প্রত্যেক পুরুষ বলেন তারা জীবনে মায়ের মতো নারী চান অর্থাৎ স্ত্রীকে মায়ের মতো দেখতে চান। তবে এই অভিনেতা কিন্তু জানিয়ে দিয়েছেন যে স্ত্রী মায়ের মতোই ভালো। এই অভিনেতা হলেন শুভঙ্কর সাহা। স্ত্রী বনানীর সঙ্গে ১০ বছরের বেশি সংসার করে ফেলেছেন।
এরকম তকমা সহজে পাওয়া যায় না। ১০ বছর কেনো, এখন ২ বছর পরেই অনেকে বলতে থাকে যে বিয়েটা পুরনো হয়ে গেছে সেই সময়ে দাঁড়িয়ে অভিনেতার এই কথা অনেক বড় ব্যাপার। তবে এটা কিন্তু এমনি এমনি নয়। এর পেছনে রয়েছে একটা বড় গল্প। জানতে চান সেটা?
বাংলা টেলিভিশনের এক সময়ের জনপ্রিয় এক তারকা শুভঙ্কর সাহা। ‘তুমি রবে নীরবে’, ‘জড়োয়ার ঝুমকো’র মতো একাধিক জনপ্রিয় বাংলা ধারাবাহিকে নায়কের ভূমিকায় দর্শকদের মন জয় করতে বেশি সময় লাগেনি তার। তবে জীবনের এক পর্যায়ে চরম হতাশা তাকে আঁকড়ে ধরেছিল। তার থেকে মাদকাসক্তি আরও বড় পিছুটান হয়ে দাঁড়ায় নায়কের জীবনে।
একের পর এক ধারাবাহিকে জনপ্রিয়তার সূত্রে অতি অল্প দিনের মধ্যেই দর্শকের অত্যন্ত কাছের মানুষ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু বেশিদিন এই সৌভাগ্য ধরে রাখতে পারেননি। কারণ একটা সময়ে তার ব্যক্তিগত জীবনের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ঝড়।প্রথমে দিদির আকস্মিক মৃত্যু। সেই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই তার জীবনের সেই সময়ের অবলম্বন মায়েরও মৃত্যু হয়। কাছের মানুষজনদের এভাবে হারিয়ে অবসাদে আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেতা। তার থেকেও ক্রমশ মাদকাসক্ত হয়ে ওঠেন।
এই নেশা অভিনেতাকে খারাপ অধ্যায়ের দিকে ঠেলে দেয়। নার্ভের সমস্যা শুরু হয়। মাকে হারানোর কয়েক মাসের মধ্যেই আবার বাবার মৃত্যু হয়। এক কথায় সর্বহারা এবং অনাথ হয়ে পড়েন তিনি। অভিনেতার ব্যক্তিগত পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যায়। চূড়ান্ত নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ক্রমশ মেজাজ হারিয়ে ফেলতেন, প্রিয়জনদের চিনতেও পারতেন না।
জীবনের এই চরম কঠিন অধ্যায় থেকে বেরিয়ে আসতে অভিনেতা পাশে পেয়েছিলেন একমাত্র নিজের স্ত্রীকে। একটা নয় একের পর এক সাতটা রিহ্যাবে ভর্তি করানো হয়েছিল নায়ক শুভঙ্করকে। তখন প্রিয়জনদের থেকে দূরে থাকলেও তাদের কাছে ফেরার বাসনা তীব্র হয়ে দেখা দেয় তার মধ্যে। চিকিৎসকদের প্রতিটা পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন শুভঙ্কর। সঙ্গে ছিল স্ত্রী ও তার নিজের মনের জোর। আজ তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে ফের সুখের সংসার শুরু করেছেন।
এমনকি এখন অভিনেতা নিজের মাকে হারালেও স্ত্রীর মধ্যে নিজের মাকে খুঁজে পেয়েছেন কারণ অভিনেতার স্ত্রী নিজের শাশুড়ির কাছ থেকে এমন অনেক কিছু শিখেছেন যা এখন নিজের স্বামীর জন্য করে দিতে চান তিনি। দুজন মিলে এটাই বার্তা দেন যে নিজের লোক কাছের লোক কখনোই তাদের ছেড়ে যায় না। কোন না কোন ভাবে তারা সঙ্গে থেকে যায়।