টলিউডে এখন নতুন ছবির ঘোষণার চেয়ে বড় বিতর্ক পরিচালক ও অভিনেতা ‘অরিন্দম শীল’ (Arindam Sil) এর বাছাই করা কাস্টিং নিয়ে। যিনি নিজেই আজ পর্যন্ত যত না নাম কুড়িয়েছেন থ্রিলার বানিয়ে, তার চেয়ে বেশি সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছেন নারীদের প্রতি তাঁর অশালীন আচরণ ও নানা অভিযোগের জন্য। এবার সেই তিনিই হাত ধরলেন রাজনীতির বিতর্ক-প্রিয় মুখ ‘কুণাল ঘোষ’ (Kunal Ghosh) এর, যাঁর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপ থেকে শুরু করে একাধিক আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে! যার রেশ আজও শেষ হয়নি।
অরিন্দম শীল জানিয়েছেন, জুলাই মাস থেকে শুরু হতে চলেছে তাঁর নতুন ছবি ‘কর্পূর’ (Karpur) -এর শ্যুটিং। যদিও ছবির বিষয়বস্তু যত না আলোচনায়, তার চেয়ে অনেক বেশি আলোচিত হচ্ছে কুণাল ঘোষকে নিয়ে। কারণ এই প্রথম বার বড় পর্দায় পা রাখতে চলেছেন তৃণমূলের একসময়ের ‘বিতর্কিত’ মুখপাত্র। তিনি যে চরিত্রে অভিনয় করছেন, তা নিয়েও রয়েছে নানা কানাঘুষো। সূত্র বলছে, প্রয়াত বাম নেতা অনিল বিশ্বাসের ছায়া পাওয়া যাবে সেই চরিত্রে, এছাড়াও রয়েছেন বেশ কিছু রাজনৈতিক মুখও।
আর মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিও ছবিতে রাজনীতির প্রেক্ষাপটকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। ছবির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নব্বইয়ের দশকের একটি বিতর্কিত ঘটনা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন সহকারী নিয়ামক মনীষা মুখোপাধ্যায়ের রহস্যজনক অন্তর্ধান। লেখিকা দীপান্বিতা রায়ের লেখা ‘অন্তর্ধানের নেপথ্যে’ নামক উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে এই ছবি। তবে একদিকে যখন দুর্নীতির কথা বলার চেষ্টা, তখনই দর্শকের মনে প্রশ্ন, এই বিতর্কিত চরিত্রদের দিয়ে তৈরি ছবি আদৌ কি কোনও সামাজিক বার্তা দিতে পারবে?
যদিও অরিন্দমের বক্তব্য, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থাকলেও ছবির সঙ্গে কোনও বাস্তব রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই। কিন্তু তিনি নিজেই এত দিন ধরে নানা বিতর্কের মধ্যে থেকেছেন যে, দর্শকের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। আবার সেই বিতর্ককেই যেন দ্বিগুণ করে দিয়েছেন কুণাল ঘোষকে মুখ্য চরিত্রে এনে। এমন একজন মানুষ যিনি নিজের রাজনৈতিক জীবনে সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন অভিযোগ ও নাটক দিয়ে, তাঁকে নিয়ে যদি সত্য ঘটনা অবলম্বনে ছবি বানানো হয়, তাহলে সত্যিই কি তা ‘নিরপেক্ষ’ থাকে?
আরও পড়ুনঃ “চুমু আমাদের ভালোবাসার ভাষা, যৌ’নতায় নয়। বাচ্চার সামনেও রাজের ঠোঁটে চুমু দিই, যাতে ওরা স্বাভাবিক ভাবে নেয়”— রাজ-শুভশ্রীর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে শুভশ্রীর ব্যক্তিগত মন্তব্যে তুঙ্গে সমালোচনা!
পরিচালক অরিন্দমের কিন্তু মত আলাদা। তিনি বলেন, “আমি সবাইকে প্রমাণ করে দেব, কুণাল বাবুর মধ্যে যে একজন অভিনেতা আছে।” সব মিলিয়ে, ‘কর্পূর’ এখন শুধু আর একটি ছবি নয়। এটি হয়ে উঠেছে বিতর্ক, বিদ্রুপ আর গালগল্পের উৎস। পর্দায় কী ঘটবে তা সময় বলবে, কিন্তু পর্দার বাইরের চরিত্রের ভার এতটাই ভারী যে, গল্প চাপা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আপাতত দেখার যে পর্দায় কতটা প্রমাণ করতে পারেন নিজেকে কুণাল বাবু।