বাংলা টেলিভিশনের দর্শকদের কাছে অভিনেত্রী ‘রিমঝিম মিত্র’ (Rimjhim Mitra) দীর্ঘদিনের পরিচিত এক মুখ। প্রায় দুই দশক ধরে ছোটপর্দা এবং বড়পর্দা মিলিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর অভিনয়ের ধরন বদলালেও দর্শকের স্মৃতিতে তিনি আজও রয়ে গেছেন টেলিভিশনের অন্যতম খলনায়িকা হিসেবেই। তাঁকে বরাবর নেতিবাচক চরিত্রেই দেখা যায়, তারপরেও অভিনেত্রী মনে করেন যে এমন চরিত্রে অভিনয় করা খুব কঠিন!
তেমনই অভিনয় দক্ষতা দেখানোর সুযোগও অনেক বেশি, এমন চরিত্রে। তবে পর্দায় যতই চড়া সাজগোজ বা ছলচাতুরি করুন না কেন, পর্দার বাইরে রিমঝিমের জীবন অনেকটাই সাদামাটা। প্রায় ৩৯ বছর বয়স হয়ে গেলেও, এখনও তিনি অবিবাহিত। তাঁর জীবনের সবচেয়ে কাছের মানুষ শুধুই তাঁর মা। দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ার একটি অ্যাপার্টমেন্টেই একসঙ্গে থাকেন তাঁরা। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব একটা প্রচারের আলোয় থাকতে পছন্দ করেন না রিমঝিম। কাজ আর পরিবারের মধ্যেই তাঁর জগত সীমাবদ্ধ।
সেই জন্যই অনেকে জানেন না, অভিনয়ের পাশাপাশি নাচেও তিনি ভীষণ দক্ষ! অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্করের ব্যালেট ট্রুপের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন রিমঝিম। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, রাজ্যের বাইরেও সেই নৃত্যদলের সঙ্গে অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। কিশোরী বয়সে নাচের সফরেই জীবনের এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিনেত্রী, যা আজও শুনলে শিহরণ জাগে! ঠিক কী ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে?
ঝাড়খণ্ডে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় সেই ঘটনা ঘটে। তখন তিনি আরও লাজুক ছিলেন। সদ্য কিশোরী বয়সে পা দেওয়াতে বাইরের জগৎ নিয়ে কৌতূহলও বেশি ছিল। সেই রাতে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় কয়েকজন সুদর্শন ছেলেকে দেখে স্বাভাবিকভাবেই নজর সেদিকে গিয়েছিল। কিন্তু আচমকাই বিদ্যুৎ চলে যায় আর আলো ফিরে আসার পর সেই ছেলেগুলোকে আর খুঁজে পাননি তিনি। পরে ট্রেনে ওঠার পর মাঝপথে হঠাৎ ট্রেন থেমে যায় এবং পরিস্থিতি দ্রুত ভয়ংকর হয়ে ওঠে!
ঘটনাক্রমে জানা যায়, ট্রেন থামিয়ে ডাকাতি চলছিল এবং নাচের দলের মেয়েদের খোঁজ করছিল স্টেশনে দেখা সেই যুবকরাই! যাঁরা আসলে নাকি ডাকাতদলের সদস্য!পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক ছিল যে রিমঝিম ও তাঁর এক সঙ্গীকে বাথরুমে লুকিয়ে থাকতে বলা হয়। বাইরে থেকে অভিনেত্রী তখন শুনছিলেন, ডাকাতরা নাচের দলের মেয়েদের ডাকছে এবং বিয়ে করে সংসার পাতার কথাও বলছে। সৌভাগ্যবশত বড় কোনও ক্ষতি না হলেও, সেই অভিজ্ঞতা রিমঝিমের জীবনে আজও এক দুঃস্বপ্নের মতো স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে নিজের পদ ছেড়ে দিয়ে বিরাট বড় মনের পরিচয় দিয়েছেন অরূপ বিশ্বাস! প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ রূপাঞ্জনার
আজও সেই কথা মনে করলে তিনি আতকে ওঠেন। সেদিন যদি কথা না শুনে বাইরেই থাকতেন, তাহলে ঠিক কতটা খারাপ পরিণতি হতে পারত! উল্লেখ্য, এখন তিনি সিঙ্গেল, প্রক্তনের দেওয়া আঘাত সামলে উঠতে পারেননি এখনও। বিয়ে করতে চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু প্রেমিকের স্থায়ী সম্পর্কে ছিল ঘোর আপত্তি। তারপর ভেঙে যায়, প্রায় সাত বছরের সুন্দর সম্পর্ক! এখন তিনি অভিনয়কেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে, আরও এগিয়ে যেতে চান অতীত ভুলে। অভিনেত্রী আগামীতে যোগ্য জীবনসঙ্গী খুঁজে পাক, এই আমাদের আশা।






