বলিউডের একটা সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন নীতা মেহতা। মুম্বাইয়ের এক গুজরাটি পরিবারে জন্ম হয় এই অভিনেত্রীর। বাবা ছিলেন আইনজীবী, মা চিকিৎসক। বাবা মা দুজনেই চাইতেন মেয়ে পড়াশোনার করে যেন কোথাও ভালো চাকরি করেন। কিন্তু মেয়ে চাইতেন অভিনয় করতে। আর সেই অভিনয়কে ভালোবেসেই এই অভিনয় জগতে তিনি কাটিয়েছেন প্রায় দুই দশক। ৪০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, বিনোদ খান্না, সঞ্জীব কুমারের মতো বলিউডের তাবড় তাবড় শিল্পীদের সঙ্গে একাধিক হিট সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু আজ এই অভিনেত্রী নিজের অভিনয় পেশাকে ছেড়ে বেছে নিয়েছেন সন্ন্যাস জীবন।
কে তিনি? তিনি হলেন অভিনেত্রী নীতা মেহতা। অভিনয়কে ভালোবেসে বাড়ির বিরুদ্ধে গিয়ে এফটিআইআইয়ে ভর্তি হন নীতা। দীর্ঘ স্বপ্ন পূরণ হয় অভিনেত্রীর। ‘পোঙ্গা পণ্ডিত’, ‘ইয়ে হ্যায় জিন্দেগি’-এর মতো জনপ্রিয় হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন নীতা মেহতা। ১৯৭৮ সালের ‘ম্যায় তুলসি তেরে অঙ্গন কি’ ছবিটি তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো ছবি হয়ে দাঁড়ায়। রাজ খোসলা পরিচালিত এই ছবিতে বিনোদ খান্না এবং আশা পারেখের মতো অভিনেতা অভিনেত্রীর সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পান নীতা মেহতা। অবশ্যই এটি ছিল তাঁর জীবনে বিরাট পাওয়া।
‘জানি দুশমন’, ‘পত্থর সে টক্কর’, ‘হিরো’র মতো ছবিতে সঞ্জীবের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন নীতা। এরপর একটাসময় অভিনেতা সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে তাঁর জুটি দারুন রকম হিট হয়। শোনা যায় একে অপরের প্রেমে পড়েছিলেন এই দুই তারকা। এমনকি তাঁদের বিয়ের কথাও চলছিল। তবে শোনা যায়নি নীতাকে সঞ্জীব কুমার শর্ত দিয়েছিলেন, বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হলে তাঁকে অভিনয়জগতের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে নীতাকে। কিন্তু ভালোবাসার কাছে নিজের ক্যারিয়ার বিসর্জন দিতে চাননি অভিনেত্রী। তাই অচিরেই ভাঙে সঞ্জীব-নীতার সম্পর্ক। এই খবর পাঁচ কান হতেই কাজ আসা থমকে যায় নীতার হাতে বলে জানা যায়।
শেষের দিকে এই অভিনেত্রীকে আর কেউই কাজ দিতে চাইতো না। যিনি আগে মুখ্য চরিত্রে কাজ করতেন তাঁকেই বয়স্কদের চরিত্র অফার করা হতে থাকে। ধীরে ধীরে নীতা মেহতা বোঝেন বলিউডে তাঁর দিন শেষের দিকে। সঞ্জীবের প্রতি ভালোবাসা এতটাই গভীর ছিল যে আর কাউকে কোনদিনও ভালোবাসেনি তিনি।
শোনা যায় এরপর মুম্বাইতে একটি গয়নার দোকান খোলেন তিনি। কিন্তু সেই কাজে মনোনিবেশ করতে পারেনি। এরপর নিজের মায়ের পথ অবলম্বন করে মা আনন্দময়ীর আশ্রমে যেতে শুরু করেন তিনি। কিছুদিনের মধ্যেই একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে পড়েন। এখন সম্পূর্ণরূপ এক সন্ন্যাসিনী তিনি। ইউটিউবে নিজের একটি চ্যানেল খুলে সেখানে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও পোস্ট করেন এককালের এই সুদক্ষ অভিনেত্রী।