মারণ রোগের মুখে ছাই, নাট্যমঞ্চেই শুরু জীবনের জয়গাথা! চন্দন সেনের নির্দেশনায় ক্যা’ন্সারজয়ীদের অভিনব লড়াই! ক্যা’ন্সারে আক্রান্তদের আবার আলোয় ফেরাতে চান অভিনেতা! চিকিৎসা নয়, এবার অভিনয়ই হবে অস্ত্র!

ক্যা’ন্সার (Cancer) মানেই কি জীবনের পরিসমাপ্তি? বরং তার উল্টোটা প্রমাণ করে দেখালেন একঝাঁক সাহসী মানুষ, যাঁরা ক্যা’ন্সারকে হারিয়ে জীবনকে নতুন করে সাজিয়ে তুলেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা নিজেদের লড়াইয়ের গল্প সমাজের কাছে তুলে ধরলেন মঞ্চনাটকের (Theatre) মাধ্যমে, যা একই সঙ্গে অনুপ্রেরণা আর প্রতিবাদের ভাষা। জীবন যেখানে থেমে যেতে বসেছিল, সেখানেই তাঁরা রঙ মাখালেন ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’-এর আলোয়।

কলকাতার এক নামী বেসরকারি হাসপাতালের উদ্যোগে এই অভিনব নাট্যআয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন খ্যাতনামা অভিনেতা ও ক্যা’ন্সারজয়ী ‘চন্দন সেন’ (Chandan Sen)। শনিবার কলামন্দিরে অনুষ্ঠিত এই নাট্য পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাঁচটি ক্ষুদ্র নাটিকা— ‘আর্য ও অনার্য’, ‘অন্ত্যেষ্টি সৎকার’, ‘নতুন অবতার’, ‘অরসিকের স্বর্গপ্রাপ্তি’ ও ‘স্বর্গীয় প্রহসন’। চন্দন সেন নিজে নাট্যনির্দেশনার পাশাপাশি মহড়াতেও ছিলেন সক্রিয়।

এদিন নাটকের প্রতিটি চরিত্র যেন হয়ে উঠেছিল সত্যিকারের জীবনের মুখ। এই নাটকে অংশ নিয়েছিলেন নানা বয়সের ক্যা’ন্সারজয়ীরা, যাঁদের মধ্যে কেউ পেশাদার অভিনেতা নন, কেউ আবার এই প্রথমবার মঞ্চে পা দিলেন। তাঁদের প্রত্যেকের জীবনের গল্প আলাদা, কিন্তু লড়াইয়ের ছাপ এক। যেমন, শিলিগুড়ির এক ক্যা’ন্সারজয়ী শিক্ষিকা— যিনি স্তন ক্যা’ন্সারকে হারিয়ে আজ আবার নিয়মিত পেশাগত জীবনে ফিরেছেন।

সমাজ মাধ্যমের উদ্যোগের খবর পেয়ে নিজেই যোগাযোগ করেন, এবং প্রথম অডিশনেই জায়গা পান মঞ্চে অভিনয়ের সুযোগে। ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’-এর মঞ্চজয় যে শুধুই এক দিনের প্রজেক্ট নয়, তা বলাই বাহুল্য। আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই নাট্য প্রয়াস ছড়িয়ে দেওয়া হবে। মূল লক্ষ্য ক্যা’ন্সার সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং এই রোগকে ঘিরে যে সামাজিক ভয় ও সংকোচ আছে, তা দূর করা।

আরও পড়ুনঃ মাত্র ১৪ বছরেই মায়ের ভাইয়ের ছেলের সঙ্গে বিয়ে! অতীতে পল্লবী চট্টোপাধ্যায়ের জীবনে কী ঘটেছিল?

নাটকের মতো পরিচিত ও শক্তিশালী মাধ্যমকে ব্যবহার করেই পৌঁছনো হবে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে। চন্দন সেন স্পষ্ট ভাষায় জানান, “এই রোগ শুধু শরীরে নয়, মনে ও মননে প্রভাব ফেলে। তাই ক্যা’ন্সারজয়ীরা যখন মঞ্চে দাঁড়ান, তখন সেটা শুধুমাত্র নাটক নয়— সেটা হয়ে ওঠে তাঁদের জীবনের বিজয়-উৎসব।” এই আড়াই মাসের প্রস্তুতির শেষে মঞ্চে উঠে তাঁদের চোখেমুখে যে আত্মবিশ্বাস দেখা গিয়েছে, তা কেবল অভিনয়ের নয়— তা জীবনের জয়গাথা।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।