বাংলা চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় নায়ক হলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ( Prosenjit Chatterjee )। সেই ছোট থেকে যে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় দেখে আমরা বড় হয়েছি আজ বড় হওয়ার পরেও তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের সুপারস্টার। প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা চলচ্চিত্রে রাজ করেছেন তিনি এবং এখনও তার রাজত্ব কায়েম আছে। কিন্তু প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের টলিউড ইন্ডাস্ট্রি ( Tollywood Industry ) হয়ে ওঠার এই যাত্রাপথটা কিন্তু এতটা সহজ ছিল না।
ছবির সংলাপে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যখন বলেন আমি ইন্ডাস্ট্রি – তখন দর্শক তার বাচনভঙ্গির প্রেমে পড়ে হাততালিতে ভরিয়ে দেন হল ,একবাক্যে স্বীকার করেন পর্দার সংলাপে বলা আত্মবিশ্বাসে ভরপুর তার সেই কথা। অথচ বাংলা চলচ্চিত্রে একচ্ছত্র এই আধিপত্য তৈরি করার লড়াইতে অভিনেতা কিন্তু পাশে পাননি তার বাবাকে। দীর্ঘজীবনের লড়াইয়ে তার মা ছিলেন তার একমাত্র সঙ্গী।
আসলে প্রসেনজিৎ যখন খুব ছোট সেই সময় স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় ও প্রসেনজিৎ , পল্লবীকে ছেড়ে দিয়ে মুম্বইতে গিয়ে দ্বিতীয় সংসার পাতেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা ও জনপ্রিয় অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। প্রথম স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সাথে বৈবাহিক বিচ্ছেদও হয়েছিল তার। এরপর অনেক কষ্ট ও অভাবের মধ্য দিয়ে রত্না দেবী বড় করে তোলেন প্রসেনজিৎ আর পল্লবীকে। মুম্বইতে বাবা বিশ্বজিৎ যখন নতুন সংসার পেতেছেন তখন প্রসেনজিতের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল তার মামার বাড়ি।
আজ বাংলা চলচ্চিত্রের জ্যোষ্ঠ পুত্র প্রসেনজিতকে অর্থকষ্ট এবং অভাবের মধ্য দিয়েই বড় হতে হয়েছে ছোট থেকে। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় কোনও যোগাযোগ রাখতেন না বলেই জানা যায়। প্রসেনজিতের জন্মদিনে তার জীবনের সেই লড়াই সম্পর্কে মুখ খুললেন প্রসেনজিতের বোন জনপ্রিয় অভিনেত্রী পল্লবী চট্টোপাধ্যায়। অভিনেত্রী বলেন দাদার লড়াইটা তিনি যত না বেশি প্রত্যক্ষ করেছেন তার থেকে অনেক গুণ বেশি সেই লড়াই দেখেছেন তাদের মা। দাদাকে তার লড়াই সব সময় সমর্থন করে গেছেন তাদের মা।
অভিনেত্রী পল্লবী এই প্রসঙ্গে বলেন,“ আমার মা ছায়ার মতো দাদার পাশে থেকেছেন। মা সবসময় দাদা বলতে অজ্ঞান। ১ থেকে ১০০ বুম্বা, তারপর অন্যকিছু। দাদার স্ট্রাগল তো ছিলই। প্রথমে নাম করা তারপর এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে সুনাম নিয়ে টিকে থাকা, আমার মনে হয় তাঁর থেকে প্রতি অভিনেতার শেখা উচিত।” প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের আজ সবটুকু জুড়ে রয়েছে বাংলা চলচ্চিত্র আর তার অভিনয় সত্তা। পল্লবী বলেন,“দাদার সুস্থতা কামনা সবসময় করি। তবে জীবনের শেষ মুহূর্তেও আমি দেখতে চাই দাদা অভিনয় করছে। ওর জীবনের সিংহভাগটাই জুড়ে রয়েছে অভিনয়।”
আরও পড়ুনঃ মুখের উপর ঠাম্মিকে উচিত জবাব দিলো জ্যোৎস্না! সুধার থেকে তেজকে আলাদা করল ঠাম্মি, ধুন্ধুমার শুভ বিবাহ
উল্লেখ্য, একটি সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রসেনজিৎ নিজের ছোটবেলার কথা বলেছিলেন, সেই সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেন, “টালিগঞ্জের বাড়িতে থাকতেন সে সময়, বিশাল বাড়ি কিন্তু নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন মা। সন্ধ্যে হলেই আলো চলে যেত, মোমবাতির আলোয় পড়তে হত। মা দমদমের মামার বাড়িতে চলে আসেন শেষে। ওখানে যৌথ পরিবার, অনেক লোক একসাথে।”