আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এক সময়ের জনপ্রিয় পরিচালক-অভিনেতা ‘অয়ন সেনগুপ্ত’ (Ayan Sengupta)। এক সময় যিনি পরিচালনায় ছিলেন অন্যতম নাম, অভিনয়েও যাঁর ছাপ ছিল স্পষ্ট, তিনিই আজ একপ্রকার কোণঠাসা। ‘ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (দিএইআই)’-র (DAEI) সদস্য তালিকা থেকে সদ্য নাম সরালেন অয়ন। অভিযোগ, এই সিদ্ধান্ত যেন স্বেচ্ছায় নয়, বরং ভয় আর চাপের ফল। যদিও প্রকাশ্যে অয়ন জানিয়েছেন, নিজের ইচ্ছেতেই সংগঠন ছেড়েছেন, কিন্তু টলিউডের অলিগলিতে ঘোরাফেরা করা গুঞ্জন বলছে, পরিচালককে কার্যত বাধ্য করা হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত নিতে।
সূত্র বলছে, অয়ন সেনগুপ্ত শুধুই ডিএইআই-র সদস্যপদ ত্যাগ করেননি, আলিপুর জজ কোর্টে গিয়ে পরিচালকদের সংগঠন ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে করা মামলার থেকেও নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কিছুদিন ধরেই অভিযোগ উঠছে, পরিচালকদের ভয় দেখিয়ে, কাজ বন্ধ করে দেওয়া, এমনকি তাঁদের বাড়িতে হুমকি দিয়ে সংগঠন ছাড়তে বাধ্য করছে ফেডারেশন। কেউ কেউ আবার বলছেন, এই ভয়ানক পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে বৃহত্তর রাজনৈতিক চাপ।
অয়নের পরিস্থিতি আরও করুণ হয়ে ওঠে যখন তাঁর একমাত্র উপার্জনের পথ, দক্ষিণ কলকাতার ফুটপাথে গড়ে তোলা খাবারের দোকান নিয়েও আসতে থাকে হুমকি। দোকান বন্ধ থাকার সময় একদল অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি এসে আশপাশের দোকানিদের থেকে অয়নের দোকান নিয়ে খোঁজখবর করে যায়। রাতে তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে জানানো হয়, দোকানটাও বন্ধ হয়ে গেলে তাঁর পরিবার কীভাবে চলবে! এই হুমকির পরই অয়নের পক্ষ থেকে গিল্ড ত্যাগের সিদ্ধান্ত আসে বলে জানা যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন কাজ না পেয়ে এবং ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুযোগও হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনিই জীবিকার জন্য ফুটপাথেই দোকান খোলেন। অয়ন শুধু সংগঠন ছাড়লেন না, বরং মামলা থেকে নাম তুলে নেওয়ার পর তাঁর সামনে আরও এক ‘শর্ত’ এসে দাঁড়িয়েছে। তাঁকে দেখা করতে হবে ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে। যদি সভাপতি সন্তুষ্ট হন, তবে হয়তো ভবিষ্যতে আবার কাজ পাওয়া যেতে পারে, এমনই ‘আশ্বাস’ মিলছে। টলিউডের অনেকেই বলছেন, এটি এক ধরনের ক্ষমার বিনিময়ে কাজের মতো।
আরও পড়ুনঃ ফের ছোট পর্দায় কামাল করতে ফিরছেন মনামী! নতুন রূপে এবার টেলিভিশনে দেখা যাবে অভিনেত্রীকে! কোন বিশেষ চমক নিয়ে আসছেন ‘পুন্যিপুকুর’খ্যাত নায়িকা?
একইসঙ্গে এটাও জল্পনার জন্ম দিচ্ছে যে, বাকি পরিচালকরাও হয়তো চাপে পড়েই গিল্ড ছাড়ছেন, আইনি লড়াই থেকে পিছু হটছেন। ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া একের পর এক সদস্য হারাচ্ছে। কেউ স্বেচ্ছায়, কেউ চাপে পড়ে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, সংগঠনের অস্তিত্বই কি এবার প্রশ্নচিহ্নের মুখে? ফেডারেশন ও সভাপতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ভয় দেখানো, কাজ কেড়ে নেওয়া, শুটিং বন্ধ করার অভিযোগ রয়েছে। এখন যদি হাই কোর্টের মামলায় একের পর এক পরিচালক নাম প্রত্যাহার করে নেন, তাহলে এই আইনি লড়াই কতটা টিকবে?
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।