এক সময় জি বাংলার পর্দায় ‘পূবের ময়না’-র ‘মেঘ’ চরিত্রে অভিনয় করে যে গভীর ছাপ রেখেছিলেন ‘স্নেহা চ্যাটার্জী’ (Sneha Chatterjee), সেই স্মৃতি এখনও দর্শকের মনে টাটকা। দীর্ঘদিন পর তিনি আবার ফিরেছেন স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘রাজরাজেশ্বরী রাণী ভবানী’তে। একসময় তিনি একাধিক চরিত্রের সুযোগ ছেড়ে দিয়েছিলেন, বয়সের তুলনায় বড় চরিত্রে অভিনয় করতে হবে বলে। তাঁর কাছে চরিত্রের মানসিক দিকটাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, খ্যাতি নয়।
অভিনয়ের বাইরে স্নেহার জীবনের আরেকটা বড় অধ্যায় তাঁর সংসার। বিয়ের আগে তিনি রিয়েলিটি শো এবং খবরের চ্যানেলে সঞ্চালনার কাজ করতেন। গিটার শেখার প্রতি ছোটবেলা থেকেই তাঁর একটা আলাদা আগ্রহ ছিল। সেই সূত্রেই পরিচয় হয় তাঁর গিটার শিক্ষকের সঙ্গে— যিনিই নাকি পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন স্নেহার জীবনসঙ্গী! স্নেহা বলেন, বিয়ের পর মেয়ের জীবনে বদল আসাটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাঁরা দু’জন একই পেশায় যুক্ত থাকায় বোঝাপড়া অনেক সহজ হয়েছে।
তবে, জীবনের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে সন্তান জন্মের পর। অভিনেত্রীর কথায়, তখন আর একান্ত সময় পাওয়া যায় না। সবকিছুই সন্তানের ভালো থাকার কথা মাথায় রেখে করতে হয়। কাজ, সংসার, সন্তান— সব কিছুই একসঙ্গে সামলানো কঠিন, কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন, ভালোবাসা থাকলে সেই ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব। তবে, ভালোবাসা যদি ফুরিয়ে যায়, তখন কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর খোলামেলা জবাবই এবার আলোচনার কেন্দ্রে।
স্নেহা বলেন, “আমি ওসব আয় রে আয় রে করা পছন্দ করি না। তোমার না পোষালে এগিয়ে যাও। একটা সময়ের পর আর জোর করে কাউকে আটকে রাখা যায় না সম্পর্কে।” তিনি আরও জানান, অনেক দম্পতি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে ভালোবাসাহীন সম্পর্কেও থেকে যান, কিন্তু তা কারও পক্ষেই স্বাস্থ্যকর নয়। বরং, যদি মনে হয় সম্পর্ক টিকছে না, তবে একসঙ্গে আলোচনা করে, প্রয়োজনে কাউন্সেলরের সাহায্য নিয়ে আলাদা হয়ে যাওয়াই শ্রেয়— এই ভাবনাই তাঁর মতে বাস্তবসম্মত।
আরও পড়ুনঃ “রবীন্দ্রনাথের জন্যই আমার বাড়িঘর সব হয়েছে, গান ভালোই লাগত না, মায়ের জন্যই আজ গায়িকা হয়েছে”—অকপট সংগীতশিল্পী শ্রাবণী সেন!
তাঁর ভাষায়, “অনেকেই ভাবনা থাকে, একটা বয়স অব্দি সন্তান মা-বাবাকে একসঙ্গে দেখেছে। এবার আলাদা থাকতে পারবে না, তাহলে দু’জনে আলোচনা করো আলাদা হওয়ার আগে। প্রয়োজনে কাউন্সিলরের পরামর্শ নাও। দেখো যদি আলাদা করে দুজনে সন্তানের দায়িত্ব নিতে পারো।” তাঁর এই স্পষ্টভাষী মতামত এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দু। কেউ প্রশংসা করছেন তাঁর পরিপক্ব ভাবনার, কেউ আবার বলছেন, এমন খোলামেলা দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়ে স্নেহা সমাজের পুরোনো চিন্তাধারাকে ভাঙার সাহস দেখিয়েছেন।






