একটা সময় সন্ধ্যা হলেই স্টার জলসার পর্দায় ‘জবা’কে দেখবার জন্য অপেক্ষায় থাকত সিরিয়ালপ্রেমী বাঙালি। ‘কে আপন কে পর’ ধারাবাহিকে ঘরের পরিচারিকা থেকে বিচারপতি হয়ে উঠা জবার কীর্তি নিয়ে ট্রোলিং যেমন কম হয়নি, তেমনই এই সিরিয়ালের জনপ্রিয়তা নিয়েও কোনও দ্বিমত পোষণ করা যাবে না। এখন সেই ‘জবা’ই হয়ে উঠেছে ‘পর্ণা’। যাঁর আসল পরিচয় পল্লবী শর্মা।
‘নিম ফুলের মধু’ ধারাবাহিকে নায়িকা এখন পল্লবী (পর্ণা)। ধারাবাহিকে দেখানো হচ্ছে, বাবা-মা’র আদুরে মেয়ে পর্ণা। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে যৌথ পরিবারে গিয়ে প্রতিদিন নতুন লড়াইয়ের মুখোমুখি হচ্ছে পর্ণা। এখন এটাই দেখার বিষয়, সব বাঁধা সামলে কিভাবে শাশুড়ি সহ গোটা শ্বশুরবাড়িকে আপন করে নেবে! কিন্তু আপনারা কি জানেন? পর্ণার কাহিনীর সেই লড়াই-এর থেকেও বাস্তবে পল্লবীর লড়াইটা আরও কঠিন! ছোটবেলায় বাবা-মা’কে হারিয়েছেন পল্লবী। আর তাপর থেকেই পল্লবীর জীবনের লড়াইটা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছিল।
উল্লেখ্য, ক্লাস টু-থ্রি’তে পড়বার সময় মা’কে হারান পল্লবী। বাবা কাজে ব্যস্ত থাকায় খুব বেশি তাঁর সান্নিধ্য পাননি পল্লবী। পিসির বাড়িতেই মানুষ তিনি। ফের মধ্যমিক পরীক্ষার আগের দিন হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় পল্লবীর বাবার। একা হয়ে পড়েন তিনি। ছোটবেলার এই স্ট্রাগলের কথা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি তুলে ধরেন তিনি।
অভিনেত্রী জানালেন, “দেখতাম, সবার মা-বাবা পরীক্ষার সময় ডাবের জল খাওয়াচ্ছে, খাবার খাওয়াচ্ছে। আমি তখন হবিষ্যি খেতাম। সে এক অদ্ভুত সময় গিয়েছে।” ২০১২, দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ‘নদের নিমাই’ ধারাবাহিকের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ আসে তাঁর। তারপর কলেজে পড়ার সময় ‘কে আপন কে পর’ ধারাবািহিকে কাজের সুযোগ আসে। আর তারপরই অভিনেত্রীর কেরিয়ারের মোড় ঘুরে যায়। তাঁর অভিনয়ের গুনে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।
অভিভাবক হিসাবে পিসি সব দায়িত্ব অভিনেত্রীর পালন করলেও বাবা-মা’র জায়গাটা খালিই রয়ে গিয়েছে। তিনি। এও জানান, দু-তিন বছর আগে তাঁর পিসিও মারা গিয়েছে। নিজের ফ্ল্যাটে একাই নিজের জীবনটা সাজিয়ে নিয়েছেন পল্লবী। জীবনসঙ্গীর কথা উঠলে তিনি বলেন, ‘আমি সিঙ্গল। চট করে আমি প্রেমে পড়ি না’।
তবে তিনি এও জানান, আগে একজনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তাঁর। তবে সেটা ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। কেরিয়ারের শুরুর দিকেই ভুল মানুষের প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। তিনি এখন নিজের বাবার মতো একজন জীবন সঙ্গী খুঁজছেন। মনের মানুষের অপেক্ষায় এখন তিনি সাথে কেরিয়ারে ফোকাস করাই তাঁর লক্ষ্য।