টলিউডে (Tollywood) এখন নতুন ট্রেন্ড তৈরি হয়েছে, ছবি মুক্তির আগে অভিনেতারা ঘুরে ঘুরে প্রোমোশন করছেন। কখনও জেলায় গিয়ে নাচ, কখনও রাস্তায় নেমে ভিড়ের মধ্যে উদ্ভট সব কাজ করে ছবি প্রচার। কিছুদিন আগে কাঞ্চনা মৈত্রকে শিয়ালদহ স্টেশনে ঝামেলা অশান্তি করতে দেখা গিয়েছিল, এমনকি সম্প্রতি দেবকেও (Dev) দেখা গেল জাল ফেলে মাছ ধরছেন! এই সবকিছুই নাকি ‘ক্রিয়েটিভ প্রভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়’ (Bhaskar Banerjee)।মোশন’-এর অঙ্গ। এই প্রবণতাকে একেবারেই ভালো চোখে দেখছেন না অভিনেতা ‘
তিনি মনে করছেন, এর মাধ্যমে শিল্পীরা তাঁদের শিল্পের মর্যাদা হারাচ্ছেন। দর্শককে সিনেমা হলে আনতে গিয়ে এতটা লোকদেখানো প্রয়োজন কিনা, সেই প্রশ্নই তুলেছেন তিনি। একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে ভাস্কর এদিন নিজের অভিজ্ঞতা টেনে এনেছেন। ছোটবেলার কথা টেনে তিনি বলেন, সেই সময় মানুষ কতটা সিনেমার জন্য কতটা উৎসাহী থাকতেন। কোন হলে কোন ছবি আসছে সব মুখস্থ রাখতেন সবাই। এই স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেছেন, তখন দর্শককে প্রলুব্ধ করার দরকার পড়ত না। বড়পর্দার অভিনেতারা ছিলেন স্বপ্নের মানুষ, যাঁদের ছোঁয়া পাওয়া যেত না।
সেই আকর্ষণেই মানুষ হলে ছুটে যেত। আজকের মতো তারকাদের দর্শকের পা ধরে অনুরোধ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। ভাস্করের মতে, এখনকার প্রচারকে অনেকটা ‘ভিক্ষা চাওয়া’র মতো মনে হচ্ছে। তিনি সোজাসুজি লিখেছেন, শিল্পীরা যেন দর্শকের কাছে হাত পাতছেন—”ছবিটা দেখুন” বলে। এমনকি তিনি অভিযোগ করেছেন, এইসব প্রোমোশনে অভিনেতারা এমনসব কাজ করছেন যা মর্যাদাহানিকর। কেউ রাস্তায় নাচছেন, কেউ অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটাচ্ছেন, যেন ছবির চেয়ে প্রচারটাই বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পোস্টের শেষে ভাস্কর স্পষ্ট বলেছেন, ভালো ছবি বানালেই মানুষ হলে আসবে।
শিল্পের প্রতি আস্থা রাখার পরিবর্তে লোকদেখানো প্রোমোশনে ভরসা করা শিল্পীদের প্রতি তাঁর ক্ষোভ প্রবল। তিনি মনে করছেন, এভাবে প্রচার না করে কনটেন্টের উপর জোর দেওয়াই উচিত। বড়পর্দার অভিনেতারা যদি তাঁদের কাজের মান ধরে রাখেন, তবে দর্শককে টানতে আলাদা প্রদর্শনীর প্রয়োজন পড়বে না বলেই তাঁর দাবি। অভিনেতার নিজের কথায়, “এখন একটা নতুন ট্রেনড এসেছে !! যার নাম “প্রোমোসান”…যেখানে ছবি আসার আগে সেই ছবির সব অভিনেতারা জনগণের কাছে গিয়ে ভিক্ষা চইছে ( হ্যাঁ…ভিক্ষাই বলছি )।
’যে ছবিটা দেখুন’ ….আর কিছু অশিক্ষিত ( হ্যাঁ…অশিক্ষিত ই বলছি ) মানুষও সেই সব দেখছে …কেউ ছাউ (!) নাচছে…কেউ ঘোড়ার পিঠে চোড়ছে…কেউ আবার ” যা নয় তাই ” করছে । সত্যিই লজ্জা করে ভাবতে যে একটা চলচিত্র চালাতে… দর্শক আনতে… এইভাবে তাদের পায়ে পড়তে হবে । আগে তো এটা করতে হতো না !!! ছবি চলতো নিজগুনে । মানুষ ভালোবেসে ছবি দেখতো …। ভাবতে ঘেন্না করে বড় বড় ( তথাকথিত) শিল্পীরা এই জোয়ার গা ভাসাছেন …!!!” তাঁর এই পোস্টকে ঘিরে ইতিমধ্যেই সমাজ মাধ্যমে নানান আলোচনাও শুরু হয়েছে।
অনেকেই সমর্থন জানিয়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন যে তিনি সাহস করে সত্যি কথাই বলেছেন। বড়পর্দার নামজাদা শিল্পীদের এভাবে জনতার কাছে গিয়ে নিজেদের ছবি বিক্রি করতে দেখা অনেকের কাছেই অস্বস্তিকর। ভাস্করের বক্তব্যের জোরেই সেই অস্বস্তির কথাই অনেকেই মুখ খুলে বলছেন। অনেকেই আবার তাঁর বিপক্ষে গিয়ে বলেছেন, যুগে সাথে পল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতেই হয়। দর্শকদের কাছে অভিনেতাকে এখন আগে নিজেকে প্রমাণ করতেই হয়। আপনাদের কী মতামত?
“আমার অভিনীত নাটক-সিনেমা সরকারি হলে জায়গা পাচ্ছে না, পুরোটাই কি কাকতালীয়?”— প্রশ্ন তুলে সমাজ মাধ্যমে বি’স্ফোরক অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী! “আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদের পর থেকে একঘরে করে রাখা হচ্ছে,” দাবি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রীর!
আরও পড়ুনঃ “আমার অভিনীত নাটক-সিনেমা সরকারি হলে জায়গা পাচ্ছে না, পুরোটাই কি কাকতালীয়?”— প্রশ্ন তুলে সমাজ মাধ্যমে বি’স্ফোরক অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী! “আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদের পর থেকে একঘরে করে রাখা হচ্ছে,” দাবি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রীর!
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।