বিনোদন জগতের মানুষদের আমরা যেভাবে পর্দায় বা মঞ্চে দেখি, বাস্তব জীবনটা কিন্তু তার থেকে অনেকটাই আলাদা হয়। গ্ল্যামার, আলো, করতালি আর সাফল্যের আড়ালে তাঁদেরও থাকে একেবারে সাধারণ মানুষের মতো সংসার, সম্পর্ক, আনন্দ-দুঃখের গল্প। পর্দার সামনে যাঁরা আবেগের রঙ ছড়ান, পর্দার বাইরে তাঁদের জীবন অনেক সময়েই আরও নিঃশব্দ, আরও বাস্তব। সেই জীবনেই লুকিয়ে থাকে এমন কিছু অভিজ্ঞতা, যা শিল্পীদের আরও মানবিক করে তোলে দর্শক-শ্রোতার কাছে।
এই তালিকায় বাংলা আধুনিক গানের অন্যতম জনপ্রিয় নাম শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কণ্ঠে ‘বৃষ্টিতে ভিজে এল মন’ বা ‘ফিরে দেখা’ শুনলে আজও মন কেমন করে বহু শ্রোতার। দীর্ঘ দু’দশকের বেশি সময় ধরে নিজের স্বতন্ত্র গায়কী, আবেগ আর মেলোডির মিশেলে তিনি আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলা গানের দুনিয়ায়। শুধু গান নয়, ব্যক্তিত্বেও বরাবরই শান্ত, মার্জিত ও সংবেদনশীল শুভমিতা।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে গানের বাইরের জীবনের এক ভিন্ন অধ্যায়ের কথা তুলে ধরেছেন এই শিল্পী। সেখানে উঠে এসেছে তাঁর বিবাহ-পরবর্তী জীবনের একটি ঘরোয়া গল্প, যার কেন্দ্রে রয়েছে রান্নাঘর। শুভমিতা জানান, বিয়ের পর শাশুড়ি মায়ের সংসারে তিনি খুব একটা রান্নার দায়িত্ব পাননি। কারণ, রান্নাঘরের পুরো কর্তৃত্বই ছিল শাশুড়ির হাতে।
গায়িকার কথায়, ইচ্ছে থাকলেও অনেক সময় তিনি কেবল পাশে দাঁড়িয়ে শাশুড়ির রান্না দেখেছেন। তবে এতে কোনও অভিমান বা অস্বস্তি ছিল না। বরং সেই সময়টাকে তিনি উপভোগ করেছেন। শাশুড়ির প্রতি শ্রদ্ধা আর পরিবারের নিয়ম মেনেই ধীরে ধীরে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। এই অভিজ্ঞতাই তাঁকে শিখিয়েছে, পরিবার মানে শুধু নিজের ইচ্ছা নয়, অন্যের জায়গাটাও সম্মান করা।
আরও পড়ুনঃ ‘কখনও বিপ্লবী তো কখনও ডাকাত, গল্পটা ঠিক কোন সময়ে?’ ‘আমরা কি সত্যিই ২০২৫-এই আছি?’ আন্ডারগ্রাউন্ড বিপ্লবীর পর, সাম্প্রতিক পর্বে ডাকা’তির দৃশ্য দেখিয়ে দর্শকদের সমালোচনার মুখে ‘চিরসখা’ ধারাবাহিক!
শাশুড়ি-বউমার সম্পর্ক নিয়ে যেখানে প্রায়ই নেতিবাচক গল্প শোনা যায়, সেখানে শুভমিতার এই অভিজ্ঞতা এক আলাদা ছবি তুলে ধরে। তাঁর জীবনের এই অধ্যায় প্রমাণ করে, সম্পর্ক যদি বোঝাপড়া আর শ্রদ্ধার উপর দাঁড়ায়, তবে সংসারের প্রতিটি মুহূর্তই হয়ে উঠতে পারে সুরেলা—ঠিক তাঁর গানের মতোই।






