শ্যামাপুজোর মঞ্চে জিন্স পরে শ্যামাসংগীত! ইমন চক্রবর্তীকে তীব্র কটা’ক্ষ নেটপাড়ার! গায়িকার স্বাধীনচেতা বার্তায় বি’রক্ত সোশ্যাল মিডিয়া

গত ডিসেম্বরের ঘটনা স্মৃতিতে ফেরে। মঞ্চে গান গাইছিলেন ইমন চক্রবর্তী। গানের রোমাঞ্চময় মুহূর্তে হঠাৎই এক যুবক চিৎকার করে বললেন, “হিন্দি গানা গাইয়ে, নাচেঙ্গে!” এই ঘটনায় শুরু হয়েছিল এক বড় বিতর্ক। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবারও আলোচনার মুখে এলেন ইমন। এবার প্রশ্ন উঠল—শ্যামাপুজোর অনুষ্ঠানেও কেন ‘জিন্স’ পরে গিয়েছিলেন তিনি। এই প্রশ্ন শুনে চুপ থাকার মানসিকতা রাখলেন না গায়িকা। সামাজিক মাধ্যমে তিনি নিজেই স্পষ্টভাবে জানালেন, এই বিতর্কে তিনি কতটা বিরক্ত।

ইমন পোস্ট করেছেন মা কালীর ছবি, সেই ছবির সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন নিজের অনুভূতি। তিনি লেখেন, “গতকাল থেকে আমার জিন্‌স পরে শ্যামাসঙ্গীত গাওয়া নিয়ে অনেক কিছু দেখছি। এত দিন অনেক কিছু দেখেছি, অনেক কথা শুনেছি। কিন্তু নিজের উপর বিশ্বাস হারাইনি।” গায়িকার এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে, দর্শকের কটাক্ষ তাকে কোনো ভাবেই ভেঙে দিতে পারেনি। তার আত্মবিশ্বাস এবং নিজের কাজের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসই তাকে এগিয়ে চলতে সাহায্য করছে।

শিল্পীদের পোশাক নিয়ে সমালোচনা নতুন কিছু নয়। বিশেষত মহিলাশিল্পীরা সামাজিক মাধ্যমে প্রায়ই ‘বডি শেমিং’-এর শিকার হন। ইমন লিখেছেন, “শিল্পীদের যা ইচ্ছে তাই বলা যায়। আর শিল্পী মহিলা হলে তো কোনও কথাই নেই, আরও বেশি করে ‘বডি শেমিং’ করা যায়। করুন, যা ইচ্ছে করুন। তবে, একটা জিনিস জানবেন, জবাব দিতে হবে। আপনাকে, আমাকে জবাব কিন্তু দিতেই হবে।” গায়িকার এই কঠোর প্রতিক্রিয়ায় বোঝা যায়, তিনি নিজের মর্যাদা এবং স্বাধীনতা রক্ষায় দৃঢ়।

ইমন একমাত্র নন যিনি প্রকাশ্যে কটু মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন। এর আগে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সোহিনী সরকারসহ অনেকেই সমালোচনার জবাব দিয়েছেন। কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তবে এই ধরনের ঘটনা শিল্পীদের মানসিক শক্তি এবং ধৈর্যেরও পরীক্ষা নেয়। কেউ কেউ দর্শকের মন্তব্য এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন, তাতে মন শান্ত থাকে। কিন্তু ইমন স্পষ্ট—যে কোনও অবজ্ঞা, অবমাননা বা ‘বডি শেমিং’ যেন অবসরে না থাকে, তার জবাব দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ ‘একটু সংযত হওয়া উচিত’, দীপাবলির রাতে রংমশাল হাতে স্বামীকে চুম্বন, অহনা-দীপঙ্করের রোম্যান্টিক ভিডিও ঘিরে নিন্দার ঝড়!

এবার এই বিতর্ক যেন শিল্পীদের স্বাধীনতা ও আত্মবিশ্বাসের দিকটি আরও উজ্জ্বল করে দেখালো। ইমন চক্রবর্তীর মতো শিল্পীরা জানিয়েছেন, পোশাক বা বাইরের মন্তব্যের কাছে কখনোই নিজেকে হারানো যায় না। নিজের কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকলে সমাজের কটু কথা কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। শ্যামাপুজোর মঞ্চে জিন্স পরে গান গাওয়া বিষয়টিও তাই শুধু ব্যক্তিগত পছন্দ এবং স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবেই দেখা যায়। এই বিতর্কের মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হয়েছে—শিল্পীর স্বাধীনতা ও আত্মসম্মানই প্রথম, আর সমালোচনা থাকলে তার জবাব অবশ্যই দিতে হবে।