“আমাদের জীবন ময়ূরাক্ষী, সবসময় চিন্তা হয় ওকে নিয়ে!” “আমার নাতনি আলাদা, কিন্তু মনটা খুব ভালো!”— ‘স্পেশাল চাইল্ড’ নাতনিকে নিয়ে আবেগঘন স্বীকারোক্তি ফাল্গুনি চট্টোপাধ্যায়ের! কিছুদিন আগে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন আবির, এবার আবেগে ভেসে গেলেন দাদুও!

টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee) অভিনেতা হিসেবে যেমন দক্ষ, ঠিক তেমনই ছেলে এবং বাবা হিসেবেও নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন বারবার। আবিরের বাবা হলেন বর্ষিয়ান অভিনেতা ‘ফাল্গুনি চট্টোপাধ্যায়’ (Phalguni Chatterjee) এবং মা অভিনেত্রী রুমকি চট্টোপাধ্যায়। ইন্ডাস্ট্রিতে বহু দশক ধরেই কাজ করছেন আবিরের অভিভাবকরা। বর্তমানে আবিরের মাকে পর্দায় তেমন দেখা না গেলেও, বাবা বর্তমানে অভিনয় করছেন টেলিভিশনের পর্দায় ‘চিরসখা’ ধারাবাহিকে।

ছেলেকে নিয়ে ভীষণ গর্ববোধ করেন ফাল্গুনি বাবু। বহুবার তিনি জানিয়েছিলেন, ছেলের পরিচয়ে এখন ইন্ডাস্ট্রিতে তার নতুন করে জায়গা হয়েছে। তিনি বলেছিলেন এর আগে এক সাক্ষাৎকারে, “এতদিন সবাই বলতো আবির আমার ছেলে, কিন্তু এখন বলে যে আমি আবিরের বাবা। সত্যি বলতে খুব গর্ব হয়!” পর্দায় নিয়মিত ব্যস্ত থাকলেও, পরিবারকেই অগ্রাধিকার দেন আবির এবং ফাল্গুনি বাবু। প্রসঙ্গত, ইন্ডাস্ট্রিতে আসার আগেই আবির বিবাহ করেছিলেন নন্দিনীকে।

তাদের সুখী সংসারে রয়েছে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানও। প্রায়ই তাদের পরিবারের ছবি প্রকাশ্যে আসলেও আবিরের কন্যাকে কেউ চিনতেন না। তাকে সেই ছবিতে কখনওই দেখা যায়নি। তবে, গত বছর বসন্ত উৎসবের দিন আবির নিজেই প্রথম মেয়ে ময়ুরাক্ষীকে প্রকাশ্যে আনেন। এর আগে কেউ নাকি জানতেনই না, যে আবির এত বড় এক কন্যা সন্তানের বাবা। সেই ছবিতে অনেকে নিজের বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।

এরপর থেকেই চর্চায় আসতে শুরু করে আবিরের মেয়ে ময়ুরাক্ষী। প্রশ্ন ওঠে কেন আবির বা পরিবারের কেউ ময়ুরাক্ষীকে কোনও অনুষ্ঠানে নিয়ে যান না? এই প্রশ্নের উত্তরে কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে আবির আবেগপ্রবণ হয়ে জানিয়েছিলেন যে, তার মেয়ে একটি স্পেশাল চাইল্ড এবং তাঁর কোনও রকম অসুবিধা হক তিনি চান না। সেই জন্যই মূলত আলো থেকে দূরে রাখা। কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে গিয়েছিল অভিনেতার।

বাবা হিসেবে নিজেকে ব্যর্থ মনে করেন আবির। তার কথায়, মেয়েকে আর পাঁচটা বাচ্চাদের মতো স্বাভাবিক জীবন দিতে পারেননি। এমনকি বাবার ছবিও দেখে না ময়ুরাক্ষী, এই নিয়ে আক্ষেপ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন অভিনেতা। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই সমাজ মাধ্যমে অগণিত মানুষ পাশে দাঁড়িয়ে, আবিরকে সমবেদনা জানান। অনেকেই বলেন, বাবা হিসেবে তিনি সেরা, এতে কোনও দ্বিধা নেই। কিন্তু দাদু হিসেবে ফাল্গুনি বাবু কেমন?

আরও পড়ুনঃ “আজও মহালয়া থেকে বিসর্জন নতুন জামা পরি না, কষ্ট হয়।” “বারান্দায় বসে থাকি, ছোট ছোট সব প্রজাপতি দেখি আর হাসি!”— কৈশোরের ক্ষত ভুলতে পারেননি, তাই আজও পুজোর আনন্দ এড়িয়ে চলেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়! কী আছে তাঁর দুঃসহ স্মৃতিতে?

সম্প্রতি আবিরের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই, ফাল্গুনি বাবুও নিজের অবস্থার সম্পর্কে জানান ময়ুরাক্ষীকে নিয়ে। ফাল্গুনি বাবু বলেন, “শুটিং শেষ করেই বাড়ি গিয়ে আগে ওর খোঁজ করি। আমাদের জীবন ময়ুরাক্ষী! ওর ভালো থাকাটাই আমাদের কাছে সুখ। আমার নাতনি একটু ব্যতিক্রম সকলের থেকে, তাই ওকে নিয়ে চিন্তা হয় সব সময়। কিন্তু ও খুব ভালো মনের, সবাইকে আপন করে নিতে জানে এবং সবার কথাও শোনে।” উল্লেখ্য, প্রায়ই নাতনিকে নিয়ে দাদু-ঠাকুমাকে পার্কে যেতে হয় বলে জানান তিনি।