“কমলিনী আমাকে শিখিয়েছে সীমিত প্রত্যাশায় বাঁচতে!”— পর্দার মতো বাস্তব জীবনেও বদলে গেছেন অপরাজিতা! সব নারীর জীবনের গল্প কি এক? ‘কমলিনী’ চরিত্র নিয়ে বিস্ফোরক অপরাজিতা ঘোষ দাস!

টেলিভিশনের জগতে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিকে ‘অপরাজিতা ঘোষ দাস’ (Aparajita Ghosh Das) একেবারে নতুন করে দিয়েছেন। ‘কমলিনী’ (Kamalini) যেন কেবল কাল্পনিক চরিত্র নয় বরং এক নির্ভীক এবং আত্মমর্যাদায় পরিপূর্ণ নারীর প্রতিচ্ছবি। এই চরিত্রে তিনি শুধু অভিনয় করছেন না, বরং চরিত্রটির ভিতর দিয়ে প্রতিদিন বাঁচছেন। আত্মবিশ্বাস, সংযম এবং এক কঠিন মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন এক এমন নারীকে, যাঁর জীবন বাইরের সমাজের চোখে ‘স্বাভাবিক’ না হলেও, তার প্রতিটি পদক্ষেপ আজ অনেক দর্শকের চোখ খুলে দিচ্ছে।

এই চরিত্রের গভীরতা প্রসঙ্গে অপরাজিতা বলেন, “কমলিনী এমন একটি চরিত্র, যা বাংলায় এর আগে দেখা যায়নি।” অভিনেত্রীর মতে, এই চরিত্রটির তাঁর কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা, যেটার জন্যে তিনি এক মুহূর্তও দেরি না করে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন এটি কেবল পেশাগত একটি সিদ্ধান্ত ছিল না, বরং একরকম শিল্পীসত্তার কাছে দায়বদ্ধতাও বটে। কারণ কমলিনীকে জীবন্ত করে তোলার মধ্যে দিয়ে অপরাজিতা যেন নিজের ভিতরের সাহসী সত্তাটাকেই পর্দায় ছুঁয়ে দেখেছেন।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে যখন অপরাজিতাকে জিজ্ঞেস করা হয়, এই চরিত্রটি করতে গিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে কোনো পরিবর্তন এসেছে কি না— সেখানেই অভিনেত্রী স্পষ্টভাবে জানান, কমলিনী তাঁকে শিখিয়েছে প্রত্যাশা কমিয়ে আনতে। তিনি বলেন, “সবসময় সবার কাছে অনেক কিছুর প্রত্যাশা করতে নেই। সেই জন্য পর্দার মতো এখন আমি বাস্তব জীবনেও সীমিত লোকের কাছে আশা রাখি।” একটি কাল্পনিক চরিত্র যে একজন মানুষের মানসিকতাকে এতখানি প্রভাবিত করতে পারে, তা অপরাজিতার কথাতেই স্পষ্ট।

তবে তাঁর বক্তব্যে থেমে থাকেননি কেবল কমলিনী চরিত্রে। অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, ধারাবাহিকের আর পাঁচটা নায়িকার থেকে কমলিনীর জীবন কি বেশি জটিল? তিনি বলেন, “সমাজে নারীদের সমস্যা সব সময়েই বেশি। আমাদের জীবনের প্রতিটা ধাপেই অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়, অনেক পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। যখন একজন নারী মেয়ে থেকে মহিলাতে পরিণত হয়, এক পলকেই তাঁর জগৎটা পাল্টে যায়। চেনা সবকিছু ভুলিয়ে স্বামীর সংসারে নতুন করে সবটা শুরু করতে হয়।”

আরও পড়ুনঃ মুখার্জী বাড়িতে কমলিনীকে নিয়ে বসেছে বিচারসভা!
কমলিনী বিয়ে না করার সিদ্ধান্তে অনড়! কমলিনীর এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবে কি সমাজ? কি হতে চলেছে আগামী দিনের চিরসখা ধারাবাহিকে?

অপরাজিতা মনে করেন, নতুন একটি সংসারে পা রাখা একজন নারীর জন্য কেবল নতুন জীবন শুরু করা নয়, বরং নিজের পরিচিত জগতকে ছেড়ে দিয়ে সবকিছু শূন্য থেকে গড়ে তোলার এক গভীর অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। এই দৃষ্টিভঙ্গি শুধুই অভিনেত্রীর উপলব্ধি নয়, বরং সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা বাস্তবতার প্রতিফলন। অপরাজিতা ঘোষ দাসের মতো অভিনেত্রীর কাছ থেকে এমন বক্তব্য শুধু এক চরিত্রের উপলব্ধি নয়, বরং সমাজে নারীর কণ্ঠস্বর।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।