“ওভারঅ্যাক্টিং করতেন সুচিত্রা, সাবিত্রী দি আসল মহানায়িকা”— মহানায়িকা সুচিত্রাকে মানতে নারাজ লিলি চক্রবর্তী! মহানায়িকার আসন নিয়ে তীব্র মন্তব্য প্রবীণ অভিনেত্রীর! সুচিত্রাকে করলেন খাটো!

মহানায়িকা (Mahanayika) মানেই কি শুধু পর্দার সৌন্দর্য আর গ্ল্যামার? না কি তাতে মাপা যায় অভিনয়ের গভীরতাও? এই বিতর্ক ফের একবার মাথা চাড়া দিল টলিউডে। এইবার আলোচনার কেন্দ্রে মহানায়িকা ‘সুচিত্রা সেন’ (Suchitra Sen) । আর তাঁকে ঘিরে নতুন করে বিতর্কে আগুনে ঘী ঢাললেন প্রবীণ অভিনেত্রী ‘লিলি চক্রবর্তী’ (Lily Chakravarty) । এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সুচিত্রা সেন অভিনয়ের মাপকাঠিতে ‘মহানায়িকা’ নন! বরং তাঁর মতে, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় (Sabitri Chatterjee) অনেক বেশি প্রকৃত অভিনেত্রী।

সেই সাক্ষাৎকারে লিলি বলেন, যদি শুধুই অভিনয়ের মানদণ্ডে বিচার করা হয়, তাহলে মহানায়িকার তকমা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের প্রাপ্য। তাঁর অভিনয়ে ছিল প্রাকৃতিক, স্বাভাবিক, সহজাত দক্ষতা, যার ধারেকাছে নাকি সুচিত্রা পৌঁছতেই পারতেন না! চেহারা বা ব্যক্তিত্বের দিক দিয়ে হয়তো সুচিত্রা আকর্ষণীয় ছিলেন, কিন্তু অভিনয়ের দিক থেকে সাবিত্রী ছিলেন অনন্য। এমনটাই স্পষ্ট মত প্রকাশ করেন লিলি চক্রবর্তী। যদিও তিনি স্বীকার করেন যে সুচিত্রার মধ্যে এমন কিছু ছিল, যা তাঁকে সকলের প্রিয় করে তুলেছিল।

Liliy Chakraborty, Television, Neem Phooler Modhu, Zee Bangla, Bengali Serial, লিলি চক্রবর্তী, নিম ফুলের মধু, বাংলা সিরিয়াল, জি বাংলা

এদিন শুধু মহানায়িকা সুচিত্রা নন, লিলির মন্তব্যের তীরে বিদ্ধ হয়েছেন ‘সন্ধ্যা রায়’ও! অভিনেত্রী জানান, সন্ধ্যার সঙ্গে কাজ করার সময় নাকি একটা অদ্ভুত দূরত্ব বজায় থাকত। লিলি ধারণা করেন, হয়তো তাঁর স্বাভাবিক অভিনয় দেখে সবাই প্রশংসা করত, যা সন্ধ্যার ভালো লাগত না। তাঁর কথায়, “ওঁর খুব ইয়ে ছিল। আমার সঙ্গে কাজ করতে চাইত না যেহেতু আমি নরম্যাল অ্যাকটিং করি, সবাই দারুণ হয়েছে বলে প্রসংশা করত।” যদিও লিলি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে সন্ধ্যা তাঁর খারাপ লাগতেন না, কিন্তু মেলামেশা তেমন হতো না।

এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সমাজ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কেউ লিলির সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন, কেউ আবার বলছেন এটা একধরনের ঈর্ষা। একজন সরাসরি মন্তব্য করেন, সুচিত্রা সেন নিজেকে ‘মহানায়িকা’ বলেননি। দর্শকই তাঁকে সেই মর্যাদা দিয়েছেন তাঁর সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্ব ও অভিনয় মিলিয়ে। আর কেউ কেউ লিখেছেন, ওভারঅ্যাক্টিং করলেও সুচিত্রা ছাড়া কিছু ছবির কল্পনাই করা যায় না। পাশাপাশি, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে মহানায়িকার সম্মান দেওয়াকে সমর্থন জানিয়েছেন অনেকে।

আরও পড়ুনঃ তিন-তিনটে বাংলা ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে এবার বলিউডে পা বাড়ালেন টলিউডের স্বঘোষিত ‘লিডিং হিরো’ বনি! টলিউডের ছবি পছন্দ নয়, তাই কী বলিউডে?

এক কথায়, এক সাক্ষাৎকারে লিলি চক্রবর্তীর এই বিস্ফোরক মন্তব্যে ফের একবার আলোচনার কেন্দ্রে ‘মহানায়িকা’ উপাধি। কে আদতে এই সম্মাার, তা নিয়ে এখন নতুন করে মতবিভাজন তৈরি হয়েছে সিনেমাপ্রেমী বাঙালি দর্শকদের মনে। তবে একথা স্পষ্ট যে বাংলা চলচ্চিত্রের এই মহান নারীদের অবদান, বিতর্কের ঊর্ধ্বেই রয়ে যাবে। হয়তো এমন অনেক অভিনেত্রীরা আছেন যারা সুচিত্রা সেনের থেকেও ভালো ও পরিণত অভিনয় করেছেন। কিন্তু মহানায়িকার তুলনা মহানায়িকা নিজেই।