একটা নতুন প্রাণের আগমনে বদলে যায় অনেক কিছু। পরিবারে জন্ম নেয় নতুন হাসি, নতুন উন্মাদনা। কিন্তু কিছু কিছু দূরত্ব এমনই হয়, যাকে একটুকরো সুখবরও এক লাফে মুছে ফেলতে পারে না। টেলিভিশনের পরিচিত মুখ অহনা দত্ত মা হয়েছেন। অথচ সেই খবরে না রয়েছে মাতৃস্নেহের উচ্ছ্বাস, না আছে একসাথে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার মুহূর্ত।
রূপটান শিল্পী দীপঙ্কর রায়ের সঙ্গে প্রেম করছিলেন অহনা। কিন্তু তাতে একেবারেই সায় ছিল না তাঁর মা চাঁদনী গঙ্গোপাধ্যায়ের। ছোট থেকেই একাই মেয়েকে বড় করেছেন তিনি। স্বামীর অভাবের পর মেয়েই ছিল তাঁর পৃথিবী। কিন্তু ১৮ বছরের অহনার প্রেমকে মেনে নিতে পারেননি তিনি। মেয়ের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি মা। সময় গড়িয়েছে, দূরত্ব বেড়েছে। আজ অহনা দীপঙ্করের স্ত্রী, আর মায়ের জীবন থেকে যেন একেবারেই বিচ্ছিন্ন।
২৮ জুলাই জন্ম নিয়েছে অহনা ও দীপঙ্করের কন্যা সন্তান। কিন্তু এত বড় খবরে যাঁর সবচেয়ে খুশি হওয়ার কথা ছিল, তিনি জানতেনই না কিছুই। যখন আনন্দবাজার ডট কমের তরফে ফোন করে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়, তখনই প্রথম জানতে পারেন তিনি নাতনি জন্মেছে! চমকে উঠেছিলেন প্রথমে, বিশ্বাসই করতে পারেননি। তার পর যেন নিজের আবেগকে আর সামলে রাখতে পারেননি।
কান্নায় ভেঙে পড়ে চাঁদনী বললেন, “সব শিশুই ভাল। সবাই যেন সুস্থ থাকে। আমার কোল শূন্য হয়ে গিয়েছে। স্বামীর সাহায্য ছাড়া অহনাকে বড় করেছি। কিন্তু ভাবিনি এমন দিন দেখতে হবে।” চোখের জল মুছতে মুছতে আরও বলেন, “প্রার্থনা করি অহনা অনেক টাকা রোজগার করুক। ওই রূপটান শিল্পীকে বাড়ি, গাড়ি কিনে দিক। কারণ, যত দিন ওর কাছে টাকা থাকবে, তত দিনই ও ভালো থাকবে।” কথায় ক্ষোভ স্পষ্ট, কিন্তু তার মধ্যে অভিমানের সুরটাও যেন লুকোনো নেই।
আরও পড়ুনঃ “সংলাপে যদি কটুভাষা থাকে, মুখে আনতেই মন চায় না!” “সারাদিন মনের ভিতর খচখচ করে, সকলের কাছে ক্ষমাও চাই!”— দৃঢ়চরিত্রে অভিনয় করলেও বাস্তবে ভিন্ন স্বভাবের মালবিকা সেন! পর্দার নিষ্ঠুর চরিত্র তাঁর পছন্দ নয়, নিজের মুখেই জানালেন ব্যক্তিগত অনুভবের কথা!
অন্যদিকে নতুন কন্যাসন্তান পেয়ে আনন্দে আত্মহারা দীপঙ্কর রায়। সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “কতটা উত্তেজিত আমি বলে বোঝাতে পারব না। মা আর মেয়ে—দু’জনেই ভাল আছে। নামও ঠিক করেছি, তবে এখনই বলব না।” অর্থাৎ নতুন অধ্যায় শুরু হলেও পুরনো সম্পর্কের ছায়া এখনও কাটেনি। একদিকে অভিমানী মা, অন্যদিকে উচ্ছ্বসিত নতুন বাবা-মা। ছোট্ট একটি মুখ কি পারবে এই দূরত্ব মুছে দিতে? সময়ই দেবে সেই উত্তর।