কিছু কিছু ধারাবাহিককে ঘিরে বাঙালি দর্শকদের আশা আকাঙ্ক্ষা থাকে অনেকটাই। আর সেই ধারাবাহিক গুলি কখনও কখনও আশা পূরণে সফল হয়। আবার কখনও চূড়ান্ত ব্যর্থ। বাঙালি দর্শকদের আশাকে বাড়িয়ে তুলেছিল এমনই একটি ধারাবাহিক হল কার কাছে কই মনের কথা (Kar Kachhe Koi Moner Kotha) ।
তবে বলাই যায় এই ধারাবাহিক দর্শকদের আশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এই ধারাবাহিকটির গল্প অন্য ধারাবাহিকগুলির থেকে যথেষ্টই ভিন্নধর্মী ছিল। মূলত পাঁচ ইয়ারি কথা দেখানো হয়েছিল এই ধারাবাহিকে। কিন্তু সেখান থেকে হঠাৎ করেই গল্প পরিবর্তিত হয়েছে। শুধুই শিমুলের জীবনের কষ্ট, প্রতিটা পদে তার সঙ্গে হওয়া অন্যায় এই ধারাবাহিকের মূল পাথেয় হয়ে উঠেছে।
এই ধারাবাহিক সমাজের শোষিত মেয়েদের অবস্থাকে তুলে ধরেছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন এই ধারাবাহিকের গল্প বাস্তবতা থেকে অনেকটা দূরে সরে গেছে। যদিও সাম্প্রতিক কিছু পর্বের থমকে যাওয়া গল্প আবারও নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। ধারাবাহিকের গল্পে আবারও সেই উত্তেজনা ফিরে এসেছে। দর্শকরা এবার চাইছেন অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি।
আর বর্তমান সময়ে এই ধারাবাহিকের বিভিন্ন চরিত্রের মুখেও সেই শাস্তি দেওয়ার কথাই শোনা যাচ্ছে। এই মুহূর্তে এই বাংলা ধারাবাহিকের গল্প অনুযায়ী, ধারাবাহিকের নায়িকা শিমুলকে তার স্বামীকে বিষ দেওয়া মিথ্যে অপরাধে ফাঁসানোর চেষ্টা করে তার দেওর-জা পলাশ ও প্রতীক্ষা। আর যার জেরে জেল যাত্রা হয়েছে শিমুলের।
যদিও শিমুলের এই কঠিন পরিস্থিতিতে তার পাশে রয়েছে তার প্রাক্তন প্রেমিক ও পাড়ার বন্ধুরা। শুধু তাই নয় শিমুলের কাকি শাশুড়ি এবং খুড়তুতো ননদও সদাই রয়েছে তার পাশে। তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন শিমুল এমন গর্হিত কাজ কখনও করতেই পারে না। একই সঙ্গে তারা বিশ্বাস করেন এই কর্মের পিছনে দায়ী পলাশ এবং প্রতীক্ষা।
যদিও শিমুলের জেল যাত্রায় বেজায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে তার ননদ পুতুল। এমনকি নিজের বোনের চিকিৎসাটুকুও ভালো করে করাচ্ছে না পরাগ, পলাশ। তাদের কাকিমা পুতুলের ভালোর জন্য ছুটে এসে দুটো কথা বললেই কাকিমার উদ্দেশ্যে গায়ে জ্বালা ধরানো কথা বলছে দুই ছেলে। আর সেই জন্যই শিমুলের কাকি শাশুড়ি জোর গলায় বলেন, ‘এই বাড়িতে কোনও ভালো মেয়ে টিকতেই পারবে না।’ এরপর প্রতীক্ষাকে উদ্দেশ্য করে তিনি পলাশকে বলেন, ‘নিজের জন্য একেবারে সঠিক মেয়ে জুটিয়েছিস! ঠিক তোর মতোই হয়েছে।’ তিনি যে কোন উদ্দেশ্যে এই কথা বলেন তা বুঝতে বাকি থাকে না কাররই।
অন্যদিকে তুতুল পরাগ এবং পলাশকে উদ্দেশ্য করে বলে, কোন উকিলের পাল্লায় তোরা পড়েছিস জানিস না! সব সত্যিই একদিন বেরিয়ে আসবে। অপরাধীরা একদম উপযুক্ত শাস্তি পাবে। আর অপরাধীদের বিরুদ্ধে মাস পিটিশন করব আমি। এই পাড়ার সব লোক তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে। তুতুলের কথা শুনে প্রতীক্ষা আছে বেশ ভয় পেয়ে যায় তা বলাই বাহুল্য।
ক্রমাগত খারাপের দিকে এগোচ্ছে শিমুলের শারিরীক অবস্থা। কিছুতেই ঠিক হচ্ছে না সে। কারণ পুতুলকে সুস্থ করার জন্য প্রয়োজন যথাযোগ্য চিকিৎসার। আর তার জন্য রয়েছে অর্থের খরচ। কিন্তু পুতুলের জন্য পয়সা খরচ করতে রাজি নয় তার ভাইয়েরা। মধুবালা দেবী নিজের স্বামীর পেনশনের টাকা দিয়ে নিজের মেয়ের চিকিৎসা করাবেন তার অতটা সমর্থ্য নেই।
ধারাবাহিকের সাম্প্রতিক পর্ব অনুযায়ী, পুতুলের পাশে এসে বসে মধুবালা দেবী। নিজের মেয়ের এমন করুণ অবস্থা কিছুতেই সহ্য করতে পারছেন না তিনি। মাকে দেখেই পুতুল বারবার শিমুলকে দেখতে চায়। কিন্তু রেগে উঠে মধুবালা বলে ওঠেন, “সকাল থেকে হাড় ভাঙ্গা খাটুনি খেটে এখন এসে একটু শান্তি করে বসেছি। আমাকে একটু শান্তিতে বসতে দেনা। আর যে সহ্য করতে পারছি না।” তখনই পুতুল বলে, “ওই শাকচুন্নি কেমন মেয়ে এবার বুঝতে পেরেছিস তো?”