তিনি বাংলার উজ্জ্বলতম এক নাট্য ব্যক্তিত্ব। নাটকের রঙ্গমঞ্চ হোক কিংবা জীবনের দুই জায়গাতেই সমান তালে লড়াকু মানসিকতার ব্যাক্তি ইনি। বাংলা থিয়েটার তো অবশ্যই এমনকি টলিউডের ছোট পর্দা বড়পর্দা সব জায়গাতেই রয়েছে তাঁর যথেষ্ট প্রভাব। এই অভিনেতার জীবন শক্তি সকলকেই লড়তে শেখায়। শেখায় কিভাবে মারণ রোগকে হারিয়ে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসা যায়, নাম চন্দন সেন (Chandan Sen)।
শোনা যায়, এই অভিনেতা অভিনয়কে এতটাই ভালোবাসেন যে চিকিৎসায় কিছুটা গাফিলতি করতেও দ্বিধাবোধ করেননি তিনি। প্রথম যখন এই মারণ রোগ অর্থাৎ ক্যান্সার অভিনেতার শরীরে ধরা পড়ে তখন তাঁর একটা কথাই মনে হয়, “আমি কেন?” কিন্তু তারপরের ক্ষণেই বলেন, তাঁর এই দুঃসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ছিলেন ইন্ডাস্ট্রির অনেক বন্ধুই।
চন্দন সেনের চিকিৎসা চলাকালীন অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে বলেছেন, কেমো থেরাপি করার সময় কণ্ঠস্বর চলে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল প্রবল। তাই, সাহসিকতার সঙ্গে অভিনেতার চিকিৎসকদের জানিয়েছিলেন তিনি চান না থেরাপি নিতে, ডাক্তারদের কাছ থেকে জানতে চান হাতে আর কতদিন বাকি দিন বাকি। ১১ দিন ধরে একটা কাঠের উপর ডাক্তারেরা পরীক্ষা করে অভিনেতার ভয়েস বক্স বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেছিলেন। পরের ডাক্তার অবশ্যই এই পদ্ধতিতে সফলতা পেয়েছিলেন।
পরবর্তীকালে, অভিনেতা তাঁর চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অভিনেতা নিজের অসুস্থতার জীবনের কথা ভাগ করে নিয়ে বলেছেন, ৩৮ টি কেমো নেওয়ার পর তাঁর হাতে আর কোনো শিরা বাকি নেই। প্রচুর মানুষ এগিয়ে এসেছিলেন এই দাপুটে অভিনেতার চিকিৎসার জন্য। অভিনেতা সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, কৌশিক সেন থেকে শুরু করে শান্তিলাল, ব্রাত্য বসু সকলেই টানা এক সপ্তাহ নাটকের শো করে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন তাঁকে। অভিনেতার দাবি, তাঁর বন্ধুরা রীতিমতো কেউ বউকে লুকিয়ে বা কেউ বরকে লুকিয়ে তাঁকে টাকা ধার দিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ আঁখি আর দেবাকে একসঙ্গে দেখে নিল গৌরব! এবার খেলা ঘুরবে? ‘দুই শালিকে’ জমজমাট পর্ব
অভিনেতার জীবনে এই ঘটনা ঘটার পর মনে করেন, “আমি সারাটা জীবন যেভাবে কাটিয়েছি, আমি ঠিক করেছিলাম। তা না হলে এত মানুষ এগিয়ে আসতেন না, আমাকে সাহায্য করার জন্য”। এমনকি এও বলেন, তিনি কোনো বন্ধুর থেকে শুনতে পারবেন না যে তিনি একজন বিশ্বাসঘাতক। কঠিন সময়ে স্মৃতিচারণা করে অভিনেতা বলেন যারা তাঁর দুঃসময় পাশে দাঁড়িয়েছে, তাঁদের প্রতি দায়িত্ব আছে পাশে থাকার। অদম্য জেদ, মনোবল, মনের ইচ্ছে কখনোই থামতে দেয়নি বাংলার তাবড় অভিনেতা চন্দন সেনকে।