জামা কাপড়ের জগতে অন্যতম উল্লেখযোগ্য নাম হল রেমন্ডস।১৯২৫ সালে এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিজয়পথ সিংহানিয়া। ১৯৫৮ সালে মুম্বাইয়ে রেমন্ডসের প্রথম রিটেল শোরুম খোলা হয়। বিদেশেও এই কোম্পানির শোরুম প্রতিষ্ঠিত হয়।অনেকেই ভাবেন যে কোম্পানিটি আসলে বিদেশী কিন্তু তা আসলে নয়। কিন্তু সিংহানিয়া কখনোই লাইমলাইটে আসতে চাননি তাই নিজেকে আড়ালে রেখে গেছেন বরাবর।২০০৬ সালে পেয়েছেন পদ্মভূষণ পুরস্কার তবুও নিজের নাম যশ এর জন্য কোনদিনও লোভী হতে দেখা যায়নি তাকে।
তবে সম্প্রতি তিনি আবার চর্চায় এসেছেন একটি বিশেষ কারণে। একসময় রেমন্ডসের আয় হতো বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা। অথচ আজ দক্ষিণ মুম্বাইয়ের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে হয় বিজয়পথ সিংহানিয়াকে। হঠাৎ করে তার এরকম করুণ দশা হল কেন? রেমন্ডস তো এখনো লাভের মুখ দেখছে তাহলে কী এমন হল যে তাকে ভাড়া বাড়িতে থাকতে হচ্ছে?
আসলে গন্ডগোলটা লুকিয়ে রয়েছে পরিবারে। নিজের আত্মজীবনী, অ্যান ইনকমপ্লিট লাইফে তিনি নিজের পরিবারের সঙ্গে বিরোধিতা নিয়ে বিশদে লিখেছেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, জীবিত অবস্থায় কখনো ছেলেমেয়েদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করে দিতে নেই। তার বইতেও তিনি লিখেছেন,’অভিজ্ঞতা থেকে আমি সবচেয়ে বড় শিক্ষা পেয়েছি যে বেঁচে থাকাকালীন মাতা-পিতার সম্পত্তি সন্তানদের দেওয়ার সময় সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত। মাতা পিতার সম্পত্তি অবশ্যই তার সন্তানরা প্রাপ্য, তবে এটিই তাদের মৃত্যুর পরেই দেওয়া উচিত। আমি চাই না কোন অভিভাবককে এমন যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় যা আমি প্রত্যহ সহ্য করি।’
আসলে তিনি তার পুত্র গৌতম সিংহানিয়াকে সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিয়েছিলেন। আর তার সুপুত্র তাকে বাড়ি থেকেই বার করে দিয়েছে! এখন বাধ্য হয়ে তাকে একটা ভাড়া বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। যে অফিসে তার গুরুত্বপূর্ণ নথি পত্র ছিল সেখানে তাকে যেতে বারণ করা হয়েছে। তার গাড়ির চালককে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং গাড়িও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। রেমন্ডসের কর্মচারীদের বলা হয়েছে তারা যেন বিজয়পথ সিংহানিয়ার সাথে কথা না বলেন। নিজের আত্মজীবনী তো এইসব কথাই বলেছেন বিজয়পথ সিংহানিয়া যা শুনে স্তম্ভিত সকলে।