রেড রোডের পুজো কার্নিভালে যোগ দেওয়ার পর থেকেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। পরের দিনই যখন উত্তরবঙ্গ ভাসছে ভয়াবহ বন্যায়, তখন অভিনেতার ফেসবুক পোস্টে উঠে আসে উদ্বেগের সুর। কিন্তু সেই বার্তা ঘিরেই নতুন বিতর্ক। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন— একদিকে উৎসবের আনন্দে অংশ নেওয়া, আর অন্যদিকে বিপর্যয়ের সময় সহমর্মিতা প্রকাশ— এই দুই কি একসঙ্গে মানায়?
বিতর্ক যখন তুঙ্গে, তখন আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলল প্রসেনজিতের বোন, অভিনেত্রী পল্লবী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তবে তিনি শুরুতেই জানিয়ে দিলেন, এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না। শান্ত গলায় পল্লবীর উত্তর, “এটা দাদার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। আমি কখনওই দাদার কোনও সিদ্ধান্ত বা বক্তব্য নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলি না।” তবে একটিই জিনিস তিনি স্পষ্ট করে দিলেন— প্রসেনজিৎ ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক গভীর, পারিবারিক স্নেহের মতো। “দাদা মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে ভাইফোঁটা নেন। তাঁকে নিজের বড় দিদির মতো দেখেন,” জানালেন পল্লবী।
প্রসেনজিতের পোস্ট ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে কটাক্ষ চলছে, তা নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। পল্লবীর মতে, “এখন সমাজমাধ্যমে সবাই নিজের মতো করে লিখতে পারেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আমরা তো কাউকে চিনি না, তাই উত্তর দেওয়ারও কোনও মানে হয় না। দাদাও ঠিক সেই কারণেই কখনও তাড়াহুড়ো করে কিছু বলেন না।” তাঁর কথায়, এখন এমন সময়, যেখানে নেটমাধ্যমের ভাষা প্রায়শই সংবেদনশীলতার সীমা ছাড়িয়ে যায়। “সমালোচনা তো হবেই, কিন্তু তার মধ্যে গঠনমূলক কিছু থাকলে তবেই সমাজ উপকৃত হবে,” যোগ করেন অভিনেত্রী।
তবে শুধুমাত্র ভাইয়ের পক্ষেই নয়, পল্লবী নিজেও উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, এই বিপর্যয় কেবল আকস্মিক বৃষ্টির ফল নয়, এর পিছনে আরও গভীর কারণ রয়েছে। “প্রাকৃতিক বিপর্যয় নতুন কিছু নয়। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। প্রকৃতি কখনও ঋণ রাখে না, শোধ তো নেবেই,” বলেন তিনি। পল্লবীর মতে, আবহাওয়া দফতর আগে থেকেই সতর্ক করেছিল, যদি সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়া যেত, তবে এত বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়তো এড়ানো যেত।
শেষে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন— “আমাদের সবারই এখন দায়িত্বশীল হতে হবে। উৎসব হোক বা বিপর্যয়, সংবেদনশীলতার জায়গাটা যেন না হারায়। সমালোচনার বদলে সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করি, তবেই এমন দুর্যোগের সামনে একটু হলেও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব।”
‘স্টাইলের কারণে লোকে আজকাল সিঁদুর পরছে, এই কারণেই সিঁদুরের গুরুত্ব দিনে দিনে কমে যাচ্ছে’, ‘বিয়ে না করে সিঁথিতে সিঁদুর কেন?’ অভিনেত্রী চাঁদনির সাহার ছবি দেখে কটাক্ষের ঝড়! নেটিজেনদের প্রশ্নে মুখ বন্ধ অভিনেত্রীর
আরও পড়ুনঃ ‘স্টাইলের কারণে লোকে আজকাল সিঁদুর পরছে, এই কারণেই সিঁদুরের গুরুত্ব দিনে দিনে কমে যাচ্ছে’, ‘বিয়ে না করে সিঁথিতে সিঁদুর কেন?’ অভিনেত্রী চাঁদনির সাহার ছবি দেখে কটাক্ষের ঝড়! নেটিজেনদের প্রশ্নে মুখ বন্ধ অভিনেত্রীর
প্রসেনজিতের মতোই পল্লবীর কথাতেও স্পষ্ট একটাই বিষয়— যত বিতর্কই হোক, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জায়গায় কোনও আপস নেই। উৎসবের আনন্দ যেমন জীবনের অংশ, তেমনি বিপর্যয়ের সময় সহমর্মিতাও। দুটোই একসঙ্গে থাকলেই হয়তো সমাজ একটু বেশি মানবিক হয়ে উঠবে।