বাংলা টেলিভিশনে খলনায়িকার চরিত্রে নিজের খ্যাতি ছড়িয়ে দেওয়া ‘মিশকা’ ওরফে অহনা দত্ত (Ahona Dutta), এই মুহূর্তে জীবনের সবচেয়ে সুন্দর পর্যায় রয়েছেন। চলতি বছরের জুলাই মাসেই মা হয়েছেন তিনি এবং তার কন্যাসন্তানটির নাম রেখেছেন ‘মীরা’। ছোট্ট মীরার আগমনের খবর আগেই জানিয়েছিলেন অহনা, সেই সময় তার বেবি বাম্পের ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাগ করার পরই তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। স্বামী দীপঙ্কর রায়ের সঙ্গে একেবারে নির্জনে চিনি ও মিষ্টি নামের দুই পোষ্যকে নিয়ে এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন তারা।
যদিও আইনিভাবে দম্পতি হলেও, এখনও সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়নি। এদিকে, একেবারে মাত্র ২১ বছর বয়সে মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অহনা। যদিও তার মায়ের মতামত ছিল যে দীপঙ্করের সঙ্গে বিয়ে না করাই ভালো, কারণ দীপঙ্করের আগে একটি সম্পর্ক ভেঙেছিল। কিন্তু, অহনা তার মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে দীপঙ্করের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং ১৯ বছর বয়সেই সংসার শুরু করেন। বর্তমানে রোজকার অভিজ্ঞতা নিয়ে সমাজ মাধ্যমে ভ্লগ করেন অহনা।
যেখানে স্বামী, পোষ্য এবং সন্তানের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো তুলে ধরেন তিনি। কিন্তু এদিন প্রথম সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিয়ে ভেঙে পড়লেন দম্পতি! সমাজ মাধ্যমে একটি ভিডিও করে অহনা বলেন, “আমাদেরকে সখের গাড়িটা বিক্রি করে দিতে হলো আজকে। আমাদের একসাথে কেনা প্রথম জিনিস ছিল এটা। আমি আর দীপঙ্কর যখন এই সম্পর্কটা শুরু করেছিলাম, তখন সেই সম্পর্কে স্বীকৃতি হিসেবে এই গাড়িটা আমরা কিনেছিলাম। সত্যি কথা বলতে আমাদের সম্পর্কের এটা প্রথম চিহ্ন।
আজও মনে পড়ে যখনই গাড়িটা নিয়ে এসেছিলাম। দীপঙ্কর প্রচন্ড খুশি হয়েছিল সেদিন গাড়িটা হাতে পেয়ে। আমাদের কাছে একটা স্বপ্নপূরণের মতো ছিল, দু’জনের একসাথে কেনা এই প্রথম জিনিসটা। আমাদের মনে হতো এই গাড়িটার প্রত্যেকটা ধুলো পর্যন্ত আমাদের। কত কিছুর সাক্ষী রয়েছে এই গাড়িটা। আমাদের প্রেম, বিয়ে থেকে শুরু করে মীরাকে হাসপাতাল থেকে এই গাড়িতে করেই বাড়িতে এনেছিলাম। তখন ভাবতে পারিনি যে এই গাড়িটা একদিন আমাদের কাছে থাকবে না।
এটা আমাদের বড্ড লক্ষী গাড়ি, কোনদিনও আমাদের বিপদে ফেলেনি। সেটা চার ঘন্টা পেরিয়ে মন্দারমনি বলুন বা আট ঘন্টা পেরিয়ে শান্তিনিকেতন, রোদ-ঝড়-জল-বৃষ্টি কিছুই আটকাতে পারেনি এই গাড়িটাকে।” ভিডিওর শেষ অংশে দেখা যায়, দীপঙ্করের চোখে জল আর অহনা বলছেন, “আসলে আমরা মা-বাবা তো ওর, মনটা খুবই খারাপ হয়ে যাচ্ছে ওকে ছেড়ে দিতে। মনের আক্ষেপ নয় বরং আশীর্বাদ রইল এরপর যার কাছেই যাও, সে যেন তোমায় আমাদের থেকেও বেশি ভালোবাসে। তোমার কথা আমাদের সারা জীবন মনে থাকবে।
আরও পড়ুনঃ “কখনও খ্যাতি ও টাকার পিছনে ছুটবে না! ভালো মানুষ হলে, সব এমনিতেই তোমার কাছে আসবে” আজও বাবা উদয় শঙ্করের শিক্ষা মেনেই চলেন মমতা শঙ্কর
এই গাড়ির পেছনে ‘মম ইন কার’ সাইনটা লাগিয়েছিলাম যখন আমাদের মেয়ে মীরা আসার কথা জানতে পারি। আজ পর্যন্ত এই সাইনটা খোলা হয়নি। ওটা বরং থেকেই যাক, পরের মা-বাবাকে মনে করে খুলে দিতে বলো।” মানুষের জীবন তো স্মৃতি নিয়েই তৈরি আর আমাদের সবার জীবনেই এমন মুহূর্ত আসে, যখন প্রিয় জিনিসটা যার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি স্মৃতি তাকেই বিদায় দিতে হয়। তবে, আমাদের তরফ থেকে দীপঙ্কর-অহনার জন্য রইলো শুভকামনা, আগামী আরও ভালো হবে।






