নিজেকে মে’রে ফেলতে চেয়েছিলেন, ফিরে এসেছেন শুধুমাত্র ঈশ্বরে বিশ্বাসের জোরে! পরিবার ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই, সবকিছু জয় করে ক্যামেরার সামনে নিজের জায়গা দখল করা নিশান্তিকার দীর্ঘ সংগ্রাম আজ সাফল্যের গল্প!

টালিগঞ্জে নিত্য নতুন চরিত্রে অভিনয় ব্যস্ততার মধ্যেই, ছোট পর্দার অভিনেত্রী ‘নিশান্তিকা দাস’ (Nishantika Das) খুঁজে পেয়েছেন জীবনের ছন্দ। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো আজ তাঁর নিত্যদিনের কাজ হলেও এর আড়ালে আছে দীর্ঘ নির্জন লড়াই। ছোট থেকেই নানান কটূক্তি সহ্য করতে হলেও তিনি নিজের পথে হাঁটা বন্ধ করেননি। এর আগে বহু ধারাবাহিকে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তালিকায় রয়েছে স্বনামধন্য প্রযোজনা সংস্থার ছবি এবং ওয়েব সিরিজ। এখন সান বাংলার ‘রূপমতী’ ধারাবাহিকে অরুন্ধতীর চরিত্রে দেখা যাচ্ছে তাঁকে।

অভিনেত্রী বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে, সঙ্গে রয়েছেন যমজ দাদা। দাদার প্রতি ভালোবাসা থাকলেও তুলনার হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি কখনও! দাদা চিকিৎসক, আর মেয়ে অভিনয় করবে এটা প্রথমে শুনেই বাবা-মায়ের আপত্তি ছিল চরম। তবু নিজের ইচ্ছেকে দমিয়ে না রেখে নিশান্তিকা ফিল্ম স্টাডিজে পড়াশোনা শুরু করেন। পরিবার ছেড়ে টালিগঞ্জে আলাদা থাকার সিদ্ধান্তটা তাঁর কাছে ছিল নিজের পরিচয় খুঁজে পাওয়ার একটা ধাপ।

অভিনেত্রী হওয়ার আগে তিনি ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার কথাই ভাবছিলেন। পরীক্ষাও দিয়েছিলেন, কিন্তু মনের এক অদ্ভুত টান তাঁকে অভিনয়ের দিকে নিয়ে আসে। ক্যামেরার সামনের কাজের পাশাপাশি পিছনের প্রস্তুতি নিয়েও তাঁর আগ্রহ ছিল। শুটিংয়ের ফ্লোর তৈরি করা থেকে শুরু করে টিমওয়ার্ক বোঝা, সবটাই তাঁকে এই জগতের সঙ্গে আরও গভীরভাবে যুক্ত করেছে। ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি কম ঝড় দেখেননি।

একসময় প্রেমে প্রতারণার পর ভেঙে পড়েছিলেন এতটাই যে জীবনটাই প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছিল। নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নিয়ে ফেলেছিলেন তিনি! পরে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস আর নিজের ভিতরের শক্তি তাঁকে সেই অন্ধকার সময় থেকে বের করে আনে। এখন তিনি বলেন, “উপরে যিনি আছেন, হয়তো একটু বেশি পরীক্ষা নেন। কিন্তু সময়মতো সবকিছুর উত্তর দিয়ে দেন, সবটা ফিরিয়ে দেন।” আজ নিজেকে নিয়ে তিনি অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী।

আরও পড়ুনঃ স্মৃতিকে ঠকাচ্ছিলেন পলাশ? বিয়ে ভাঙনের দোরগোড়ায় ‘পালরিতি’? বান্ধবীর সঙ্গে পলাশের ঘনিষ্ঠ চ্যাটে তোলপাড় নেটদুনিয়া!

জীবনে নতুন আলো এনে দিয়েছেন তাঁর বর্তমান সঙ্গী। স্পষ্ট করে কিছু না বললেও জানিয়েছেন, তিনি টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতেই কাজ করেন তবে অভিনেতা নন, ক্যামেরার পেছনের কাজের সঙ্গে যুক্ত। সব ঠিক থাকলে খুব শিগগিরই তাঁরা প্রকাশ করবেন সম্পর্কের কথা। তবে ব্যক্তিগত সুখের মাঝেও নিশান্তিকার সবচেয়ে বড় ইচ্ছে একটাই, শেষদিন পর্যন্ত অভিনয় করে যাওয়া আর যাঁরা অতীতে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ করেছিলেন, তাঁদের কাছে নিজের কাজের মাধ্যমে উত্তর পৌঁছে দেওয়া।