Rupankar Bagchi: মুম্বইতে তীব্র অপমানিত “হু ইজ কেকে” বলা রূপঙ্কর! ৮ ঘন্টা বসিয়ে রেখে গালাগালি করলেন জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক
আমাদের দেশ ভারতবর্ষের বুকে যাঁর গাওয়া গানে আবেগের বিস্ফোরণ হত তিনি হলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে(KK)। কেকে’র আকস্মিক মৃত্যুতে গতবছর স্তম্ভিত, বিস্মিত হয়ে পড়ে দেশবাসী। যাঁর গানে মুক্তির পথ খুঁজত বহু মানুষ সেই মানুষটাই গতবছর পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। গতবছর ৩১শে মে, উল্টোডাঙার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে কলকাতায় পা রাখেন কেকে। অনুষ্ঠান ছিল নজরুল মঞ্চে। এটাই ছিল তাঁর শেষ স্টেজ পারফরম্যন্স।কেকের গানে শেষবারের মতো উন্মাদনা দেখায় শহর কলকাতা(Kolkata)। আর এই শহরের বুকেই চিরকালের মতো থেমে যায় গায়কের(Singer) সুরের ঝঙ্কার।
কেকের শো’কে ঘিরে কলকাতাবাসীর উন্মাদনা ছিল তীব্র। আর তা বোধহয় খুব একটা ভালো চোখে দেখেননি বাংলার জনপ্রিয় গায়ক রূপঙ্কর বাগচী। কেকের জনপ্রিয়তা, তাঁকে ঘিরে উন্মাদনা হয়ত কোথাও হিংসার সঞ্চার করেছিল তাঁর মনে। এই উন্মাদনা দেখে সোশ্যাল মাধ্যমে মুখ খুলে ছিলেন তিনি। বলেছিলেন, KK, KK, KK who is K K man? ওঁর গান শুনে আমি অনুভব করলাম আমরা (রূপঙ্কর, মনোময়, ইমন, সোমলতা, রূপম, অনুপম) মি. কেকে-এর থেকে ঢের ভালো সিঙ্গার। তাহলে আমাদের নিয়ে সেই উন্মাদনা আপনাদের মধ্যে দেখা যায় না কেন? কতদিন আর বম্বের পিছনে পড়ে থাকবেন? বাঙালি হন!
এই বিদ্রুপ আর কেকের মৃত্যুর মধ্যে সময়ের পার্থক্য ছিল কয়েক ঘণ্টা মাত্র। যথারীতি রূপঙ্করের বিরুদ্ধে ঘৃতাহুতির কাজ করে কেকের মৃত্যু। তাঁর এই বিদ্রুপের কড়া জবাব দিয়েছিল বাঙালি।রূপঙ্করের বিরুদ্ধে রীতিমতো রাগত জনতা তাঁকে কটাকে কটাক্ষে বিদ্ধ করে তোলে। তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করেন সহকর্মীরাও, তীব্র বিতর্ককে চাপা দিতে প্রেস কনফারেন্স করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে নেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচী।পরে ধীরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্তিমিত হয়ে পড়ে বিতর্ক।
তবে সম্প্রতি দর্শক-শ্রোতাদের কাছে প্রকাশ্যে এসেছে রূপঙ্করের একটি অজানা তথ্য। অনেকেরই হয়ত না জানার কথা কিন্তু একবার মুম্বইতে গিয়ে চরম অপমানের শিকার হয়েছিলেন তিনি। শিলাজিত্ সঞ্চালিত একটি টক শো-তে এসে নিজের অতীতের সেই অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নেন রূপঙ্কর। ওই শো শুরু হওয়ার পর শিলাজিত্ নিজের চেনা মেজাজে বলে ওঠেন, ‘রূপঙ্করকে অনেকেই গালাগাল দেয়। ফেসবুক লাইভ করলে গালাগাল দেয়.. মুম্বইয়ের এক পরিচিত সঙ্গীত পরিচালকের বাড়িতে গিয়ে আট ঘন্টা বসেছিল, সেইজন্যও গালাগাল দেয়। কী হয়েছিল কেসটা?’
শিলাজিত্-এর কাছে এই প্রশ্ন শুনে রূপঙ্কর বলেন, ‘শান্তনুদা (মৈত্র) ফোনে আলাপ করিয়ে দিয়েছিল মন্টি (শর্মা)-র সঙ্গে। এরপর আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম মুম্বইতে, ওঁর স্টুডিওতে। একটা-দু’টো গান শোনানো হল, এরপর জ্যামিং হল। মন্টি আমাকে বলল পাঁচ মিনিট অপেক্ষা কর, আমি আসছি। এই বলে আর আসেনা। পাঁচ মিনিট পাঁচ ঘন্টা হয়ে কেটে গেল। আমি উঠছি, বসছি, বাইরে যাচ্ছি, সিগারেট খাচ্ছি, এইভাবে অনেকক্ষণ কেটে যাওয়ার পর রিসেপশানিস্ট বলল মন্টি স্যার আজ আর আসবেন না।’
অপমানের কিন্তু এখানেই শেষ নয়। রূপঙ্কর বাগচি জানিয়েছেন এরপর, সন্ধ্যেবেলা তাঁকে ফোন করে রীতিমতো গালাগালি করেন ‘ব্ল্যাক’, ‘সাওয়ারিয়া’র মিউজিক ডিরেক্টর। তিনি বলেন, ‘আমাকে মন্টি রাতে ফোন করে পাঞ্জাবিতে খিস্তি করছে। আমাকে বলে, তুই অপেক্ষা করিসনি কেন? আমি আসতাম। তুই চলে গেছিস, আমি আর তোকে কাজ দেব না। আমিও বলে দিলাম– দরকার নেই তোর কাজের। সেইসঙ্গে আমিও দু-চারটে খিস্তি বাংলাতে শুনিয়ে দিয়েছি।’ এই শুনে শিলাজিৎ বলে ওঠেন ঠিক করেছিস!