“কে এই সাই পল্লবী, যার সঙ্গে আমার তুলনা করা হচ্ছে? চিনি না তাঁকে, যা বলেছি শ্বেতা ভট্টাচার্য হয়েই বলেছি!”– পোশাক বিতর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে আ’গুনে ঘি ঢাললেন শ্বেতা!

বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ ‘শ্বেতা ভট্টাচার্য’ (Sweta Bhattacharya) সম্প্রতি পোশাক প্রসঙ্গ ঘিরে বিতর্কে জড়িয়েছেন। দীর্ঘ ১৭ বছরের অভিনয় জীবনে তিনি একের পর এক হিট ধারাবাহিক উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। ‘সিঁদুরখেলা’ দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর পথচলা, তারপর থেকে প্রায় প্রতিটি চরিত্রই দর্শকমনে দাগ কেটেছে। শুধু ছোটপর্দাতেই নয়, দেবের বিপরীতে বড়পর্দাতেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। অথচ এমন সাফল্যের মাঝেই নিজের অভিনয় জীবনকে ঘিরে একটি অদ্ভুত শর্তে বরাবর অটল থেকেছেন তিনি– কখনওই নাকি হাতকাটা বা স্বল্প পোশাক পরবেন না পর্দায়!

সাম্প্রতিক একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শ্বেতা সেই কথাই খোলাখুলি জানিয়েছিলেন, পর্দায় উন্মুক্ত পোশাক পরার মানসিকতা তাঁর নেই। তাঁর ভাষায়, অভিনয়জগতে আসার উদ্দেশ্য শরীরের বিক্রি নয়, বরং প্রতিভা দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করা। এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সমাজ মাধ্যমে কার্যত ঝড় ওঠে। অনেকেই তাঁর এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করে বলছেন, পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে তিনি নাকি অন্যদের ছোট করছেন। আবার অনেক অনুরাগী উল্টোদিকে তাঁকে তুলনা করেছেন দক্ষিণী তারকা সাই পল্লবীর সঙ্গে, যিনি পর্দায় বা অনুষ্ঠানে সর্বদাই শাড়ি বা ঢাকা পোশাকে দেখা দেন।

তবে এবার বিতর্কের মাঝেই শ্বেতা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কখনওই কারও পোশাকের পছন্দ নিয়ে মন্তব্য করেননি। বরং তিনি সহ-অভিনেত্রী মিশমি দাসের অধুনিক পোশাক নিয়ে প্রশংসাও করেছেন খোলাখুলি। শ্বেতার দাবি, কার কী পরা উচিত আর কী নয়, সেটা বলার অধিকার তাঁর নেই। কেবল নিজের জীবনের জন্য যে নিয়মে তিনি চলেন, সেটাই তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন। তাঁর কথায়, কিছু পোশাক তাঁকে মানায় না, তাই তিনি এড়িয়ে চলেন। সেই সঙ্গে স্বীকারও করেছেন, একসময় ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁকে বলা হয়েছিল ছোট পোশাক না পরলে কাজ পাওয়া কঠিন হবে।

তবুও শ্বেতা দৃঢ়ভাবে জানিয়েছিলেন, তিনি প্রতিভা বিক্রি করেই পথ তৈরি করতে চান। অভিনেত্রীর এই অবস্থান ঘিরে নানারকম প্রতিক্রিয়া আসছে টেলিপাড়ার অন্দর থেকে। অনেকেই তাঁর মন্তব্যকে উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন, এটি তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত মত। তবে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার পাল্লা যে ভারী, তা আর আলাদা করে বলার নেই। শ্বেতা অবশ্য পরিষ্কার জানিয়েছেন, নেতিবাচক আলোচনায় তিনি কান দেন না। মানুষের মন্তব্য নিয়ে সময় নষ্ট করার ইচ্ছেও তাঁর নেই।

আরও পড়ুনঃ “মা দুর্গার থেকে শক্তিশালী আমার মা!” “মা-কে কষ্ট দিচ্ছে, ছেলে কি সহ্য করতে পারে?”— ছোট্ট কবীরের সরল প্রশ্নে ভিজল কোয়েলের চোখ! মহিষাসুরমর্দিনীর রূপে মাকে দেখে অবাক কবীর, তুলছে হাজারো প্রশ্ন!

ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও খোলাখুলি মত জানিয়েছেন তিনি। সহকর্মীদের কটাক্ষের জবাবে শ্বেতা স্পষ্ট বলেছেন, “প্রথমত আমি সাই পল্লবীকে চিনি না। আমি কাউকে নাম নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি, যা বলেছি শ্বেতা ভট্টাচার্যের জীবন নিয়ে বলেছি!” তিনি আরও জানান, ইন্ডাস্ট্রিতে কারও সঙ্গে তাঁর গভীর বন্ধুত্ব নেই। সংসার আর পরিবারকে প্রাধান্য দিয়ে চলতে ভালোবাসেন তিনি। বিতর্কের মাঝেও শ্বেতার আত্মবিশ্বাস একটুও টলে যায়নি। নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখেই তিনি এগিয়ে যেতে চান, আর তাঁর মতে, একমাত্র কাজ আর প্রতিভাই শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় তৈরি করে।