প্রয়া’ত আশির দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, ৬২-তেই থেমে গেল জীবনযাত্রা! বড়পর্দা থেকে রাজনীতি– সবেতেই সমান সক্রিয়তা! এক যুগের সমাপ্তি, শো’কস্তব্ধ বাংলা বিনোদন জগত!

টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ‘জয় বন্দ্যোপাধ্যায়’ (Joy Banerjee) আর নেই। সোমবার সকালে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন, সম্প্রতি শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল। মাত্র ৬২ বছর বয়সে প্র’য়াত হওয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্র জগতে। অভিনয়ের পাশাপাশি জীবনের এক সময় তিনি রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে সেই পথও তিনি ছেড়ে দেন নানা কারণে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সালের ২৩ মে জন্ম জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কৈশোর পেরিয়ে অল্প বয়সেই তিনি প্রবেশ করেন সিনেমার জগতে। ১৯৮২ সালে বিদেশ সরকারের প্রযোজনায় তৈরি ‘অপরূপা’ ছবিতে দেবশ্রী রায়ের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি আত্মপ্রকাশ করেন। প্রথম ছবিতেই তাঁর উপস্থিতি নজর কাড়ে সকল দর্শকের। আশির দশকে একে একে তিনি অভিনয় করেছেন বহু জনপ্রিয় ছবিতে এবং দ্রুতই জায়গা করে নেন টলিউডের অন্যতম পরিচিত মুখ হিসেবে।

‘হীরক জয়ন্তী’, ‘জীবন মরণ’, ‘অভাগিনী’, ‘মিলন তিথি’, ‘সিঁথির সিঁদুর’ —এরকম একাধিক ছবিতে তাঁর কাজ আজও দর্শকের মনে গেঁথে আছে। বিশেষ করে অঞ্জন চৌধুরীর ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল বারবার। ব্যক্তিগত জীবনের উত্থান-পতন, সম্পর্কের ভাঙন কিংবা পেশাগত কারণে অভিনয় থেকে কিছুটা সরে আসলেও তাঁর জনপ্রিয়তা কমেনি। বরং একসময়ের দর্শক আজও তাঁকে মনে রাখেন সেই রোম্যান্টিক নায়ক হিসেবেই।

চুমকি চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙ্গনের পর, অভিনয় থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে গিয়েছিলেন জয়। কিন্তু নতুন করে পথ খুঁজে পেয়েছিলেন রাজনীতিতে। তবে সে যাত্রাও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২০২১ সালে দলের সঙ্গে মতবিরোধ ও মনোমালিন্যের কারণে রাজনৈতিক দল থেকে দূরে সরে যান তিনি। যদিও অভিনয়ে সক্রিয় ছিলেন না, তবু টলিউডের অন্দরে তাঁর নাম, তাঁর কাজের স্মৃতি সবসময়ই ছিল প্রাসঙ্গিক।

আরও পড়ুনঃ প্লুটোর মৃ’ত্যু নাড়া দিয়েছে টেলি দুনিয়াকে! ‘চিরসখা’য় শব’বাহী গাড়ির দৃশ্য দেখে স্তব্ধ সবাই! চরিত্রের মা-বাবার ব্যথা যেন ছুঁয়ে গেল প্রতিটি দর্শককে! মায়ের বুকে হাহাকার, বাবার চোখে অসহায়তা, দর্শকদের প্রশ্ন কেন এত নির্মম দৃশ্য? এতটা না দেখালেও পারতেন, বলছেন নেটিজেনরা!

এক সাক্ষাৎকারে জয় বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই, একসময় চুমকির সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা বলেছিলেন খোলাখুলিভাবে। অঞ্জন চৌধুরীর দুটি ছবিতে তাঁদের জুটি ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতা আর বজায় রাখতে দেয়নি। দীর্ঘ সময়ে অভিনয় থেকে দূরে গিয়েও জয় বন্দ্যোপাধ্যায় রয়ে গেছেন টলিউডের এক স্মরণীয় মুখ, যাঁর মৃত্যুতে আক্ষরিক অর্থেই এক প্রতিভাবান শিল্পীকে হারালো বাংলা বিনোদন জগত।

You cannot copy content of this page