কিছুদিন আগেই হারিয়েছেন প্রিয়জনকে, শরীরে বাসা বেঁধেছে চতুর্থ স্তরের ক্যা’ন্সার, মৃ’ত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে প্রতিদিন নতুন করে বাঁচছেন জনপ্রিয় বাঙালি অভিনেত্রী-পরিচালক! তাঁর লড়াইয়ের কাহিনী চোখে জল আনবে আপনার

হঠাৎ করেই জীবনের গতি থমকে যায়, যখন একের পর এক ঝড় এসে ভেঙে দিতে চায় আত্মবিশ্বাস। প্রিয়জনের মৃ’ত্যু, তার পরেই প্রাণ’ঘাতী রোগের থাবা— সব মিলিয়ে যেন দমবন্ধ করা অন্ধকারে আটকে পড়েছিলেন এই অভিনেত্রী তথা পরিচালক (Actress-Director)। তবু অবাক করার মতো শক্তিই তাঁকে আজ বাঁচিয়ে রেখেছে। ভাগ্যের এত বড় ধাক্কার পরও তিনি নিজেকে গুটিয়ে নেননি, বরং চারপাশ থেকে শক্তি খুঁজে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন নতুন দৃঢ়তায়।

এই যোদ্ধা হলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী-পরিচালক ‘তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়’ (Tannishtha Chatterjee)। গত বছর প্রাণ’ঘাতী ক্যা’ন্সারে বাবাকে হারানোর শোক সামলানোর আগেই তিনি জানতে পারেন, তাঁর শরীরেও বাসা বেঁধেছে চতুর্থ স্তরের স্তন ক্যা’ন্সার। এই খবর যে কারও জীবনের স্বাভাবিক গতি থামিয়ে দিতে পারে, কিন্তু তন্নিষ্ঠা তা হতে দেননি। মার’ণরোগের কারণে শখের চুল পর্যন্ত হারাতে হয়েছে তাঁকে, তবু তাঁর চোখে মুখে কেবলই লড়াই আর আশার আলো। তিনি বিশ্বাস করেন, সব ভেঙে পড়লেও মানুষ ভাঙে না।

শুধু পাশে থাকা মানুষের যত্ন আর ভালোবাসাই তাঁকে রোজ নতুন করে বাঁচতে শেখায়। অভিনেত্রীর নিজের কথাতেই স্পষ্ট, গত আট মাস ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়। ৭০ বছরের মা আর ৯ বছরের কন্যা, দু’জনেই পুরোপুরি তাঁর উপর নির্ভরশীল। এমন পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তা তাঁকে ঘিরে ধরলেও বন্ধুরা তাঁর ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবার এবং বন্ধুত্বের শক্তি তাঁকে শুধু ভরসাই দেয়নি, ফিরিয়ে দিয়েছে মুখের হারানো হাসিও।

Actress Struggle

তন্নিষ্ঠা মনে করেন, এই প্রযুক্তিপ্রধান যুগেও মানুষই আসল আশ্রয়, যার সহমর্মিতা ও উপস্থিতিই তাঁকে অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে এসেছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি উপলব্ধি করেছেন স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্ব। এক সাক্ষাৎকারে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, তিনি সবসময় গর্ব করতেন যে কখনও গুরুতর অসুস্থ হননি। এমনকি নিজের সুস্থতা নিয়ে একটু অহংকারও ছিল। বাবাও ছিলেন অত্যন্ত ফিট।

আরও পড়ুনঃ “আমি কোনোদিন ধর্ম দেখে বন্ধুত্ব করিনি” সায়কের সঙ্গে তার সম্পর্কের মূল ভিত্তি ধর্ম নয় মানবিকতার! বিশ্বাস আর ভালোবাসাই তাদের সত্যিকারের বন্ধুত্বের চাবিকাঠি! অকপট রিয়াজ

চিকিৎসকের কাছে যেতে হত না প্রায়। কিন্তু হঠাৎ করেই ক্যা’ন্সারের থাবা তাঁকে শিখিয়ে দিয়েছে, শরীরের যত্নে অবহেলা করা বিপজ্জনক। তিনি আজ নারীদের বিশেষ করে চল্লিশোর্ধ্ব মহিলাদের পরামর্শ দেন, নিয়মিত ম্যামোগ্রাফি করাতে, যাতে আগেভাগে ধরা পড়লে রোগ মোকাবিলা অনেক সহজ হয়। মার’ণরোগ শরীরে বাসা বাঁধলেও তিনি তা সত্ত্বেও স্বপ্ন দেখেন, হাসেন আর মানুষকে আশার আলো দেখান। তিনি বিশ্বাস করেন, কষ্টের মাঝেও বেঁচে থাকার মানে খুঁজে নিতে জানতে হয়।

Actress Struggle