শুধু ছবি নয়, এ যেন মানবিকতার দৃষ্টান্ত! শিয়ালদহ স্টেশনে অশা’ন্তির পর, রূপান্তরকামীদের সঙ্গে বিশেষ প্রদর্শনী, বাংলা চলচ্চিত্রে নজির গড়ল কাঞ্চনা মৈত্রর আসন্ন ছবি ‘কপাল’! প্রশংসায় পঞ্চমুখ সমাজ মাধ্যম!

গতমাসে শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে জনসমক্ষে একজন ব্যক্তি এবং মধ্যবয়স্ক মহিলাকে অভিনেত্রী ‘কাঞ্চনা মৈত্র’ (Kanchana Moitra) অক’থ্য ভাষায় কটূ’ক্তি এবং টাকার জন্য দাবি করতে দেখা গিয়েছিল। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছিল তুমুল বিতর্ক। সমাজ মাধ্যমে এতটাই কটাক্ষের মাত্র বেড়ে যায় যে, অভিনেত্রীকে ক্ষমা চাইতে প্রকাশ্যে। তখনই তিনি জানান, এই সবটাই ছিল তাঁর আসন্ন ছবি ‘কপাল’-এর প্রচার কৌশল। আর এদিন এই ছবির বিশেষ প্রদর্শনীকে ঘিরে আবার এক বিশেষ মুহূর্তের সাক্ষী থাকল বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ!

আজ, অর্থাৎ রবিবার গড়িয়াহাটের সাউন্ডহাউস ব্লুজ ফ্যাসিলিটি ২-তে কাঞ্চনা মৈত্র অভিনীত ছবি ‘কপাল’-এর বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন রূপান্তরকামী (Transgenders) সম্প্রদায়ের বহু সদস্য। তাঁদের উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানটিতে নতুন মাত্রই দেয়নি বরং টলিউডে এক নতুন দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে। পরিচালক থেকে অভিনেত্রী সকলেই মতে, এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠানকে শুধু নতুন ছবি দেখার অভিজ্ঞতা হিসেবে নয় বরং এক সামাজিক বার্তা দেওয়াই উদ্দেশ্য ছিল তাদের।

এদিনের অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিলেন অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্র, পরিচালক সুবেন্দু ঘোষ, প্রযোজক আরিয়ান ঘোষ, সঙ্গীত পরিচালক পণ্ডিত পিনাকী বোস, রাজা সরকার এবং সুকন্যা দত্ত। তাঁরা এই ব্যতিক্রমী দর্শকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বললেন, নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন এবং ছবির গল্প নিয়েও মতামত জানলেন। পরিচালক সুবেন্দু ঘোষ অনুষ্ঠানের জানান, “কপাল তৈরির আসল উদ্দেশ্য শুধু বিনোদন না।

এরই মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে একসাথে নিয়ে আসার চেষ্টাও।” তাঁর কথায়, রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের উপস্থিতি দিয়ে প্রমাণ করা হলো এই ছবিটি গ্রহণযোগ্যতা আর প্রতিনিধিত্বের প্রতীক। আর এই দর্শকদের কাছ থেকে যে সাড়া পেয়েছেন, তা তাঁর কাছে বিশেষ প্রাপ্তি। এদিকে অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্রও এদিন খোলাখুলি স্বীকার করলেন, কপাল তাঁর কাছে শুধু একটি কাজ নয়, বরং এক অন্য অভিজ্ঞতা।

আরও পড়ুনঃ “মিঠি গিরগিটির মতো রং বদলায়, পা’ল্টি’বা’জ, সুবিধাবাদী মেয়ে!” “কী মতলবে আবার স্বতন্ত্রকে বাবা বলে ডাকছে কে জানে!”— মিঠির ব্যবহার ঘিরে বিতর্কের মুখে ‘চিরসখা’! স্বাতন্ত্রর বিদেশ যাওয়া বন্ধ করার পিছনে, মিঠির চাল দেখতে পাচ্ছে দর্শকরা!

তিনি বলেন, “ছবিটি দর্শকদের দৃষ্টিভঙ্গিকে স্পর্শ করবে এবং চিন্তার খোরাক যোগাবে।” বিশেষ প্রদর্শনীতে পাওয়া ভালবাসা আর উৎসাহ তাঁকে আরও আত্মবিশ্বাসী করেছে। অন্যদিকে, প্রদর্শনীতে উপস্থিত রূপান্তরকামীরা খুশি মনেই জানিয়েছেন, এই ছবিটি তাঁদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তাঁদের ভাষায়, “কপাল ছবি দেখলে কপাল খুলবে।” সমাজের মূলস্রোতে তাঁদের জায়গা পাওয়ার স্বপ্নে এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। উল্লেখ্য, ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ১৯ই সেপ্টেম্বর, এবং ইতিমধ্যেই ছবিটি নিয়ে দর্শকদের কৌতূহল তুঙ্গে।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।