কাজের ব্যস্ততায় তোমার কত জন্মদিন ভুলে গেছি! তুমি কখনও অভিযোগ করোনি, কখনও রাগ দেখাওনি! আজ তোমার প্রিয় খাবারগুলো মুখে তুলতে পারিনা! সোনালী চক্রবর্তীর জন্মদিনে স্মৃতি ভারাক্রান্ত শঙ্কর চক্রবর্তী

কাজের ব্যস্ততা কখন যে জীবন থেকে কত কিছু কেড়ে নেয়, তা বুঝতেই পারিনি তখন। সেদিন বুধবার রাতে মেয়ে ফোন করে যখন জিজ্ঞেস করল, “মায়ের জন্মদিন মনে আছে তো?”, তখনই যেন ঢেউয়ের মতো ফিরে এলো পুরনো সব ভুলে যাওয়া মুহূর্ত। অতীতে এমন বহুবার হয়েছে, কাজের চাপে তোমার জন্মদিনটাও মনে রাখতে পারিনি। তুমি কখনও অভিযোগ করোনি, কখনও রাগ দেখাওনি। সেই নিঃশব্দ সহনশীলতাই আজ আমাকে আরও বেশি তাড়িয়ে বেড়ায়।

আজ তোমার জন্মদিনে তোমার প্রিয় মিষ্টি কিনে আনলাম। মনে হল, তুমি যেন পাশে দাঁড়িয়ে হাসছ। চেলো কাবাব কিংবা লবঙ্গলতিকা, যেগুলোর প্রতি তোমার আলাদা টান ছিল, সেগুলো এখন আমার আর মুখে তুলতে ইচ্ছে করে না। খাবারের স্বাদ, পার্ক স্ট্রিটের সেই প্রিয় রেস্তরাঁয় কাটানো সন্ধেগুলো—সবকিছুতেই তোমার অনুপস্থিতি আজ তীব্র হয়ে ওঠে। একেকটা স্মৃতি যেন হঠাৎ এসে বুকের ভিতর একটা শূন্যতা তৈরি করে দেয়।

কিছুদিন আগে বন্ধুরা নিয়ে পুরী গিয়েছিলাম। সমুদ্রের ধারে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল, তুমি যদি থাকতে, সময়টা কত অন্যরকম হতো। তোমাকে ছাড়া সেই জায়গাটাও আর নিজের মতো লাগে না। ভাবছিলাম পুরী যাওয়া বাদই দেব। মেয়ে বোঝাল—সবকিছু কি ছেড়ে দিলে চলে? সত্যিই, আমার প্রতিটি আনন্দ, প্রতিটি পরিকল্পনা তো তোমাকে ঘিরেই ছিল।

আজ তোমার জন্মদিনে ফুল সাজাতে গিয়ে মনে পড়ছিল—তুমি এই দিনটিকে কত আনন্দে ভরিয়ে দিতে। বাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে হইহই, হাসি, গল্প, খাওয়াদাওয়া—তোমার উদযাপনের আনন্দে পুরো বাড়ি ভরে থাকত। তখন হয়তো সামর্থ্য ছিল না তোমাকে দামি শাড়ি বা গয়না দেওয়ার, আর আজ সেই ছোট ছোট অপূর্ণতাগুলোই মনে এসে হাহাকার বাড়ায়।

আরও পড়ুনঃ “হঠকারী সিদ্ধান্ত ছিল…আর আইনি লড়াই নয়” টলিউডে ফেডারেশন বিতর্কে ইউ-টার্ন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের? ভিডিও বার্তায় ফেডারেশনকে ‘পরিবার’, সভাপতিকে ‘আপনজন’ বললেন অভিনেতা! চাপের মুখে পাল্টি খেলেন পরমব্রত!

তুমি না থাকায় জীবনকে বহন করা কঠিন। কিন্তু চেষ্টা করি ধীরে ধীরে সব মানিয়ে নিতে। সোনালি, তুমি যেখানেই থাকো—ভালো থেকো। তোমার স্মৃতি আমার প্রতিটি নিঃসঙ্গ দিনে আলো জ্বেলে থাকে।