“নাচটা ছাড়িনি, শুধু পড়াশোনাটাকে আগে রেখেছি”— ‘পান্তাভাতের কুণ্ডু’ বলে যাঁকে চিনত বাংলা, সেই দীপান্বিতা আজ কোথায়? লাইমলাইট ছেড়ে কোন স্বপ্নের পেছনে ছুটছে সে? ফিরবে কি আবার মঞ্চে?

এক সময়ের ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর (Dance Bangla Dance) খুদে সেনসেশন ‘দীপান্বিতা কুণ্ডু’কে (Dipanwita Kundu) মনে আছে? কোঁকড়ানো চুলে, প্রাণবন্ত মুখভঙ্গি আর নিখুঁত নৃত্য-দক্ষতায় মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সেই সকলের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিল সেই একরত্তি মেয়ে! দর্শক তো বটেই, স্বয়ং মহাগুরু ‘মিঠুন চক্রবর্তীর’ও (Mithun Chakraborty) তাঁকে মন দিয়ে ফেলেছিলেন। মহাগুরুর দেওয়া ‘পান্তাভাতের কুণ্ডু’ নামেই তখন পরিচিত হয়ে ওঠে সে। আজ সেই ছোট্ট মেয়েটি অনেকটাই বড় হয়ে উঠেছে। কিন্তু এখন কোথায় সে? নাচের সঙ্গেও কি ঘটেছে বিচ্ছেদ?

বেশকিছু সিজন ধরে দেখা যাচ্ছে, ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর মঞ্চ থেকে অনেকেই অভিনয়ে সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু শারীরিক ও মানসিক ভাবে পরিণত দীপান্বিতা এখন এক নতুন দিশা খুঁজছে। নাচের মঞ্চে বাজিমাত করার পর অনেকেই হয়তো লাইমলাইট ধরে রাখতে চান অভিনয় বা বিনোদনের অন্য কোনও শাখায়। কিন্তু দীপান্বিতার জীবনযাত্রা অনেকটাই ব্যতিক্রমী। প্রচারের আড়ালেই ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছেন নিজের নতুন পরিচয়। সম্প্রতি ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছেন তিনি।

তবে এখানেই থেমে থাকেননি। বর্তমানে নিট পরীক্ষার প্রস্তুতিতে দিনরাত এক করে পড়াশোনায় মন দিয়েছেন দীপান্বিতা। তার ইচ্ছে, ভবিষ্যতে মেডিক্যাল কিংবা প্যারা-মেডিক্যাল জগতেই নিজের জায়গা তৈরি করা। বহরমপুরেই তাঁর জন্ম থেকে বড় হওয়া। সেখানকার একটি স্কুল থেকেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন তিনি। পড়াশোনার প্রতি তাঁর নিষ্ঠা বরাবরই ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিবারের তরফে কোনও চাপ না থাকলেও দীপান্বিতা নিজেই ঠিক করে নিয়েছিলেন, আগে পড়াশোনা, তারপর অন্য কিছু।

পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কিছুদিন কলকাতায় থেকেছেন। এখন আপাতত ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু লক্ষ্য একটাই, শিক্ষার দিক থেকে নিজের ভিতকে মজবুত করা। তবে তাই বলে নাচ থেকে তিনি নিজেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন করেননি। যদিও এখন প্রথাগত কোনো প্রশিক্ষণের মধ্যে নেই, তবু ইউটিউব দেখে নিজেই নতুন নতুন নাচ শিখে চলেছেন। নাচ তাঁর জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, সে কথা স্পষ্ট করে বলেন তিনি। ভবিষ্যতে ফের স্টেজে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছাও তাঁর রয়েছে, তবে এখনই নয়।

আরও পড়ুনঃ স্বতন্ত্রের জন্য গান গাইল কমলিনী! অসুস্থ অবস্থাতেও বৌঠানের কাছে ভালোবাসার স্বীকারোক্তি করল নতুন ঠাকুরপো! কিন্তু এই নামহীন সম্পর্ক কি কোনদিন পূর্ণতা পাবে?

এই সময়টা মূলত পড়াশোনা এবং নিজের শরীর-মন ভালো রাখার কাজেই ব্যয় করছেন তিনি। শরীরচর্চাও করছেন নিয়মিত। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষাগুলির মুখোমুখি হওয়ার আগেই দীপান্বিতা বুঝে গিয়েছেন লক্ষ্য ঠিক রেখে এগোনো কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ছোটবেলার সেই জনপ্রিয়তার ভার বইতে গিয়ে ছেলেমানুষি কোনও ভুল না করে, পরিণত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস যে তাঁর আছে, সেটাই হয়তো আজকের দীপান্বিতাকে আরও অনন্য করে তুলেছে।