টলিউড পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ‘ভিক্টো’ (Vikto) কে ঘিরে চলা ঠাকুরপুকুর কাণ্ডের (Thakurpukur Accident) তদন্ত এবার নতুন মোড় নিতে চলেছে। লালবাজার সূত্রের খবর, খুন এবং খুনের চেষ্টার ধারায় এই মাসেই আলিপুর আদালতে চার্জশিট পেশ করবে পুলিশ। এবং সেই চার্জশিটের অন্যতম মূল ভিত্তি হতে চলেছে ভিক্টোর গাড়িতে থাকা দুই বান্ধবী—অভিনেত্রী ঋ (Rii) এবং প্রযোজক শ্রিয়া বসুর (Shreya Basu) বয়ান। তাঁরা গোয়েন্দাদের কাছে আলাদা করে যা জানিয়েছেন, তাতেই উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা এই ঘটনার গুরুত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনার আগের রাতে দক্ষিণ কলকাতার এক পানশালায় বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করছিলেন ভিক্টো ও তাঁর সঙ্গীরা। পার্টির রেশ কাটতে না কাটতেই তাঁরা চলে যান বিষ্ণুপুরে এক বন্ধুর বাড়িতে, যেখানে গভীর রাত পর্যন্ত চলতে থাকে মদ্যপান ও নেশা। বান্ধবীদের দাবি অনুযায়ী, এই অবস্থাতেই স্টিয়ারিং হাতে তুলে নেন ভিক্টো। গাড়িতে তখন ঋ ও শ্রিয়া ছাড়াও ছিলেন ধারাবাহিকের কয়েকজন শিল্পী ও টেকনিকাল টিমের সদস্যরা। সেই সময় তাঁরা বারবার ভিক্টোর বেপরোয়া গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে আপত্তি জানান।
এমনকি রীতিমতো চিৎকার করে গাড়ি থামাতে বলেন, কিন্তু ভিক্টো কিছুতেই শোনেননি। বিষয়টি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে যখন গাড়ি ঠাকুরপুকুর বাজারের দিকে এগোয়। স্থানীয়দের বক্তব্য, তখন সকাল সকাল বাজার চত্বর ছিল অত্যন্ত ভিড়। গাড়ির গতি কমিয়ে প্রথম ধাক্কাটির পর একবার থেমেও গিয়েছিলেন ভিক্টো, কিন্তু বান্ধবীদের অনুরোধ উপেক্ষা করে ফের গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন তিনি। এমনকি দাবি করেন, “এই এলাকা আমার চেনা, যা খুশি করতে পারি।” এরপরই একের পর এক পথচারী ও দোকানে ধাক্কা মারতে শুরু করেন তিনি।
যার ফলে মৃত্যু হয় আমিনুর রহমান নামে এক নিরীহ পথচারীর। আহত হন আরও বহু মানুষ। পুলিশের দাবি, ওই সময় ভিক্টোর গাড়ির মধ্যে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত ব্যক্তিদের বক্তব্য চার্জশিট তৈরিতে বড় ভূমিকা পালন করবে। বান্ধবী ঋ ও শ্রিয়া জানিয়েছেন, তাঁরা ভিক্টোর কাণ্ড দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। গাড়িতে বসেই তাঁরা তাঁকে থামতে বলেন, কিন্তু ভিক্টো যেন নিজেকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রেখেছিলেন। বারবার গতি কমিয়ে ফের বাড়িয়ে দেওয়া, ভয় দেখিয়ে হম্বিতম্বি করা,
আরও পড়ুনঃ সন্তান হারানোর কষ্টেও থেমে থাকেনি অভিনয়! চরিত্রের আড়ালেই ছিল এক মায়ের নিঃশব্দ কান্না! পাঁচ মাসের মাথায় গর্ভপাত হওয়ার পরেও কাউকে জানতে দেননি, এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী!
এসবই তাঁর আচরণে ছিল বলে দাবি দুই বান্ধবীর। এখন প্রশ্ন উঠছে, একজন জনপ্রিয় ধারাবাহিকের পরিচালক হয়ে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং বিপজ্জনক আচরণ করলেন কীভাবে? প্রভাব খাটিয়ে তিনি কি আদৌ এই ভয়ঙ্কর অপরাধ থেকে রেহাই পাবেন? নাকি এইবার আইন অনুযায়ী শাস্তি পাবেন তিনি? দর্শক থেকে টলিপাড়া, সকলে এখন চায় ভিক্টোর যথোপযুক্ত শাস্তি হোক। কারণ এই ঘটনা শুধু দুর্ঘটনা নয়, একেবারে সজ্ঞানে ঘটানো এক হত্যাকাণ্ড।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।