বাহার নায়ক ‘অর্চি বাবু’ ঋষি কৌশিকের সঙ্গে হয়েছিল তীব্র ঝগড়া, কথাও ছিল বন্ধ! দুম করে কেন ‘ইষ্টি কুটুম’ ছেড়ে দিলেন রনিতা? আসল কারণ এল সামনে

এই মুহূর্তে বাংলা টেলিভিশনের পর্দায় এখন টিআরপিই শেষ কথা বলছে। টিআরপি তালিকায় যে ধারাবাহিক যত বেশি নম্বর পাবে সেই ধারাবাহিক পর্দায় টিকবেও ততদিন। আসলে এখন নম্বর‌ই শেষ কথা। আর তাই ভালো গল্প হলেও অচিরেই বিদায় নিতেই হবে। তবে আগেকার দিনে এমনটা হতো না। ধারাবাহিক ভালো হোক বা খারাপ অন্তত বছর দেড়েকের গন্ডী খুব অনায়াসেই পার করতো টেলিভিশনের পর্দায়।

আর ধারাবাহিক সফল হলে তো কথাই নেই অন্তত তিন চার বছর। আর স্টার জলসা পর্দায় এইরকমই অত্যন্ত সফল একটি ধারাবাহিক ছিল ইষ্টি কুটুম। ম্যাজিক মোমেন্টস প্রযোজিত স্টার জলসার পর্দায় অন্যতম সফল ধারাবাহিক ছিল এটি। আজ থেকে ১০-১১ বছর আগে কার্যত বাংলা টেলিভিশনের পর্দা কাঁপিয়ে দিয়েছিল ত্রিকোণ প্রেমের গল্প বলা এই ধারাবাহিকটি।

তবে শুধুমাত্র ত্রিকোণ প্রেমের গল্প‌ই নয়। দুর্ধর্ষ পারিবারিক চিত্র, যৌথ পরিবারের গল্পে বুঁদ হয়েছিল বাঙালি দর্শককুল। বাহামণি-অর্চিষ্মান এবং কমলিকার ত্রিকোণ প্রেম বাঙালি দর্শককে টেলিভিশনের সামনে বসিয়ে রাখতে বাধ্য করেছিল। বলা বাহুল্য আজকের দিনে দাঁড়িয়ে মিঠাই ধারাবাহিককে নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করা হচ্ছিল দর্শকদের ভালোবাসার সেই মাইল ফলক অনেক আগেই ছুঁয়েছিল স্টার জলসার ইষ্টিকুটুম।

এই ধারাবাহিকের বাহামণি চরিত্রটিকে প্রাণ দিয়েছিলেন অভিনেত্রী রনিতা দাস। পুরুলিয়ার এক আদিবাসী মেয়ের চরিত্রে এই ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এককথায় অসামান্য, দুর্ধর্ষ ছিল তাঁর অভিনয়। যেমন উচ্চারণ, তেমন কৌতুকাঅভিনয়, অন্যান্য মুহূর্তের এক্সপ্রেশনেও অনবদ্য ছিলেন তিনি। তাঁকে ছাড়া বাহামণি চরিত্রে আর কাউকেই যেন ভাবা যাচ্ছিল না। কিন্তু হঠাৎই দুম করে ধারাবাহিক ছেড়ে দেন এই অভিনেত্রী। বেজায় ফাঁপড়ে পড়ে ইষ্টি কুটুম ধারাবাহিকের টিম।

তাঁর শূণ্যস্থান পূরণে আসেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। বলা বাহুল্য ২০১১-এর অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত, প্রায় ৪ বছর ধরে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে চলেছিল ‘ইষ্টি কুটুম’‌। যদিও রনিতা শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে এই ধারাবাহিক ছেড়ে দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে কেস করা হয় বলে জানা যায়।

এমনকী প্রোডিউসর গিল্ডের তরফে ব্যান করা হয়েছিল তাকে। তবে এই ক্ষেত্রে তিনি একা নন তার সঙ্গী হয়েছিলেন তার প্রেমিক সৌপ্তিক চক্রবর্তীও। আসলে ওই সময় জলসার পর্দায় জলনূপুর নামক একটি ধারাবাহিকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পান রনিতার প্রেমিক অভিনেতা সৌপ্তিকও। তবে রনিতা ইষ্টিকুটুম ছাড়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই জল নূপুর ছেড়ে দেন সৌপ্তিক। অভিনেতার বিরুদ্ধেও হয়েছিল কেস। তাকেও প্রোডিউসর গিল্ডের তরফে ব্যান করা হয়েছিল।

কিন্তু কেন ধারাবাহিক ছেড়েছিলেন রনিতা? এতদিনে খোলসা করলেন কারণ। সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন সেই সময় তার সহ অভিনেতা ঋষি কৌশিকের সঙ্গে তুমুল বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাদের মধ্যে হয়ে ছিল ঝগড়া। এমনকি অনেক সময় ব্যক্তিগতভাবে কোন কথা না থাকা অবস্থাতেই পেশাদারিত্বের খাতিরে একসঙ্গে অভিনয় করতেন তারা। যদিও রনিতা জানিয়েছেন সেই সময় তিনি শারীরিকভাবে এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে তাকে চিকিৎসক বাড়িতে বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন। আর মেগায় অভিনয় করলে সেটা সম্ভব নয় আর সেই কারণেই ধারাবাহিক ছাড়েন তিনি।

You cannot copy content of this page