‘‘আমি ছোট থেকে কখনও পাঁঠার মাংস খাইনি’’—কিন্তু কেন আজও জীবনে মাংসের স্বাদ নেননি অপরাজিতা আঢ্য? ঈশ্বরবিশ্বাস, পারিবারিক নিয়ম না কি অন্য কোনও কারণ লুকিয়ে আছে এই সিদ্ধান্তের পিছনে?

খাবারের প্রতি মানুষের পছন্দ-অপছন্দ অনেকটা ব্যক্তিগত বিষয়। তবে কোনও জনপ্রিয় অভিনেত্রী যখন এ নিয়ে খোলাখুলি মত দেন, তখন তা স্বাভাবিক ভাবেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। এমনই একজন অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। যিনি স্পষ্টবাদী স্বভাবের জন্য পরিচিত। ব্যক্তিগত জীবন হোক বা খাদ্যাভ্যাস—নিজের অবস্থান নিয়ে তিনি কখনওই দ্বিধাগ্রস্ত হন না।

অপরাজিতা আঢ্য ভীষণ ঈশ্বরবিশ্বাসী। গণেশপুজোয় নিজে হাতে প্রতিমা তৈরি করে পুজো করেছেন তিনি। লক্ষ্মীপুজো নিয়েও তাঁর বিশেষ উৎসাহ রয়েছে। শুধু তাই নয়, জ্যোতিষশাস্ত্রেও তাঁর অগাধ বিশ্বাস। এই বিশ্বাস থেকেই এসেছে এক বিশেষ খাদ্যাভ্যাস। সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে চার দিন নিরামিষ ভোজন করেন তিনি। সোম, মঙ্গল, শুক্র ও শনিবার মাংস-ডিম একেবারেই ছোঁন না অভিনেত্রী। তবে বৃহস্পতিবার তাঁর কাছে বিশেষ দিন। ‘‘লক্ষ্মীবার’’ বলে এদিন অবশ্যই মাছ খান তিনি।

অভিনেত্রীর কথায়, জীবনে কখনও পাঁঠার মাংস খাননি তিনি। ছোট থেকেই বাড়ির নিয়ম ছিল, দেবতার পুজোর জন্য মাংস আনা চলবে না। আনলেও বাইরে রান্না করতে হবে, এমনকি আলাদা বাসনপত্র ব্যবহার করতে হত। সেই কারণেই মাংস খাওয়ার প্রতি স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ জন্মায়নি তাঁর। এখনো পর্যন্ত চিকেনও খান খুবই অল্প। বরং মাছ খান পরিবার—বিশেষ করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির ইচ্ছার কারণে।

পেশাগত কারণে দেশে-বিদেশে প্রায়ই যেতে হয় অপরাজিতাকে। বাইরে থাকাকালীন খাবারের বিষয়ে বেশ সমস্যায় পড়েন তিনি। তখন তাঁর ভরসা হয় পাউরুটি আর ফল। তবে নিউ ইয়র্কে গিয়ে তিনি একটু স্বস্তি পান। সেখানকার বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁকে চেনেন। অপরাজিতা জানিয়েছেন, ‘‘ওখানে গেলে ভাত-সবজি রেডি করে দেন ওঁরা। ফলে বাইরে থাকলেও ভাত খাওয়ার অভাব বোধ করি না।’’

আরও পড়ুনঃ ক্যা’ন্সারের কাছে হার মানলেও, মৃ’ত্যুর সঙ্গে শেষ অবধি লড়ে গেছেন সুচেতা চক্রবর্তী! আজও অনুরাগীদের মনে অমলিন তাঁর অভিনয়ের ছাপ! জানেন তাঁর সাহসী লড়াইয়ের গল্প?

বর্তমানে দেশজুড়ে মাংস খাওয়া নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর মতামতও স্পষ্ট। তাঁর কথায়, ‘‘আমার আনন্দ কারও মৃত্যুর কারণ হতে পারে না। আমি যখন কাউকে মারব, সেই প্রাণী তো ভয় নিয়ে মরবে। তখন একটা নেতিবাচক শক্তি শরীরে জমে যাবে। আমি চাই না, সেটা আমার শরীরে আসুক।’’ তাই মাংসকে দূরে রাখার সিদ্ধান্তে তিনি অটল।