‘বয়স যে কেবল একটি সংখ্যা মাত্র’, এই বাক্যটা আমরা প্রায়শই শুনে থাকি, কিন্তু যখন বাস্তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটে যেখানে বয়সের অংকটা বারবার জ্বলজ্বল করে ওঠে এবং এই পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়ানোর সময় আসে? তখনই যেন সমাজের একটা বড় অংশ সেটাকে ভুলে যায়। গতকাল অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল দীর্ঘদিনের প্রেমিকার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে রাজনীতিবিদ ‘দিলীপ ঘোষ’ (Dilip Ghosh)। সদ্য বিবাহিত দিলীপ ঘোষ এবং ‘রিঙ্কু মজুমদার’ (Rinku Majumdar) এই মুহূর্তে যেন সেই কটাক্ষের শিকার!
বিয়ের পর থেকেই সমাজ মাধ্যমে নানা কুরুচিকর মন্তব্য, বয়স নিয়ে টিপ্পনী, এবং ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলানোর প্রবণতা যেন আকাশ ছুঁয়েছে। সেই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই আজ সরব হলেন অভিনেত্রী ‘দোলন রায়’ (Dolon Roy)। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই দোলন জানালেন, নতুন জীবন শুরু করার মুহূর্তটাকে যেন বিষিয়ে না তোলা হয়। প্রসঙ্গত বছর কয়েক আগে, ২৯২০ সালে তিনিও সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন দীপঙ্কর দে-র সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে। দীর্ঘ ২২ বছরের সম্পর্কের পর আইনি মতে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা।
তখন দীপঙ্করের বয়স ৭৫ এবং দোলনের ৪৯, বয়সে প্রায় ২৬ বছরের ফারাক। কিন্তু ভালোবাসা তো অঙ্কের হিসেব মানে না! সেটাই আবার মনে করিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। দোলনের পোস্টে স্পষ্ট বার্তা— “রাজনীতি কিংবা পেশা একদিকে, ব্যক্তিগত জীবন আরেকদিকে। একজন মানুষ যাকে ভালোবাসেন, তাঁর সঙ্গে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্তে বাইরের মানুষদের অনধিকার চর্চা কখনই কাম্য নয়। কাইন্ডলি কুৎসিত মন্তব্য করে নতুন দাম্পত্যের মুহূর্তটা বিষিয়ে দেবেন না।
যেমনটা আমাদের ক্ষেত্রে করেছিলেন, নিজেরাও ভালো থাকুন অন্যকেও তাদের জীবন নিয়ে ভালো থাকতে দিন।” এই অনুরোধেই যেন লুকিয়ে একটা প্রশ্ন, ভালোবাসা কি আদৌ যুক্তি চায়? না, ওটা তো অনুভবের বিষয়। এটা নিঃসন্দেহে একটা বার্তা দায়ে যে, আমরা সাধারণ মানুষ হিসেবে কীভাবে কোনও পাবলিক ফিগারের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এত সহজে বিচার করে ফেলি। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই সমালোচনা যেন আরও বেশি তীব্র হয়। বয়সের পার্থক্য, আগে কার সঙ্গে ছিলেন, এসব নিয়ে টানাটানি চলে দিনের পর দিন।
আরও পড়ুনঃ শুভর সঙ্গে বাড়ি ফিরল আদৃত! আয়ান চলে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছে মোহনা! তবে কি এবার খলনায়িকা হয়ে উঠবে মোহনা?
অথচ কেউ যেন ভাবেই না যে, প্রত্যেকটা সম্পর্কের পেছনে থাকে মানুষের আবেগ, ভালোবাসা, সাহস আর লড়াই। সর্বশেষে বলাই যায় প্রেমের সম্পর্কের, বৈবাহিক জীবনের সংজ্ঞা এক একজনের কাছে এক এক রকম। অন্যের জীবনে অহেতুক তীক্ষ্ণ মন্তব্য না করে, যদি আমরা একটু সহানুভূতিশীল হওয়া যায়, তাহলে হয়তো এই সমাজটা আরও কিছুটা উন্নত হবে। আমাদের তরফ থেকে নবদম্পতি দিলীপ ঘোষ এবং রিঙ্কু মজুমদারকে অনেক অভিনন্দন!