থিয়েটার থেকে অভিনয়ের যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ছোট পর্দা ও বড় পর্দার পরিচিত মুখ অভিনেতা চন্দন সেন ( Chandan Sen )। ইষ্টিকুটুম, খড়কুটো জল থৈথৈ ভালোবাসা থেকে শুরু করে বড় পর্দার আবার আসবো ফিরে থেকে ব্যোমকেশ বক্সী, মাটি ইত্যাদি ছবিতে দক্ষতার সাথে অভিনয় করে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। অভিনেতার কর্মজীবন যতটা উজ্জ্বল তার বাস্তব জীবনে ঠিক ততখানি লড়াই রয়েছে। তবে অনেকেই জানেন না চন্দন সেনের স্ত্রী কীভাবে তার জীবনের লড়াইয়ে তার পাশে থেকেছেন।
মারণ রোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত চন্দন সেন। ১৪ বছর ধরে এই রোগের সাথে লড়াই করছেন তিনি, অভিনেতার জীবনী অবলম্বনে ইতিমধ্যেই কন্ঠ নামে একটি সিনেমা তৈরি হয়ে গেছে। জীবনশক্তিতে ভরপুর চন্দন সেনের এই লড়াইয়ের শরিক হয়েছেন তার সহকর্মী থেকে বন্ধু-বান্ধব সকলেই। অভিনেতা একবার জানিয়েছিলেন টলিউডের চেনা পরিচিত বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে কয়েকজন সবজি বিক্রেতা পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য তাকে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু অভিনেতার এই লড়াইয়ে সবথেকে বেশি অবদান তার সহধর্মিনী ঋতুপর্ণার। তিনিই অভিনেতাকে প্রত্যেকটা মুহূর্তে উৎসাহ যুগিয়েছেন এই লড়াইটা চালিয়ে যাওয়ার।
২০১০ সালে অভিনেতার অস্থিমজ্জায় ক্যান্সার ধরা পড়ে, শরীরের চল্লিশ শতাংশ জুড়ে রয়েছে সেই ক্যান্সার। ক্যান্সার আরও বেশি ছড়ালে বিপদ আরও বাড়বে বলেই জানা গেছে, বিপদ যাতে না বাড়ে সেই কারণে প্রত্যেকটা মুহূর্তে চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখে চলেছেন, কিন্তু এই রোগ থামিয়ে রাখতে পারেনি অভিনেতা চন্দন সেনকে। ৩৯টা কেমো নিয়েও দৃঢ়তার সাথে নিজের কাজ করে চলেছেন অভিনেতা চন্দন সেন। অনেক বিধিনিষেধের ঘেরাটোপে থাকলেও সেইসব প্রতিকূলতা দমিয়ে রাখতে পারেনি তার অভিনয় সত্তাকে।
চন্দন সেনের স্ত্রী ঋতুপর্ণা সেন আইটি সংস্থার মানব সম্পদ উন্নয়ন বিভাগে উচ্চ পদে কর্মরতা। ঋতুপর্ণার অফিসে প্রতিবছর একটি করে লিডারশিপ সেমিনার হয়, সেখানেই চন্দন সেনের সাথে আলাপ হয় ঋতুপর্ণার এরপর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক। অভিনেতার এই মারন রোগ সম্পর্কে জেনেও সম্পর্ক থেকে কখনও সরে যান নি ঋতুপর্ণা, ভালো যেমন বেসেছিলেন তেমনি দায়িত্বও নিয়েছেন। দু’বছর ধরে প্রেম করার পর ২০২২ এর ১৬ ই জানুয়ারি বিয়ে করেন তারা।
অভিনেতা রোগের কথা আগে থেকেই জানতেন ঋতুপর্ণা, এই প্রসঙ্গে একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চন্দন সেন বলেন, ‘আমার জীবনে লুকোছাপা খুব একটা কিছু নেই৷ আলাদা করে জানানোরও দরকার পড়েনি৷ আমার যে ক্যান্সার হয়েছে তা বহু মানুষ জানেন৷’ অন্যদিকে ঋতুপর্ণা সেনের কথায়,‘চন্দন সেনের ক্যান্সার হওয়ার কথা নতুন করে তো জানার নেই৷ আলাদা করে কিছু ভাবিওনি ব্যাপারটা নিয়ে৷ আমার মনে হয়েছে ওর জীবনীশক্তি অসম্ভব বেশি৷ আর ভাবনায়, কাজে, মননে ও অনেকের থেকে বেশি সুস্থ৷ এটাই খুব গুরুত্বপূর্ণ ৷’ তাদের বিয়ের পরেও বছর দুই কেটে গেছে আজও চন্দনের লড়াইয়ে তার পাশে আছেন ঋতুপর্ণা।
আরও পড়ুন: জোরদার ক্রাশ খেয়েছেন অভিনেত্রী! ইধিকা পালের ক্রাশের নাম শুনে চমকাবেন আপনিও
বর্তমানে যখন টলিপাড়ায় একটার পর একটা বিচ্ছেদের খবর শোনা যাচ্ছে তখন চন্দন এবং ঋতুপর্ণার সম্পর্ক রীতিমত যুব প্রজন্মের কাছে একটা অনুপ্রেরণা।