‘গোপাল-রুক্মিণী জুটি চোখের আরাম, অভিনয়কে যেন সত্যি করে তোলে!’ বিবাহিত অভিনেতা-অবিবাহিতা অভিনেত্রীর রসায়নও যেখানে এত স্বচ্ছ, সেখানে আরেক জুটি একই ফ্রেমেই দাঁড়াতে নারাজ!– দুই জুটিকে পাশাপাশি রেখে তীব্র সমালোচনায় দর্শকরা, বাড়ছে বিতর্কের আগুন!

জি বাংলার ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar) ধারাবাহিক ঘিরে চলা সাম্প্রতিক অস্থিরতা এখন ইন্ডাস্ট্রির ভেতর-বাইরে, দুই জায়গাতেই বড় আলোচনার বিষয়। ধারাবাহিকের গল্প যেদিকে এগোচ্ছে, তার থেকেও বেশি নজর পড়ছে জিতু কমল (Jeetu Kamal) এবং দিতিপ্রিয়া রায়ের (Ditipriya Roy) চলমান বিতর্কের দিকে। অসুস্থতার পর কাজে ফিরেই জিতুকে নাকি সহ-অভিনেত্রীর নানান অভিযোগের মুখে পড়তে হয়েছে। যা মানসিকভাবে তাকে চাপে ফেলে দিচ্ছে, এমনটাই ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি নিজের পোস্টে।

অন্যদিকে দিতিপ্রিয়ার আগের অভিযোগ থেকে ভুল ব্যাখ্যা এবং পরে ক্ষমা চাওয়ার পরেও দু’জনের সম্পর্ক যে স্বাভাবিক নেই তা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। নতুন করে শোনা যাচ্ছে, নায়িকা নাকি জিতুর সঙ্গে একই ফ্রেমেও দাঁড়াতে চাইছেন না আবার রোমান্টিক দৃশ্যে তো আরও আপত্তি। ফলে প্রোডাকশন বাধ্য হয়ে দু’জনের ক্ষেত্রে আলাদা শট নিচ্ছে। দর্শকদের একাংশ এই অবস্থাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। কেউ বলছেন জিতুকে ছাড়া ধারাবাহিক দেখবেন না।

কেউ আবার দিতিপ্রিয়াকেই দায়ী করছেন পেশাদারি সীমারেখা ভেঙে দেওয়ার জন্য। তাঁদের দাবি, ব্যক্তিগত অস্বস্তি যদি এতটাই চরমে ওঠে, তাহলে কাজটাই ছেড়ে দেওয়া উচিত। যে ইন্ডাস্ট্রিতে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ, সহযোগিতার দক্ষতা আর চরিত্রের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রধান, সেখানে অভিনেত্রী কেন এমন বিচ্ছিন্ন আচরণ করছেন– এই প্রশ্ন তুলছেন বহু দর্শক। এই মুহূর্তে সমাজ মাধ্যমে দর্শকদের কাছে তুলনার হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এই চ্যানেলের আরও এক জনপ্রিয় ধারাবাহিক।

হ্যাঁ, কথা হচ্ছে ‘পরিণীতা’র অন্যতম জনপ্রিয় পার্শ্ব জুটিকে নিয়ে। সেখানে গোপাল-রুক্মিণীর রসায়ন এতটাই সহজ আর স্বাভাবিক যে তারা এখন টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় পর্দা জুটি। গোপালের চরিত্রে অভিনয় করা দ্রোণ মুখোপাধ্যায় বহুদিনের বিবাহিত, সন্তানও আছে এই কথা দর্শকরা খুব ভালো করেই জানেন। অন্যদিকে বয়সে ছোট এবং অবিবাহিত রুক্মিণী ওরফে অনন্যা দাসের সঙ্গে তার অভিনয়ের স্বচ্ছন্দতা দেখে কেউ কখনও অস্বস্তি বোধ করেননি। দু’জনের দৃশ্যগুলোতে যে পেশাদারিত্ব, যে ভরসা এবং যে আরাম আছে।

তা দর্শকের কাছে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য লেগেছে সব সময়। তাঁরা মনে করছেন, এটাই শিল্পীদের কাজের আসল পরিচয় হওয়া উচিত। এই কারণেই দিতিপ্রিয়া-জিতুর বর্তমান দূরত্ব আরও বেশি করে আলোচনায়। ‘পরিণীতা’র গোপাল-রুক্মিণীকে উদাহরণ হিসেবে টেনে অনেকেই বলছেন, ‘যেখানে বয়স, বৈবাহিক অবস্থা বা ব্যক্তিগত মতভেদ কোনোদিন কাজের পথে বাধা হয়নি, সেখানে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’-এর নায়িকা কেন অভিনয়ের মৌলিক নিয়মটাই মানতে চাইছেন না?’ ‘ধারাবাহিকের গল্পে রসায়ন থাকবে, এটাই তো স্বাভাবিক!

আরও পড়ুনঃ ‘সতী সাবিত্রীর অন্য নায়কদের সঙ্গে ঘ’নিষ্ঠ দৃশ্যে অসুবিধা হয়নি, জিতুর নাম শুনলেই সমস্যা!’ ‘উনি চান প্রশংসা শুধু উনিই পাবেন জিতুকে নিয়ে দর্শকের মাতামাতি হতেই গাত্রদাহ হয়েছে!’‌ দর্শকদের তীব্র কটা’ক্ষে জেরবার দিতিপ্রিয়া

আর সেই রসায়ন তৈরি করতে না চাইলে সেটা ধারাবাহিক, সহ অভিনেতা এবং দর্শকের প্রতি অত্যন্ত অবিচার!’ সব মিলিয়ে, জিতু-দিতিপ্রিয়া যে কোন পথে সমস্যার সমাধান করবেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে দর্শকরা যে ইতিমধ্যে শক্ত তুলনার জায়গা খুঁজে নিয়েছেন, তা স্পষ্ট। পরিণীতার গোপাল-রুক্মিণীর সহজ অভিনয় যেন অজান্তেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, পেশাদারি মানসিকতা ঠিক থাকলে কোনো সম্পর্কই কাজের পথে বাধা হতে পারে না। এখন দেখার বিষয়, এই অস্থির পরিস্থিতি ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ কোন দিকে নিয়ে যায়।