শিশু দিবসের ঠিক পরদিনই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। তাঁর মতে, আজকের ভারত শিশুদের জন্য আর বাসযোগ্য নেই। আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শ্রীলেখা সরাসরি বললেন, “এ দেশে শৈশব বিপন্ন।” খ্যাতি, অর্থ বা জনপ্রিয়তা নয়—মানুষ হওয়াটাই সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করেন তিনি। আর ঠিক সেই জায়গাতেই ভারত পিছিয়ে পড়ছে বলে দাবি অভিনেত্রীর। তাঁর কথায়, “এই প্রজন্মকে আমরা মানবিকতা থেকে বঞ্চিত করছি।”
শ্রীলেখার সবচেয়ে বড় উদ্বেগ পথকুকুরদের নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্ক। তিনি মনে করেন, যেভাবে পথপশুদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, তা মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে অদৃশ্য দেয়াল তৈরি করছে। তিনি তির্যক সুরে বলেন, “পশুরা বরং বেশি ‘সভ্য’। খাবার আর আশ্রয় পেলে ওরা নিজেদের জগতেই থাকে। মানুষ সেই সামান্য নিরাপত্তাটুকুও কেড়ে নিতে চাইছে!” তাঁর আশঙ্কা—এই স্বার্থপরতার দৃষ্টান্তই ভবিষ্যতের শিশুদের সামনে মডেল হয়ে দাঁড়াবে।
এমন পরিস্থিতিতে ‘শিশু দিবস’ উদ্যাপনের আনন্দ তিনি খুঁজে পাননি। অভিনেত্রী প্রশ্ন তোলেন, “যে সমাজে দয়ামায়াহীনতা বাড়ছে, সেখানে শিশুরা কীভাবে ভাল মানুষ হয়ে উঠবে? কী-ই বা উদ্যাপন করলাম আমরা?” তাঁর মতে, শিশু যদি ছোট থেকেই সহানুভূতি না শেখে, তবে সেই সমাজ আরও কঠিন ও নির্মম হয়ে উঠবে।
নিজের বক্তব্যে শ্রীলেখা টানেন বিদেশের উদাহরণও। তিনি বলেন, ডেনমার্কে বাচ্চাদের খুব ছোট বয়স থেকেই প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ শেখানো হয়। এতে শিশুমন কোমল থাকে, সহানুভূতির বীজ জন্মায়। কিন্তু ভারতে উল্টো চিত্র—এখানে প্রাণীদের দূরে ঠেলতেই যেন বেশি উৎসাহ। এই বৈপরীত্যই তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভাবায়। তাঁর প্রশ্ন, “যে সমাজ নিজের প্রাণীদেরই জায়গা দিতে পারে না, সেই সমাজ তার শিশুদের কী শেখাবে?”
আরও পড়ুনঃ’ইউ লুক গুড ইন শাড়ি’ মন্তব্যের পেটেন্ট নিতে চলেছেন এবার ঋজু বিশ্বাস! ‘নায়ক’ ঋজুকে নিয়ে ছবি বানাচ্ছেন ফিল্ম ইনস্টিটিউটের পড়ুয়ারা! শোনা যাবে বিতর্কিত ডায়লগ
শেষে অভিনেত্রীর কণ্ঠে ফুটে ওঠে একরাশ হতাশা। “নিজের দেশে আর মন টেকে না,”—সোজাসাপটা স্বীকারোক্তি তাঁর। মানুষের মধ্যে মানবিকতার সংকট এবং পথপশুদের প্রতি শীতল মনোভাব—এই দুইয়ের মিলিত রূপই শ্রীলেখাকে ব্যথিত করছে। তাঁর আবেদন, শিশুদের জন্য আরও সহানুভূতিশীল ও নিরাপদ সমাজ গড়ার সময় এখনই, না হলে ক্ষতি হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের।






