বাংলা ধারাবাহিকের গল্প বাস্তবতাহীন, কোন‌ও উন্নতি নেই! টেলিভিশনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্ফোরক দেবযানী চট্টোপাধ্যায়

বাংলা ধারাবাহিক, টেলিফিল্ম এবং সিনেমার বিখ্যাত অভিনেত্রী দেবযানী চট্টোপাধ্যায়। একসময় যিনি সমান তালে রাজত্ব করেছেন বড়পর্দায় এবং ছোটপর্দায়। দুর্গা সহায়, গুলদস্তা, দুজনে, শ্রীমতী, অব্যক্ত, লে ছক্কা সহ নানান ছবি করেছেন তিনি। এছাড়াও জড়োয়ার ঝুমকো, রাখি বন্ধন, বরণ, গানের ওপারে, সর্বজয়া, খোকাবাবু সহ নানান ধারাবাহিকেও সমান তালে দক্ষতার সাথে অভিনয় করেছেন তিনি।

বিনোদনের দুনিয়ার জনপ্রিয় মুখ অভিনেত্রী দেবযানী হটাৎই ধারাবাহিক ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। সিনেমা অন্য স্বাদের সিনেমাতেই এখন দেখা যায় তাকে। তিনি জানিয়েছেন ভালো কাজ না পেলে ধারাবাহিকের দুনিয়ায় আর ফিরবেন না তিনি। তার এই বক্তব্য হতাশ হয়েছে তার অনেক অনুরাগীরাও। সম্প্রতি সাংবাদিকরা তাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি জানিয়েছেন ধারাবাহিক ছাড়ার পিছনে তার আসল কারণ।

Bengali serial

সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন তিনি ঠোঁট কাটা। সর্বদাই স্পষ্ট করা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের টেলিভিশনের শাশুড়ি নিয়ে তাকে প্রশ্ন করায় তিনি বলেছেন “বাস্তবে কি ভালো শাশুড়ি নেই! এখনকার সমাজে তো শাশুড়ি আর বউমার মধ্যেকার সম্পর্ক বন্ধুত্বের সম্পর্ক। এখনকার দিতে ওরকম শাশুড়ি আর আছে নাকি! ধারাবাহিকের কাহিনীতে কোনও উন্নতি হচ্ছে না। আগের সময় ধারাবাহিকে প্রতিটি চরিত্রে একটু গুরুত্ব থাকত। প্রতিটি চরিত্রের একটি ইতিহাস থাকত যেটা এখন আর দেখা যায়না।

“এখনকার ধারাবাহিকে তিনটিই মূল চরিত্র হিরো, শাশুড়ি আর বৌমা। এখনকার দিনে একটা মেয়ের জীবন যে চার দেওয়ালের মধ্যেই আবদ্ধ থাকে না, প্রত্যেকেরই সে একটা নিজস্ব জগৎ আছে সেটাকে এখন আর তুলে ধরা হয়না। এখন প্রত্যেকটি কাহিনীই এক। এক প্লট। ভিন্ন স্বাদের গল্প বলে এখন আর কিছু হয়না। শুধু আমি কেন আমাদের সময়ের সকলের এই একই কথা বলবে।” জানিয়েছেন তিনি

তিনি এও বলেছেন “বৌমা ছেলের সঙ্গে থাকছে বলে শাশুড়ির কষ্ট হচ্ছে। তার ছেলে তার থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। শাশুড়ি আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগছে। এসব কি আদৌ হয়, আমিও তো ওই বয়সী আমি কি আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগছি না। খুব হাতে গোনা গল্পে দেখা যায় শাশুড়ি ভালো এবং বউমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। এসব দেখেও তার ভুল প্রভাব পরে।”

তিনি বর্তমানে হিরোইনের উদ্দেশ্যে বলেছেন “এখন ধারাবাহিকের কোনও মাপকাঠি নেই। সবাই হুট করে স্টার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেই স্থান তাকে কীকরে ধরে রাখতে হয়, কীকরে নার্চার করতে হয় সেটা এখন কেউ জানে না। এখনকার নায়িকারা সব সুপার মহিলা। আমার নায়কদের জন্যও কষ্ট হয়। নায়িকাদের সামনে তাদের কিছুই করার থাকে না। তবে এতে দোষ নায়িকাদের নয়, আমাদের সময় আমাদের প্রথমে ছোটো ছোটো রোল দেওয়া হতো আমরা ডিরেক্টরদের বিশ্বাস অর্জন করার পর মুখ্য চরিত্র পেতাম কিন্তু এখন তাদের ওখানেই সোজা বসিয়ে দেওয়া হয় তাই তারা জানে না কিকরে নিজেকে উন্নত করতে হবে।”

আরও পড়ুনঃ নীলকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করব না! বিয়ের আসর থেকে পালাতে গিয়ে ধাক্কা লাগল বরের সঙ্গে! চমকে উঠল মেঘ

টিআরপি নিয়ে বলেন “দর্শকদের মাপকাঠি নিয়ে আমি কিছু বলতে চাইনা কিন্তু এই ধরনের গল্পের জন্যই টিআরপি কমে যাচ্ছে। আগে টিআরপি আসতো ১০, ৯ এখন সেটা খুব বেশি হলে ৭,৮। আমাদের শিল্পের উন্নতি করার চেষ্ঠা হয়না আর। আগে অনেক কিছু ছিল টেলিফিল্ম, ধারাবাহিক, ৫ পর্বের ধারাবাহিক, ফলে আজ একটার শুট করে পরের দিন নিজেকে অন্য রোলের জন্য তৈরী করতে হত। একটা চ্যালেঞ্জ থাকত যেটা এখন নেই।” সাংবাদিকদের তিনি বলেন এটা তার একান্তই ব্যক্তিগত ধারণা তাই তিনি কাজ করেছেন না ধারাবাহিকে।