“মীরা ভালবাসার মানুষকে বেছে নিলে, আমি তাঁর মতো আটকাব না!” “কন্যাসন্তানের মা আমিও…ওর ঠিক-ভুলের দায়িত্ব আমার, সম্পর্ক ভুলে পালাবো না!”— মা চাঁদনীর হয়ে নিন্দুকদের কটাক্ষের উত্তরে মনের কথা উগরে দিলেন অভিনেত্রী অহনা দত্ত!

টেলিপাড়ার পরিচিত মুখ ‘অহনা দত্ত’ (Ahona Dutta), যাকে দর্শক ‘অনুরাগের ছোঁয়া’-তে খলনায়িকা মিশকার চরিত্রে দেখেছেন, সম্প্রতি জীবনে বড় পরিবর্তন এসেছে তার। জুলাই মাসের শেষে মা হয়েছেন তিনি। কন্যাসন্তান এসেছে তাঁর ঘরে, নাম রাখা হয়েছে মীরা। নামটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক আবেগঘন স্মৃতি। কারণ অহনার স্বামী ‘দীপঙ্কর রায়ের’ (Dipankar Ray) প্রয়াত মায়ের নামেই নবজাতিকার নামকরণ করা হয়েছে। প্রয়াত শাশুড়ির স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই তাঁদের এই সিদ্ধান্ত।

তবে, মাত্র ২১ বছর বয়সে মা হওয়া সহজ সিদ্ধান্ত ছিল না অহনার জন্য। কিন্তু গর্ভাবস্থার প্রতিটি মুহূর্তকে সমাজ মাধ্যমে খোলামেলাভাবে ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি। কখনও সমুদ্রতটে দাঁড়িয়ে নিজের স্ফীত উদরের ছবি পোস্ট করেছেন, কখনও বা স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন ভক্তদের সঙ্গে। সেই ছবি ও ভিডিও মুহূর্তে ভাইরাল হয়েছে, আর ভক্তরা শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন দম্পতিকে। তবে মাতৃত্বের আনন্দের পাশাপাশি অহনাকে সামলাতে হচ্ছে একাধিক কটাক্ষও।

অহনার সঙ্গে মা চাঁদনী গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পর্ক বহুদিন ধরেই তিক্ত, আর সেই সূত্র ধরেই সমাজ মাধ্যমে কেউ কেউ তাঁকে বিদ্রুপ করতেও ছাড়েনি। সমাজ মাধ্যমে অনেকেই লিখেছেন, “অহনা যেভাবে নিজের মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে দীপঙ্করের সঙ্গে সংসার গড়েছেন, ভবিষ্যতে তাঁর মেয়েও একদিন তেমনটা করবে। তখন তিনি বুঝতে পারবেন!” কেউ আবার সরাসরি বলেছেন, “ঈশ্বর তাঁকে কন্যা দিয়েছেন যাতে তিনিও সেই কষ্ট বুঝতে পারেন, যেটা নিজেই মকে দিয়েছিলেন একদিন।” অন্যজনের মতে, “এই মেয়েও মায়ের মতোই হবে, একইভাবে পালাবে!”

এমন একের পর এক কটু মন্তব্য পড়ে চুপ থাকেননি অহনা। এদিন এক পোস্টে স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের ভবিষ্যতের দায়িত্ব একমাত্র তিনিই আর দীপঙ্কর নেবেন। অন্য কেউ নয়। একই সঙ্গে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে লিখেছেন, যদি তাঁর মেয়ে ভালবাসার মানুষের সঙ্গে কোথাও থাকতে চায়, তবে তিনি কখনও ফোন কেটে দেবেন না, বা সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলবেন না। বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার আগে বলবেন না গলার সোনার হারটা রেখে যেতে। বরং আগেই সতর্ক করে দেবেন, যাতে মেয়ের কোনও ক্ষতি না হয়।

আরও পড়ুনঃ “শিক্ষায় দুর্নীতি, আর.জি.কর নিয়ে বললে বুঝতাম দম আছে!” “গানের মঞ্চেও রাজনীতির ছিঃ! এভাবে প্রতিবাদী শিল্পী হয় না!”— ‘হুলি-গান-ইজম’-এর কনসার্টে একের পর এক দিলীপ-কুণাল-শতরূপ ঘোষকে নিয়ে খোঁচা! অনির্বাণের ব্যঙ্গাত্মক গান ডেকে আনল ক’টাক্ষের ঝড়!

অহনার কথায়, তিনি চান না তাঁর সন্তানের সম্পর্কের মধ্যে কোনও বাধা আসুক। পরিবার বা কাছের মানুষের সঙ্গে মেয়েকে আলাদা করে রাখার মানসিকতা তাঁর নেই। উল্লেখ্য, চাঁদনী নাকি অহনার বিয়েটা মানতে পারেননি এবং ফলস্বরূপ মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। এবার সমাজ মাধ্যমের কটাক্ষে আঘাত পেলেও স্পষ্ট জানিয়েছেন, মাতৃত্ব তাঁকে অনেক শক্ত করেছে। তাই আজ অন্যের কথায় ভেঙে পড়ার মানুষ নন তিনি। নিজের মেয়ে মীরার জন্যই সবকিছু নতুনভাবে শুরু করার অঙ্গীকার করেছেন মা অহনা।