বর্তমানে অনেক বাচ্চারাই শিশু শিল্পী (Child Artist) হিসেবে বিনোদনের এই দুনিয়ায় পা রাখছে। শুটিংয়ের কঠিন কাজ আর তার সঙ্গে পড়াশোনার চাপ কোথাও মুছে দিচ্ছে শিশুদের শৈশবটাকেই। খেলাধুলা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, ঘুরতে যাওয়া, মজা আনন্দ করার অবসরই পাচ্ছে না শিশুরা। জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে তাদের এই ব্যস্ততায় ভরা অভিনয়ের জীবনে।
সেরকমই পরিস্থিতি এখন ভাইরাল শিশু ফুগলার, শিক্ষিকার সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও ভাইরাল হয়েই জনপ্রিয় হয় ফুগলা। বর্তমানে সে স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক হরগৌরী পাইস হোটেল ধারাবাহিকে অভিনয় করছে। রবিবার জোর করে তাকে শুটিং এ পাঠাচ্ছে তার অভিভাবক। খেলা, আনন্দ করা, নিজের প্রিয় মানুষদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ পাচ্ছে না সে। তাই তার প্রিয় শিক্ষিকার কাছে শুটিং এ না পাঠানোর আর্জি করেছে ফুগলা। ফুগলার ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট হতেই ভাইরাল হয়ে যায়, প্রশ্ন জাগিয়ে তোলে হাজার মনে। এরকমই তো আরও কত ফুগলা আছে যাদের শিশু বলে তাদের ইচ্ছাকে গুরুত্বই দেওয়া হয়না। আচ্ছা শিশুদের দিয়ে তাদের অনিচ্ছায় শুটিং করানো কি শিশু শ্রমের মধ্যে পড়ে না? শিশুদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শুটিং করানো কি ভুল নয়? নেটিজেনরা প্রশ্ন উঠছে অভিভাবকদের ওপর।
ভিডিও পোস্ট হবার পরেই শুরু উঠে যায় কমেন্টের ঝড়। নেটিজেনদের অনেকেই এই বিষয়ের তীব্র প্রতিবাদ করে লিখেছেন ফুগলার কাছ থেকে জোর করে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে তার শৈশব, এই ছোট বয়সে জোর করে তাকে পাঠানো হচ্ছে শুটিং যেটা শিশু শ্রমের থেকে পৃথক কিছু নয় তাই ফুগলা বাবা মায়ের উচিত অর্থের পিছনে না ছুটে তাদের বাচ্চার ভালো চিন্তা করা, ফুগলার খুশি, তার সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেওয়া।
কিছু নেটিজেন এও বলেছেন যে তারা ফুগলা আর দিল্লির রাস্তার ধারে ধাবায় কাজ করা সেই শিশু শ্রমিকদের মধ্যে তিনি কোনও পার্থক্য খুজেই পাচ্ছেন না, দুটো বাচ্চারাই তাদের শৈশব হারিয়েছে। এদের পিতা মাতাদের সুবুদ্ধি হোক এই দাবি তুলেছেন তিনি। পড়াশোনা ও খেলাধুলা এই দুটোই বাচ্চাদের জন্য প্রয়োজনীয় তার তাদের ওপর জোর করে কাজের ভার চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।
বর্তমানে ধারাবাহিকে শিশু চরিত্রের প্রাধান্য অনেকটাই। জি বাংলা, স্টার জলসা, কালারস বাংলা, সান বাংলার প্রায় সমস্ত ধারাবাহিকেই হয়েছে শিশু চরিত্র। আর্শিয়া মুখার্জী, মেঘনা চক্রবর্তী, হিয়া দে, সৃষ্টি মজুমদার, ধৃতিষ্মান চক্রবর্তী, অয়ন্যা চ্যাটার্জী, রক্তিম সামন্ত প্রভৃতি শিশুরা এই ছোট বয়স থেকেই কাজ করছে ধারাবাহিক ও সিনেমা যা তাদের শৈশবকে করে তুলেছে বিপন্নময় তার সাথে পড়াশোনায় তাদের নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় অভিনয়ের ব্যস্ততম জীবনের জন্য। তাই তাদের ইচ্ছা বিরোধে জোর করে কাজের ভার চাপিয়ে দিয়ে তাদের শৈশবের সুন্দর মুহূর্ত গুলো নষ্ট করছে তাদের অভিভাকরা।