টলিউডের অভিজ্ঞ অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে (Joy Banarjee Death) শোকের আবহ এখনও কাটেনি। মাত্র কয়েক দিন আগেই, ২৫ অগস্টে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে এভাবেই নিঃশব্দে চলে গেলেন তিনি। মৃ’ত্যুসংবাদ পৌঁছতেই ভেঙে পড়েছিলেন প্রথম স্ত্রী ‘অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়’ (Ananya Banarjee)। প্রথম প্রেম, প্রথম পুরুষ সঙ্গ আর স্বামীকে হারানোর যন্ত্রণা সহজে সামলানো যায় না, সেই আক্ষেপই বারবার ফুটে উঠেছে অনন্যার কণ্ঠে।
অভিনেতার চলে যাওয়া যেন তাঁকে শূন্যতার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। অনন্যা এক সাক্ষাৎকারে অকপটেই বলেছিলেন, জয় তাঁর জীবনের প্রথম পুরুষ। ভুলে যাওয়া বা মুছে ফেলার মতো নয় সেই সম্পর্ক। সেই কারণেই অভিনেতার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিনও তিনি গিয়েছিলেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। একদিকে ভক্ত আর সহকর্মীদের ভিড়, অন্যদিকে অনন্যার চোখে বারবার ভেসে উঠছিল জয়ের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া জীবনের নানা মুহূর্ত।
তবে এদিন অনন্যার মনে সবচেয়ে বেশি যে চিন্তায় পড়তে দেখা গেল, সেটা জয়ের মায়ের জন্য। বৃদ্ধা মা এত বছর ধরে ছেলেকে নিজের চোখের সামনে মানুষ হতে দেখেছেন। কিন্তু শেষ সময়ে সেই ছেলেকেই চন্দনের সাজে দেখতে চাননি তিনি। অনন্যা বলেন, “মায়ের বয়স অনেক হয়েছে, সেই দুঃখ সহ্য করার ক্ষমতা আর ছিল না তাঁর। তাই শেষকৃত্যে না থাকলেও শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে এসে, চোখের জলেই ছেলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তিনি।”
শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সেরে ফেরার পথে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি অনন্যাও। তিনি বলেন, ” মনে হচ্ছে, জীবনের এই পারাপারে যেন দু’জন দুই পারে দাঁড়িয়ে আছে, একজন চলে গেছে আরও একজন বেঁচে থেকে কেবল দূর থেকে তাকিয়ে রয়েছে।” সেই আবেগই ভাসিয়ে নিয়ে গেল তাঁকে এক পুরনো গানের কথায়। থমকে থমকে তিনি বললেন, জীবন থেমে থাকে না ঠিকই, কিন্তু যন্ত্রণা আর ক্ষত বারবার মনে করিয়ে দেয় প্রিয়জন হারানোর শূন্যতা।\
আরও পড়ুনঃ *”আমি ‘ছাউ’ শুনে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললাম!” “বাংলা সিনেমা করে রোজগার, অথচ বাংলা বলতে সমস্যা!” “ছৌ বলতে কি মান-সম্মান যাচ্ছে? অশিক্ষিত কোথাকার, বেশি ন্যাকা!”— ‘ছৌ’-নাচকে ‘ছাউ’ উচ্চারণ বিতর্কে ট্রোলের মুখে পড়লেন ইধিকা পাল!
অনন্যার মতে, এটা যেন শুধুই তাঁর প্রথম ভালোবাসা বা একজন অভিনেতার মৃ’ত্যু নয়। যেন বহু স্মৃতি, সম্পর্ক আর ভালোবাসার ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া। জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃ’ত্যু তাই অনন্যার কাছে শুধু প্রাক্তন স্বামীকে হারানো নয়, বরং জীবনের অমূল্য অধ্যায়ের অবসান। সময় হয়তো ধীরে ধীরে ক্ষত শুকিয়ে দেবে, কিন্তু সেই দাগ সারাজীবন রয়ে যাবে মনের গভীরে। আমাদের তরফ থেকেও বিনম্র শ্রদ্ধা, প্রয়াত অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে!