণার মন্তব্যে, ফের নীল-তৃণা সম্পর্ক নিয়ে তোলপাড়! নেটিজেনদের প্রশ্ন, ‘বিয়েটা এখনও টিকে আছে কি করে?’

কেউ কেউ আবার উদাহরণ টেনে বলছেন, ‘সন্ধ্যাতারা’ বা ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র মতো ধারাবাহিকের পর আবারও সেই সম্ভাবনাটাই সামনে আনল কম্পাস। এই ধারাবাহিকের সাফল্যের মূল জায়গা গল্পের নাটকীয়তা নয়, সম্পর্কের বাস্তবতা। শাশুড়ি-বৌমাকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে দেখানোটা যত সহজ, তাদের বন্ধুত্বকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা তত কঠিন। কম্পাস সেই কঠিন কাজটাই করছে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে। যেখানে ভুল হয়, মন ভাঙে আবার কথায়-কথায় জোড়া লেগেও যায়। দর্শকরাও তাই বলছেন, ঝগড়া-ঝাঁটি দেখিয়ে নয়, এই আন্তরিকতাই নাকি দেখতে ভালো লাগে।